নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০১ পিএম, ২৯ অক্টোবর, ২০২০
পুত্রের ঘটনার পর হাজী সেলিম নীরব অবস্থায় রয়েছেন, তার কোনো কার্যক্রম নেই। ইতিমধ্যে জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন হাজী সেলিমের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, হাজী সেলিমের অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দুদক।
হাজী সেলিমের পুত্রের ঘটনার দিন কোনো প্রকার বাধা ছাড়াই হাজী সেলিমের দখলে থাকা অগ্রণী ব্যাংকের জমি উদ্ধার করে। ওই উদ্ধারকাজে কোনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা নেয়নি ব্যাংকটি। এছাড়া গত দুদিনে হাজী সেলিমের অবৈধ দখলে থাকা দোকানপাটগুলোর মালিকরা এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। তবে অনেকেই নিজ দায়িত্বে তাদের দোকান এবং জায়গা পূনরুদ্ধার করেছেন।
পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, এই ঘটনার পর লালবাগে হাজী সেলিমের রাজত্বের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। এমনিতেই হাজী সেলিম শারীরিকভাবে অসুস্থ। এই অবস্থায় তার রাজনীতিতে টিকে থাকা এক ধরনের চ্যালেঞ্জ। এছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গেও হাজী সেলিমের সম্পর্ক ভাল না। হাজী সেলিম তার নিজস্ব বাহিনীর মাধ্যমেই লালবাগের রাজনীতি পরিচালনা করতেন।
লালবাগের স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা মূলত কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের অনুসারী। এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগে হাজী সেলিমের অবস্থান ও ভবিষ্যৎ কি হবে সেটিই দেখার বিষয়। তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, এই ঘটনায় হাজী সেলিম ক্ষুব্ধ। তার ছেলের সঙ্গে যে ধরনের আচরণ করা হয়েছে, তাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা হচ্ছে এবং রাজনৈতিক দলের কোনো সহযোগীতা না পাওয়ায় তিনি অসন্তুষ্ট।
হাজী সেলিমের স্ত্রী একাধিক আওয়ামী লীগের নেতাকে বলেছেন, একটি তুচ্ছ ঘটনায় ভুল বোঝাবুঝিকে এত বড় করা অর্থ তিনি বুঝতে পারছেন না। হাজী সেলিমকে যারা চেনেন তারা জানেন যে তিনি অনেক উত্তেজিত এবং আবেগপ্রবণ একজন মানুষ। তিনি এর আগে একবার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে আওয়ামী লীগ ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের র্শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তার প্রেক্ষিতে তিনি সাঈদ খোকনকে ওই নির্বাচনে সমর্থন দেন।
পুত্রের ঘটনায় হাজী সেলিমের পরিবারের ভেতরের কাহিনীগুলো যেভাবে বেরিয়ে আসছে সেটা হাজী সেলিমকে বিব্রতকর পরিস্থিতে ফেলেছে। এরকম পরিস্থিতিতে হাজী সেলিম শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করবেন কিনা তা নিয়েও লালবাগে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ হাজী সেলিমরা ক্ষমতাসীন দল করে কিছু পাওয়ার জন্য, অবৈধ কর্মতৎপরতা চালানোর জন্য। যদি অবৈধ তৎপরতা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে হাজী সেলিম কেন আওয়ামী লীগ করবেন? এ নিয়ে হাজী সেলিমের সহযোগীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে হাজী সেলিম হয়তো পদত্যাগের মত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন না বরং এই অস্থায় চুপচাপ থেকে পরিস্থিতি ঠান্ডা হওয়ার সময় দিবেন। যারা সুযোগ সন্ধানী, অণুপ্রবেশকারী তারা এরকম কৌশলই অবলম্বন করেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি বিদ্রোহ উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
ঢাকার বনানীর বাসায় ফেরার পথে গাড়িচালক
আনসার আলীসহ ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল নিখোঁজ হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট
জেলা বিএনপির সভাপতি এম ইলিয়াস আলী। এক যুগ পার হলেও ইলিয়াস আলী জীবিত না মৃত সে খবর
কেউ দিতে পারেনি দীর্ঘ এই সময়ে।
তবে সিলেটের বিএনপি নেতারা মনে করেন,
ইলিয়াস সরকারের হেফাজতে অক্ষতই আছেন। তাকে ফিরে পেতে কেবল সরকারের সদিচ্ছার প্রয়োজন।
নিখোঁজের ১২ বছর পূর্তিতে তাকে ফিরে পেতে গতকাল নানা কর্মসূচি পালন করেছে সিলেট বিএনপি
ও অঙ্গ সংগঠন। ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’র পর সিলেটে গঠন করা হয় ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম
পরিষদ’। এ বছর ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ’র কোনো কর্মসূচি না থাকলেও সমাবেশ, স্মারকলিপি
প্রদান এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। এক যুগেও ইলিয়াসের সন্ধান
না মিললেও হাল ছাড়েননি বিএনপি নেতারা।
তাদের ধারণা, ইলিয়াস আলী এখনো জীবিত
আছেন। ইলিয়াসের অবস্থান সম্পর্কে সরকার জ্ঞাত আছে। কিন্তু সরকারের সদিচ্ছার অভাবে ইলিয়াস
আলীর সন্ধান মিলছে না। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক যুগপূর্তির দিন গতকাল জেলা প্রশাসকের
মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সিলেট বিএনপি। এ ছাড়া বাদ আসর জেলা
বিএনপির উদ্যোগে হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদে ইলিয়াস আলীর সন্ধান কামনায় দোয়া
ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া ইলিয়াসকে ফিরে পেতে বাদ জোহর একই মসজিদে দোয়া ও
মিলাদের আয়োজন করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। স্মারকলিপি প্রদানের আগে গতকাল দুপুরে জেলা
প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে বিএনপি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর
ধরে ইলিয়াস আলী ফেরার অপেক্ষায় আছেন সিলেটবাসী। ইলিয়াসের জনপ্রিয়তায় আতঙ্কিত হয়ে সরকার
তাকে গুম করেছে।
ইলিয়াস নিখোঁজ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির
সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন বলেন, ইলিয়াস আলীর সন্ধান পেতে তার সহধর্মিণী
হাই কোর্টে রিট করেছিলেন। কিন্তু সরকারের অদৃশ্য হস্তক্ষেপে এক যুগেও সেই রিটের শুনানি
হয়নি। এতে প্রমাণিত হয় ইলিয়াস নিখোঁজের পেছনে সরকার জড়িত।
মন্তব্য করুন
খন্দকার মোশাররফ হোসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জন বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন