নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ২০ নভেম্বর, ২০২০
৮০ দশকে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের কথা। এসময় ১৫ দলীয় জোট, ৭ দলীয় জোট গঠিত হয়েছিলো। আর এ সমস্ত জোটের শক্তিমত্তার বিচার বিবেচনা করে দেখা গিয়েছিলো যে, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির পরপরই তৃতীয় শক্তিশালি রাজনৈতিক দল হলো বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি। মোহাম্মদ ফরহাদের নেতৃত্বে এই কমিঊনিস্ট পার্টির সংগঠন সারা দেশে কেবল বিস্তৃত হয়নি। এই সংঠনটি ভবিষ্যতে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রগতিশিল সেকুলার রাজনৈতিক শক্তিতে আবির্ভূত হওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েছিলো।
কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এখন কমিউনিস্ট পার্টি ম্রিয়মাণ, ম্লান ও মৃত প্রায়। অন্যান্য বাম রাজনৈতিক দলগুলোরও বেহাল দশা। আর এ কারণেই বাংলাদেশ মৌলবাদ, দক্ষিণপন্থী প্রক্রিয়াশীল রাজনীতির উত্থান ঘটছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বাম রাজনীতির এই বেহাল দশা কেন? এ রকম প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে, এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তার মধ্যে:-
১। নেতৃত্বের ব্যর্থতা:
মোহাম্মদ ফরহাদের পর বাংলাদেশের বাম রাজনীতিতে যোগ্য এবং উদারনৈতিক জনপ্রিয় নেতার উদ্ভব ঘটেনি। নেতাদের মধ্যে দূরদর্শিতা এবং জনভাবনাও দেখা যায়নি। বরং যারা বাম রাজনীতি করছেন তারা নিজেদের আখের গোছানোর জন্য সরকারের সাথে নানা রকম লেনদেন করে সুযোগ-সুবিধা আদায়ের চেষ্টাতেই বেশি ব্যস্ত। কাজেই তারা এখন জানেন না যে, তাদের কোন পথে যেতে হবে। তারা নিজেরাই যখন পথ দিশাহীন, তখন কর্মীদেরকে কিংবা সংগঠনকে কিভাবে নেতৃত্ব দিবেন সেই প্রশ্ন উঠতেই পারে।
২। বৈশ্বিক পরিস্থিতে:
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সারা বিশ্বেই বাম রাজনীতি হোঁচট খেয়েছে এবং মিখাইল গর্বাচেভের পতনের পর আস্তে আস্তে বিশ্বে বাম রাজনীতির চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে থাকে। বাংলাদেশে তার প্রভাব পড়েছে এবং এ সময় বিশ্বের অন্যান্য বাম রাজনীতিগুলো যেভাবে পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিজেদেরকে উদার নৈতিক কল্যাণকামি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে রূপান্তর করেছে, বাংলাদেশের বামরা সেটি করতে পারেনি। যার ফলে বাংলাদেশের বাম রাজনীতি এখন বিভ্রান্তির চোরাগলিতে আটকে পড়ে গেছে। এক সময় বাংলাদেশের বাম রাজনীতিগুলো সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের দিকে তাকিয়ে থাকতো। ‘মস্কোতে বৃষ্টি হলে বাংলাদেশের কমিউনিস্টরা ছাতা ধরে’ এ রকম একটি প্রবচন প্রচলিত ছিল। এখন এখন মস্কো নেই। চীন নতুন আধিপত্যবাদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এর ফলে বামদের সামনে কোন উদাহরণ নেই। তারা কোন দিকে যাবেন, জানেন না। এটিও বাম রাজনীতির বেহাল দশার একটি বড় কারণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
৩। বাম রাজনীতির আপোষকামিতা, লোভ এবং দুর্নীতি:
বাংলাদেশের বাম রাজনীতিবিদদের মধ্যে ৯০ দশকের শুরু থেকেই এক ধরণের আপোষকামিতা লোভ ও দুর্নীতি পেয়ে বসে। তারা এতদিনে ত্যাগ করে কি পেলেন, কি পেলন না, এর হিসেব নিকেশে বসে। তারা কিছু একটা পাবার জন্য মরিয়ে হয়ে যায়। তাই কখনো তারা সামরিক স্বৈরাচারের সাথে আতাত করেন। কখনো তারা ডান দক্ষিণ পন্থিদের সঙ্গে গোপন সমঝোতার মাধ্যমে ব্যাক্তিগতভাবে লাভবান হবার চেষ্টা করে। আবার কখনো আওয়ামী লীগের লেজুর বৃত্তি করে নৌকা প্রতীক বাগিয়ে নিয়ে মন্ত্রী বা এমপি হয়ে যায়। তাদের কাছে এখন ক্ষমতায় যাওয়া কিংবা জনগণকে প্রগতিবাদ চেতনায় উজ্জীবিত করার কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই। তাদের এখন জনগনকে প্রগতিবাদি করা উদারনৈতিক চিন্তা চেতনার বিকাশের কোন আকাঙ্ক্ষা দেখা যায় না। বরং তারা এখন যে কোন মূল্যে নিজেদের আখের গোছানোর কাজেই বিশ্বাসী।
এ সমস্ত কারণেই মনে করা হয় বাংলাদেশের বাম রাজনীতি এখন এক গভীর সংকটে পড়েছে। যুদ্ধাপরাধিদের বিচার এবং আওয়ামী লীগের মতো একটি সেকুলার রাজনীতি দলের টানা একযুগ থাকার প্রেক্ষাপটে অনেকে মনে করেছিলো যে, বাংলাদেশের বাম রাজনীতির উত্থান ঘটবে। বাম রাজনীতিগুলো একটি শক্তিশালি জমিন পাবে। কিন্তু নানা করনে নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশের বাম রাজনীতি এখন ম্রিয়মান, ক্ষীণকায় এবং মৃতপ্রায়।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক
পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের
মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি তাদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয়
নির্দেশনা অমান্য করলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের ব্যাপারে চিন্তা করা হবে। সময়মতো অবশ্যই
এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডিতে
আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পার্টির যারা মন্ত্রী-এমপি
এমন পর্যায়ে আছেন তাদের জন্য নির্দেশনা রয়েছে, তাদের সন্তান ও স্বজনরা যেন উপজেলা নির্বাচনে
না আসে। প্রথম পর্যায়ের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় চলে গেছে। কেউ কেউ বলেছেন আমরা
বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের সুবিধা হতো। তারপরেও কেউ কেউ প্রত্যাহার
করেছেন, কেউ কেউ করেননি। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনের যে সময়সীমা তারপরেও ইচ্ছা
করলে করতে পারবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন,
‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় সিদ্ধান্ত যারা অমান্য করেছে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা
নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনেও কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় আছে। দল যার যার
কর্মকাণ্ড বিচার করবে। চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত যারা প্রত্যাহার করবে না সময়মতো দল ব্যবস্থা
নেবে’।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি একতরফা কোনো
সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি এসে যায়। আওয়ামী লীগও একই সময়ে সমাবেশের
ডাক দেয়। তবে এটা পাল্টাপাল্টি নয়।
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক
কার্যালয়ে হওয়া উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি
এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত
রায় নন্দী, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক
আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
মন্ত্রী-এমপি প্রার্থিতা প্রত্যাহার ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি তাদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের ব্যাপারে চিন্তা করা হবে। সময়মতো অবশ্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।