নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ২২ নভেম্বর, ২০২০
তারেক জিয়া তরুণদের নিয়ে বিএনপি সাজানোর কাজ করছেন। আর এজন্যই বয়স্ক প্রবীণ নেতাদের উপেক্ষা করে তিনি অপেক্ষাকৃত তরুণ এবং তার প্রতি অনুগত নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন। দলের এমন অনেক সিদ্ধান্ত হচ্ছে, যে সিদ্ধান্তগুলো দলের প্রবীণ নেতারা জানছেন না। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর থেকেই তারেক জিয়া এই প্রক্রিয়ায় দল চালাচ্ছেন। যেমন নির্বাচনের পর বিএনপি সংসদ সদস্যরা শপথ নিবেন এবং সংসদে যাবে এটি দলের অধিকাংশ সিনিয়র নেতারা জানতেন না। শুধু তারেকের নির্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এটি করেছেন।
এখন বিএনপিতে স্থায়ী কমিটির শূন্যপদ পূরণ নিয়ে তারেকের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে । বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির পদ খালী রয়েছে। এই পদগুলোতে তারেক জিয়া অপেক্ষাকৃত তরুণ এবং কর্মক্ষমদের দিতে চান। এজন্য তিনি দুজনের নাম প্রস্তাব করেছেন বলে জানা গেছে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সুত্রগুলো বলছে, গত শনিবার তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে স্থায়ী কমিটিতে দুজনকে অর্ন্তভুক্ত করার প্রস্তাব করেন। এদের মেধ্যে একজন হলেন মহিলা কোটায় সংসদ সদস্য রুমিন ফরহানা এবং আরেকজন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল।
এ দুজনের নাম উচ্চারিত হওয়ার সাথে সাথেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন যে, এরা জুনিয়র এবং স্থায়ী কমিটিতে যাওয়ার জন্য খুবই অনুপযুক্ত। তারেক জিয়া পাল্টা যুক্তি হিসেবে দেখান যে, বিএনপিকে তিনি দীর্ঘ মেয়াদী লক্ষ্য থেকে পুর্ণগঠিত করতে চাচ্ছেন। আজকের যে সম্স্ত নেতৃবৃন্দ আছেন তারা আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই হয় অবসরে যাবেন না হয় কর্মক্ষম হয়ে পড়বেন। দলকে শক্তিশালী করার জন্য এই দুই তরুণকে তিনি অন্তর্ভুক্ত করতে চান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে, রুমিন ফারহানার সংসদে পারফরম্যান্সে উচ্ছ্বসিত তারেক বলেন যে, এরাই বিএনপির ফিউচার এবং এদেরকে দিয়েই দল তৈরি করতে হবে। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই বিষয়টিতে আপত্তি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, দলে অনেক ত্যাগী পরিক্ষিত তরুণ রয়েছে যারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন, কষ্ট স্বীকার করছেন। এখন যদি তাদেরকে বাদ দিয়ে এই দুজনকে দেওয়া হয় তাহলে দলের মধ্যে একটা ভুল বার্তা যাবে এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অনুৎসাহিত হবে।
কিন্তু তারেক জিয়া তার মতামতের অনড় থাকেন এবং তিনি এটিকে দলের মধ্যে আলাপ-আলোচনার কথা বলেন। এরপর বিএনপি মড়হাসচিব মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বিষয়টি নিয়ে দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা প্রত্যেকে এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তারা বলেছেন, এরকম সিদ্ধান্ত নেয়া হলে তাদের জন্য বিএনপি করা কঠিন হয়ে যাবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানিয়েছেন, আজ সকালেই বিএনপি মহাসচিব তাকে টেলিফোন করে এই দুজনের নাম বলেছেন এবং তাদেরকে স্থায়ী কমিটিতে নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহের কথা বলেছেন। বিএনপির ওই প্রবীণ নেতা বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটি হল দলের চেয়ারপারসনের পর সবচেয়ে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কমিটি। এই কমিটি হলো বিএনপির জন্য সর্বোচ্চ সম্মান সূচক পদ।
দীর্ঘদিন রাজনীতি করে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে স্থায়ী কমিটির সদস্য করা হয়। কাজেই আনকোরা নতুন এবং অনাহতদের স্থায়ী কমিটির সদস্য করা হলে এটি দলের মধ্যে একটি নেতিবাচক বার্তা দেবে। তিনি বলেন, তারেক জিয়া এর আগেও রুমিন ফারহানাকে মহিলা কোটায় দিয়েছিলেন। অথচ দলের মধ্যে অনেক ত্যাগী-পরীক্ষিত ব্যক্তি নারী সদস্য থাকার পরেও রুমিন ফারহানাকে নিয়েও দলের ভিতর নানা রকম কর্থাবার্তা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারেকের আবদার মানতে বাধ্য হন তারা। তাবিথ আউয়ালকেও ঢাকার উত্তর সিটি কর্পোরেশনে প্রার্থী করতে আপত্তি ছিল। এই সমস্ত আপত্তি সত্ত্বেও তারেক জিয়া শেষ পর্যন্ত এই দুজনকে গুরুত্বপূর্ণ করেছিল দলে। এখন অনেক বিষয এই দুজন গুরুত্বপুর্ণ মতামত দেন এবং তারেক জিয়ার সাথে তাদের যোগাযোগ রয়েছে। আর এই কারণেই এদেরকে স্থায়ী কমিটিতে যদি শেষ পর্যন্ত আনা হয় তাহলে বিএনপিতে হতাশা তৈরি হবে বটে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারেকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে কজন পারবেন সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ।
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়া বিএনপি ব্রিটিশ দূতাবাস সারা কুক
মন্তব্য করুন
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল ঢাকাস্থ ব্রিটিশ দূতাবাসে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় তিন নেতা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদকে দাওয়াত দেয়া হয়েছিল ব্রিটিশ দূতাবাসে। সেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক এক ঘণ্টার বেশি সময় তাদের সাথে বৈঠক করেন। এসময় ব্রিটিশ দূতাবাসে অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।