নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ২১ জানুয়ারী, ২০২১
সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের মূল ব্যক্তি ছিলেন আসলে জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ। ড: ফখরুদ্দিন আহমেদকে সামনে রেখে তিনিই সব কিছু করছিলেন। তার প্রধান করণীয় ছিলো ৫টি। প্রথমত, অন্তত ৫ বছর যেন এই নির্দলীয় সরকার থাকে তা নিশ্চিত করা। এজন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে বশে আনা। যারা এব্যাপারে একমত হবে না, তাদের দমন করা, দ্বিতীয়ত; আওয়ামী লীগ, বিএনপির বাইরে রাজনীতিতে একটি তৃতীয় ধারা তৈরী করা। নির্দিষ্ট করে, দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে হটিয়ে দেয়া। তৃতীয়ত; আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়। চতুর্থত: দুর্নীতি বিরোধই অভিযানের মাধ্যমে জন আস্থা অর্জন, পঞ্চমত: রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনা।
দ্বিতীয় সপ্তাহে জেনারেল মঈন দুর্নীতি বিরোধই টাস্ক ফোর্স গঠন করেন। এই অভিযানে যারা নেতৃত্ব দেবেন সেই সব সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন সেনা সদর হলে। দুই ঘণ্টার এই বৈঠকে জেনারেল মঈন দুর্নীতি বিরোধই অভিযান কেন গুরুত্বপূর্ণ তা ব্যাখ্যা করেন। দুর্নীতিকেই তিনি দেশের এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন। বলেন ‘দুর্নীতি সমূলে উৎপাটন না করতে পারলে, বাংলাদেশের জনগণ উন্নত জীবন পাবে না।’ বক্তব্যের পর ডিজিএফআই প্রণীত শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের একটি তালিকা সেনা কর্মকর্তাদের হস্তান্তর করেন। এসময় জেনারেল মঈন, এব্যাপারে সেনা কর্মকর্তাদের মতামত জানতে চান। এসময় একজন মেজর জেনারেল (পরবর্তীতে তিনি সেনা প্রধান হয়েছিলেন) বলেন ‘এই তালিকায় তারেক জিয়ার নাম নেই। বাংলাদেশে এখন দুর্নীতির প্রতীক হলো তারেক জিয়া এবং তার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুন। অথচ শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের তালিকায় তারেকের নাম নেই। তারেক জিয়াকে না ধরে বাংলাদেশে কোন দুর্নীতি বিরোধই অভিযান সফল হতে পারে না।’ এরপর একে একে সেনা কর্মকর্তারা তারেক জিয়া, কোকো, মামুনের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির ফিরিস্তি দিতে থাকেন। সেনা সদরে তারেক জিয়াকে নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতে জেনারেল মঈন বলেন ‘তারেক জিয়া কেন দুর্নীতি করলে কেউ ছাড় পাবে না।’ সেনা কর্মকর্তারা অবিলম্বে তারেক জিয়ার নাম অন্তর্ভুক্তের দাবী জানান। মঈন তাতে সম্মতি দেন। অন্যভাবে বলা যায়, সম্মতি দিতে বাধ্য হন। তবে, তারেক জিয়াকে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্তে সবচেয়ে খুশী হন একজন উপস্থিত সেনা কর্মকর্তা। তিনি হলেন মেজর জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। যদিও জেনারেল মাসুদ ছিলেন তারেকের আত্মীয়। কিন্তু তারেকের কারণেই তিনি সেনা প্রধান হতে পারেননি বলে গুঞ্জন ছিলো। মাসুদ বললেন ‘মামুনকে ধরলেই তারেকের সব তথ্য পাওয়া যাবে।’
আগামীকাল পর্ব ১৪: মামুনকে গ্রেপ্তার করে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া।
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।