নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৯ পিএম, ২৪ জানুয়ারী, ২০২১
চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মর্যাদার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। আগামী ২৭ জানুয়ারি বন্দর নগরীর এই নির্বাচনের দিকে নজর গোটা দেশের। বিএনপি প্রার্থী ডা: শাহাদতের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা আর আওয়ামী লীগের তীব্র অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এই নির্বাচন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ হবে বলে চট্টগ্রামবাসী মনে করছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু চট্টগ্রামের রাজনীতিতে তিনি প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরী পন্থী হিসেবে পরিচিত। দ্বিধা বিভক্ত চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এই গ্রুপের নেতৃত্বে এখন আছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। অন্যদিকে মহিউদ্দিন বিরোধীদের নেতা হলেন সাবেক মেয়র আ.জ.ম নাছির। প্রচারণার শুরু থেকেই এই দুই গ্রুপের বিরোধে পিছিয়ে পরে আওয়ামী লীগ।
এই দুই গ্রুপের বিরোধের কারণে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি। ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩১টিতেই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। তবে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত অধিকাংশ বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে এলেও এখনও ৮টি ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থীরা অনঢ় অবস্থানে আছেন। এই আটটি ওয়ার্ড হলো: বন্দর (ওয়ার্ড-৩৬), ফিরিঙ্গীবাজার (ওয়ার্ড-৩৩), উত্তর হালিশহর (ওয়ার্ড-২৬), দক্ষিণ আগ্রাবাদ (ওয়ার্ড-২৭), বাগ মুনিরাম (ওয়ার্ড-১৫), পূর্ব ষোল শহর (ওয়ার্ড-৭), দক্ষিণ পাহাড়তলী (ওয়ার্ড-১), উত্তর পাহাড়তলী (ওয়ার্ড-৯), লালখান বাজার (ওয়ার্ড-১৪)। দ্বিধা বিভক্ত আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং নির্বাচনে জন আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন যেন ঘটে, তা নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ সভাপতি এখন সার্বক্ষণিক ভাবে চসিক নির্বাচনের খোঁজ নিচ্ছেন।
শেখ হাসিনার নির্দেশেই আওয়ামী লীগ নেতা এস.এম কামাল চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। তার উদ্যোগে অভ্যন্তরীণ কোন্দল অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে। এছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফ চট্টগ্রাম ঘুরে গেছেন। বিপ্লব বড়ুয়া এখন চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি সার্বক্ষণিক ভাবে চসিক নির্বাচনের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তার সার্বক্ষণিক নজরদারির কারণে আওয়ামী লীগে প্রচারণায় নতুন প্রাণ এসেছে। অন্যদিকে বিএনপি এই নির্বাচনে ভিন্ন কৌশল নিয়েছে। ওয়ার্ড কাউন্সিলরে তারা তেমন প্রচারণা করছে না। বরং বিদ্রোহী প্রার্থীদের সাথে ভোট ভাগের গোপন সমঝোতা করছে। তারা শুধু মাত্র মেয়র প্রার্থীকে ঘিরে সব প্রচারণা কেন্দ্রীভূত করেছে। চট্টগ্রামে বিএনপি সাংগঠনিক ভাবে অত্যন্ত দুর্বল হলেও, ডা: শাহাদাত হোসেনের ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাই, চট্টগ্রামে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়া বিএনপি ব্রিটিশ দূতাবাস সারা কুক
মন্তব্য করুন
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল ঢাকাস্থ ব্রিটিশ দূতাবাসে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় তিন নেতা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদকে দাওয়াত দেয়া হয়েছিল ব্রিটিশ দূতাবাসে। সেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক এক ঘণ্টার বেশি সময় তাদের সাথে বৈঠক করেন। এসময় ব্রিটিশ দূতাবাসে অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।