নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৮ পিএম, ৩১ জানুয়ারী, ২০২১
সারাদেশে তৃতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচন হয়ে গেল গতকাল শনিবার। দৃশ্যত এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে। কিন্তু একটু গভীর অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে, এই নির্বাচনে আসলে জিতেছেন এমপিরা। তৃতীয় ধাপে ৬৩টি পৌরসভার মেয়রদের মধ্যে ১৪ জনই বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এরা নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এদের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন স্থানীয় এমপিরা। আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থীরা এমপিদের অনুগত না হওয়ায় তারা ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ কে দাঁড় করিয়েছেন। তাদের পেছনে অর্থব্যয় করেছেন। তাদের জেতানোর জন্য পুলিশ, প্রশাসন এবং নিজস্ব কর্মীদের ব্যবহার করেছেন। আওয়ামী লীগের এসব বিদ্রোহী প্রার্থীদের বলা হচ্ছে এমপি লীগের প্রার্থী। ভোটের শেষে হিসেব নিকেশ করে দেখা যাচ্ছে, তৃতীয় ধাপের পৌর নির্বাচনে আসলে আওয়ামী লীগ জিতেনি, জিতেছে এমপি লীগের প্রার্থীরা। শুধু তৃতীয় ধাপে নয় প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপেও চিত্র মোটামুটি একই রকম।
এবার পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রস্তাব এসেছিল তৃনমূল থেকে। এখান থেকেই শুরু হয়েছিল এমপিদের দৌড়ঝাঁপ। কেন্দ্রে যে নাম এসেছে, সেখানে যেন তাদের ‘অনুগত’ এবং একান্ত বাধ্যগত ব্যক্তির নাম থাকে, সেজন্য স্থানীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় তারা হস্তক্ষেপ করেছিলেন। অধিকাংশ প্রস্তাবেই তাই এমপিদের পছন্দের ব্যক্তির নাম ছিলো সবার আগে। কিন্তু ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত মনোনয়ন বোর্ডের সভায়, স্থানীয় পর্যায় থেকে পাঠানো নাম কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাতিল করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উদ্যোগ পরিচালিত জরীপের ভিত্তিতে অনেক পৌরসভায় এমপির আজ্ঞাবহ ব্যক্তি মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। কিন্তু এমপিরা দলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে তাদের অনুগত প্রার্থীকে স্বতন্ত্র দাড় করিয়েছেন। এখন পর্যন্ত তিন ধাপে পৌর নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ নয় এমপিদের ‘অনুগত’ প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন শতকরা ৮০ ভাগ। শুধু পৌরসভা নয় উপজেলা নির্বাচনেও ছিলো একই চিত্র। এমপিরা জেলার কমিটি তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখছেন। তাদের পছন্দের বাইরে যারাই যাচ্ছেন তাদের হয় নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে, না হয় হয়রানির মধ্যে রাখা হচ্ছে। অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনেও নিজেদের পক্ষের লোকজনকে রাখার জন্য দেন দরবার করছেন। বেশীর ভাগ এমপিই তার নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের বাইরে নিজস্ব প্যারালাল এক সংগঠন করেছেন। এই সংগঠনের নাম হচ্ছে এমপি লীগ। আর ক্রমশ: এমপি লীগের কাছে অসহায় হয়ে পরছে আওয়ামী লীগ।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বিএনপি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শামা ওবায়েদ সারাহ কুক
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনাটি জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্য স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এটি আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যন্ত যে পরিবারতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় যে জমিদারি প্রথা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই উদ্যোগ তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।