নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৯ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
শুরুটা করেছিলেন কাদের মির্জা। এখন সেই পথ ধরে সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাদের মুখে যেন খই ফুটেছে। যার যা ইচ্ছা তাই বলছেন। তৃনমূলের লাগামহীন কথাবার্তায় বিব্রত এবং অস্থির আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন ‘তৃণমূলের কিছু অতি উৎসাহীদের বেসামাল কথাবার্তার লাগাম এখনই টেনে ধরতে না পারলে, সামনে বিপদ।’
গত বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এক অদ্ভুত তত্ত্ব দিয়েছেন। নূর উদ্দিন চৌধুরী ওরফে নয়ন, পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষ্যে এক সমাবেশে বলেছেন ‘ইভিএম এমন এক সিস্টেম, নৌকার বাইরে কেউ ভোট দিলে ধরি হালান যায়। চিটাগাং এক কেন্দ্রে নৌকা পাইছে ২ হাজার ৩০০ ভোট। এক ভোট পাইছে ধানের শীষ। পরের দিন এক ভোট কে দিচ্ছে, ওই ওয়ার্ডের নেতারা তারে ধরি হালান।’ এই ভয়াবহ শব্দ বোমার রেশ কাটতে না কাটতেই ঠাকুরগাঁওয়ে এক আওয়ামী লীগ নেত্রী আরেক বেসামাল কথা বললেন। কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম। বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও এর ২ নম্বর ওয়ার্ডের এক নির্বাচনী সভায় তিনি বলেন ‘যাদের মনে ধানের শীষের সঙ্গে প্রেম আছে তারা কি করবেন? ১৩ তারিখে ঠাকুরগাঁও ছেড়ে চলে যাবেন। ১৩ তারিখ সন্ধ্যার পর তাদের দেখতে চাই না। তাদের ভোট কেন্দ্রে আসার কোন প্রয়োজন নেই। তাহলে ভোট কেন্দ্রে যাবে কে? নৌকা, নৌকা আর নৌকা।’
এরা কেউই আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা নন। নীতি নির্ধারকও নন। কিন্তু এসব বক্তব্য বিরোধীদের জন্য রসদ হিসেবে কাজ করছে। এতদিন ধরে ইভিএম এবং ভোট নিয়ে বিরোধী দল যে সব অভিযোগ করে এসেছে, এসব বক্তব্য যেন এই অভিযোগের প্রমাণ পত্র। গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই বক্তব্য গুলো এখন মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। এটি আওয়ামী লীগকেই বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলছে। জনগণের মধ্যেও এরকম একটা ধারনা তৈরি হচ্ছে যে, বিএনপির বক্তব্যের পেছনে হয়তো যুক্তি আছে। আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন ‘এই সব বাচাল অর্বাচীনদের লাগামহীন কথা আওয়ামী লীগের সব অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে।
আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেছেন ‘কাদের মির্জা যখন সব শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে একের পর এক লাগামহীন কথাবার্তা বললেন, তখন আমরা তাকে থামাতে পারিনি। তার দেখাদেখি এখন যে যেমন পারছে তেমন করে লাইম লাইটে আসার জন্য অসংলগ্ন, দায়িত্বহীন কথাবার্তা বলছে। এটা আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করছে।’ এসব বাচালদের এখনই না থামানো গেলে ভবিষ্যতে এরাই আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করবে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।