নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
মূলত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়ায় একটি অর্থবহ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। কিন্তু সে সময় আওয়ামী লীগ নির্বাচনের পথে হাটলেও বিএনপিকে নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিলো। শেখ হাসিনা কারগার থেকে বেড়িয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং দলকে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড করার জন্য নির্দেশনা দেন। একইসাথে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসে নির্বাচনী ইশতেহারসহ নির্বাচনের বিভিন্ন বিষয়গুলো নিয়ে হোম ওয়ার্ক করার সুযোগ পান। শেখ হাসিনার জন্য এটি ভালো হয়েছিলো কারণ তিনি নিরিবিলি পরিবেশে প্রার্থী বাছাই, নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ণসহ নির্বাচনী কৈশল প্রণয়ণের কাজটি করতে পেরেছিলেন।
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আগ পর্যন্ত বিএনপি ছিলো বিভক্ত এবং নির্বাচন করতে বিএনপির মধ্যে দুই রকমের মত ছিলো। অন্যদিকে সাইফুর রহমান এবং মেজর হাফিজ উদ্দিনের নেতৃত্বের বিএনপির নির্বাচনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলো। নির্বাচন কমিশন তাদের ধানের শীষ প্রতিকও বরাদ্দ দিয়েছিলো। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির পর পুরো প্রেক্ষাপট পাল্টে যায়। খালেদা জিয়ার মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে বিএনপির সংস্কারপন্থীরা কোনঠাসা হয়ে পড়ে এবং তখনই মান্নান ভূঁইয়া ও তার পন্থীদের বিএনপির রাজনীতিতে অবশান ঘটে।
এই সময় খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের বিএনপি আত্মপ্রকাশ করে। এই সময় নির্বাচন কমিশন তাদের ভুল বুঝতে পারে এবং দ্রুত সাইফুর রহমান এবং মেজর হাফিজ উদ্দিনের ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ প্রত্যাহার করে নেন। নির্বাচন কমিশনের এই অবস্থানের পর বিএনপি ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে অংশগ্রহণ করে। তবে খালেদা জিয়া বুঝতে পারেন যে বিএনপির অবস্থা নাজুক এবং এই নির্বাচনে গিয়ে তার খুব একটা সুবিধা হবে না। তাই তিনি নির্বাচন কমিশনকে নানা রকম শর্ত আরোপ করেন। শেষ পর্যন্ত বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উদ্যোগে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয় এবং এর মধ্য দিয়ে সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হয়। একদিকে বিএনপির অন্তর্কলহ ও নেতৃত্বের জোটেও নানা রকমন টানাপোড়েন। এসমস্ত টানাপোড়েনের মধ্যেই নির্বাচনের পথে হাটতে শুরু করে বিএনপি।
১/১১ সরকারের প্রথম অবস্থান ছিলো ৪টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। ওই চারটি নির্বাচেনর মাধ্যমে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে যায় যে সারাদেশে আওয়ামী লীগের পক্ষে একটি জনমত তৈরি হয়েছে। এখন প্রশ্ন থাকে বিএনপির এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে নির্বাচনী বৈতরণী পার হবে।
আগামীকাল পর্ব-৪১ : অবশেষে দেখা হলো দুই নেত্রীর
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।