নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
২০০১-০৬ সময়কাল। সরকারের বাইরে ছিলো আরেক সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আর সচিবালয় ছিলো পুতুল মাত্র। সব ক্ষমতার কেন্দ্রে ছিলো হাওয়া ভবন। হাওয়া ভবনই ছিলো বিকল্প সরকার। ২০০০ সালে গুলশানে বিএনপি নেতা আলী আসগর লবীর বাড়ি হাওয়া ভবন দখল করেন তারেক জিয়া। নির্বাচনী কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে তদারকি এবং পরিচালনার জন্যই এই অফিস করা হয়েছিল। নির্বাচনের পর এই ভবনই হয়ে ওঠে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং কমিশন বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। সব সিদ্ধান্ত নেয়া হতো এখান থেকেই। এই হাওয়া ভবনকে ঘিরে রয়েছে বেশ কিছু চমকপ্রদ ঘটনা। সেই সব ঘটনা নিয়েই বাংলা ইনসাইডারের ধারাবাহিক আয়োজন ‘হাওয়া ভবনের অন্দর মহল’-
২০০১ সালের ১ অক্টোবর। নির্বাচনের ফলাফল তখনও ঘোষণা শুরু হয়নি। কিন্তু হাওয়া ভবনে বিজয় পার্টির আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে সকাল থেকেই। হোটেল পূর্বানী থেকে শেফ এসেছে। থরে থরে সাজানো হয়েছে নানারকম মদ। সন্ধ্যার পর থেকেই বিএনপির নেতারা আসতে শুরু কররেন হাওয়া ভবনে। হারিস চৌধুরী, ফিরোজ এবং আশিক সবাইকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন। রাত ১০টার কিছু আগে হাওয়া ভবনে এলেন তারেক জিয়া। গেটের কাছে দাঁড়ানো বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী। তারা শ্লোগান দিচ্ছে ধানের শীষ, ধানের শীষ। তারেক জিয়ার গাড়ির বহর হাওয়া ভবনের গেটে এসে দাঁড়ালো। ছাদ খুলে তারেক জিয়া জিপে দাঁড়ালেন। ভি চিহ্ন দেখিয়ে ভেতরে চলে গেছেন। রাত বারোটা নাগাদ বোঝা গেল বিপুল বিজয়ের পথে যাচ্ছে চারদলীয় জোট। তারেকের ভ্রুক্ষেপ নেই টেলিভিশনে ভোটের রেজাল্টের দিকে। সে আর মামুন ব্যস্ত মন্ত্রীসভার তালিকা নিয়ে।
রাত দেড়টায় হাওয়া ভবন জম-জমাট। সেখানে আছেন ব্যরিস্টার নাজমুল হুদা, আমান উল্লাহ আমান, ফজলুর রহমান পটল, লুৎফুজ্জামান বাবর, ব্যরিস্টার আমিনুল হক সহ আরো অনেকে। বড় বড় সিনিয়র নেতা, যারা জিয়ার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন তারা তারেককে সালাম দিতে দিতে কুজো হয়ে গেলেন। রাত তিনটায় তারেক এবং মামুন বেরিয়ে এলেন, তাদের কক্ষ থেকে। তখনও মদের উৎসব চলছে। বড় পর্দায় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা চলছে। এর মধ্যে তারেক বললেন ‘এবার নির্বাচনে আমাদের অনেক খরচ করতে হয়েছে। আপনারা জানেন, কিভাবে এই নির্বাচনে আমরা জয়ী হয়েছি। তাই আমাদের দায় দেনা মেটাতে হবে। এবার মন্ত্রীসভায় ‘মা’ এর পছন্দের নেতারা থাকবেন। দীর্ঘদিন ধরে যারা বিএনপির সঙ্গে ছিলেন তাদের রাখা হবে। কিন্তু অর্ধেক মন্ত্রীসভার মাধ্যমে আমরা ফান্ড কালেক্ট করবো।’ এরপর মামুন (গিয়াস উদ্দিন আল মামুন) জানিয়ে দিলেন, যোগাযোগ, টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ, স্বরাষ্ট্র, ভূমি, পররাষ্ট্র এই কয়েকটি মন্ত্রনালয় নিলাম হবে। তারিখও ঘোষণা করা হলো। ৬ অক্টোবর রাত ১০টায় নিলামে যারা অংশ গ্রহণ করতে চান তারা আসবেন।
দ্বিতীয় পর্ব : মন্ত্রী হবার নিলামে হুদা-বাবরের চমক
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।