নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচনে বিজয়ী হয় বিএনপি-জামায়াত জোট। এই বিজয়ের পেছনে ভারতের সমর্থন ছিলো বলে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে তারেক জিয়া দিল্লিতে গিয়ে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন এবং সেই বৈঠকে তিনি বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচনে বিজয়ী হলে ভারতের জন্য কি কি করবেন সে ব্যাপারে মুচলেকাও দিয়েছিলেন। আর এর প্রেক্ষিতেই ভারত ওই নির্বাচনে বিএনপিকে আসার ক্ষেত্রে সহযোগীতা করেছিলো।
আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার ভাষণে বলেছেন যে, ২০০১ এর নির্বাচনে ভারতের ‘র’ এর সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জোট গোপনে আতাত করেছিলো। কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তারেক জিয়া ভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেন। ভারতের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হলেও অর্থ এবং নানা কৌশলের জন্য তারেক জিয়া ভারতের পাশাপাশি ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের সঙ্গেও সম্পর্ক তৈরি করেন। অনেকে মনে করেন যে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর থেকে অর্থ প্রাপ্তির প্রেক্ষিতেই তারেক জিয়া ভারতের জঙ্গি এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীর সঙ্গে এক ধরণের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। আর সেই সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ব্যাপক সমর্থন এবং আর্থিক সহায়তা ছিলো বলে জানা যায়।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তারেক জিয়ার প্রধান লক্ষ্য ছিলো বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন সেটা যেখান থেকেই হোক না কেন। আর জঙ্গি নেটওয়ার্ক এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সম্পর্ক স্থাপন করে তারেক জিয়া আর্থিকভাবে যেমন লাভবান হয়েছিলেন তেমনি আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে নির্মূল করার পরিকল্পনা করেছিলেন। তারেক জিয়ার ফর্মুলা ছিলো খুবই পরিস্কার যে বাংলাদেশে যদি জঙ্গি নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করা যায় তাহলে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করা যাবে এবং জঙ্গিদের দিয়ে আওয়ামী লীগকে আক্রমণ করলে সেটির দায়িত্ব বিএনপির ওপর পরবে না। এই সময় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র সরবরাহের এক মিশনে নামে হাওয়া ভবন এবং তারেক জিয়া। আর সেই মিশনে বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহৃত হতে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দর এবং মোংলা বন্দরকে অস্ত্র চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ে। আর এই অস্ত্র ধরা পরার ঘটনাটি ধরা পরে একজন সাহসী পুলিশ কর্মকর্তার উদ্যোগে। এই ঘটনায় বিএনপি বিব্রত হয়েছিলো এবং এর ফলে ভারতের সঙ্গে বিএনপির যে নির্বাচনী সম্পর্ক ছিলো সেই সম্পর্কে ছেদ পড়েছিলো। ২০০২ সাল থেকেই ভারত জেনেছিলো যে তারেক জিয়ার সঙ্গে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এবং বিচ্ছিন্নতাবদীদের পেছনে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার মদদ রয়েছে। এ নিয়ে ভারত বাংলাদেশের কূটনৈতিক অঙ্গনে একাধিকবার দেনদরবার হয়েছে কিন্তু বিএনপি এ বিষয়ে পাত্তা দেয়নি। হাওয়া ভবনের একটি ধারণা তৈরি হয়েছিলো যে তারা ক্ষমতায় আছে এবং যেকোনো প্রকারে তারা ক্ষমতায় চিরস্থায়ী করবে।
এখন ভারতকে চাপে ফেলতে হবে যাতে ভারত কখনও বাংলাদেশের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে না পারে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনা ছিলো হাওয়া ভবনের জন্য বিব্রতকর। এই অস্ত্র আটকের পরপরই বিএনপির ব্যাপারে একটি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ শুরু করে ভারত। অনেকেই মনে করেন যে, ১০ ট্রাক অস্ত্রের ঘটনাটি উন্মোচিত হয় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার কারণে। ভারত ওই অস্ত্র আমদানির বিষয়টি জেনেছিলো এবং ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে জানিয়েছিলো যে অস্ত্র আসছে ও ট্রাকগুলোকে পরীক্ষা করার জন্য। বিএনপি এই ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলো কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটি ধামাচাপা দিতে পারেনি। আর এর মধ্যে দিয়ে একটি বিষয় আন্তর্জাতিক মহলে প্রমাণিত হয়ে যায় সেটি হলো তারেক জিয়া অর্থের জন্য সবকিছু করতে পারে।
পর্ব-৬: দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেই চাকরি হারালেন খালেদা জিয়ার সচিব
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।