নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৬ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
আগামী ২৬ মার্চ নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশে সফরে আসছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিব শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে নরেন্দ্র মোদীর এই ঢাকা সফর। দুই দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নেয়ার বার্তা দিতেই নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর করবেন। এই সফরকে কূটনৈতিক মহল থেকে বলা হচ্ছে, সম্পর্ক উন্নয়নের নতুন বার্তা। মোদীর সফর উপলক্ষে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। সফরের খুঁটিনাটি নানা বিষয় নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের, তিনি দিল্লি সফর করে এসেছেন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশ সফরে আসছেন এবং এই সফরকে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। মোদীর এই সফরকে কাজে লাগাতে চায় বিএনপিও। বিএনপি`র সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের দীর্ঘদিনের টানাপোড়ন চলছে। ২০১৮ নির্বাচনের আগেই সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করেছিলেন বিএনপির কয়েকজন নেতা। এদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আমীর খসরু মাহমুদ সহ আরো কয়েকজন।
আমীর খসরু মাহমুদের নেতৃত্বে একটি দল ভারতে গিয়েছিল এবং থিঙ্ক ট্যাঙ্কদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজে লন্ডনে গিয়ে ভারতের পক্ষে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। লন্ডনে তিনি ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন ব্যক্তির সাথে কথা বলেছিলেন বলেও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু বিএনপিকে একটি গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে ভারতের সুনির্দিষ্ট কিছু শর্ত ছিল। যে শর্তগুলো বিএনপি শেষ পর্যন্ত মানেনি। এই শর্তের মধ্যে ছিল তারেক জিয়াকে আপাতত রাজনীতির বাইরে রাখা, জামাতের সঙ্গে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে বিএনপির সুস্পষ্ট অবস্থান ব্যক্ত করা, ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান সুনির্দিষ্ট করা। ২০১৮ নির্বাচনের আগে এই বিষয়গুলোর মধ্যে শুধুমাত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরকে বিএনপি কখনোই সমর্থন করেনা, প্রশ্রয় দেয়না, এই বিষয়টির ছাড়া অন্য কোন বিষয়ে ভারতের প্রস্তাবে রাজি হয়নি বিএনপি। যার ফলে বিএনপি এবং ভারতের সম্পর্কের বরফ গলেনি। তাছাড়া ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশে আসার পর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার সঙ্গে সাক্ষাতের অ্যাপয়েন্টমেন্ট করেও শেষ পর্যন্ত সাক্ষাৎ না করাটাকে ভারত অপমানসূচক মনে করে। তারপর ভারতীয় কোন গুরুত্বপূর্ণ নেতার সফরের সময় বিএনপি সাক্ষাৎ পায়নি। তবে এবার বিএনপি বরফ গলাতে চায় এবং নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরে অন্তত কিছু সময় যেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ সাক্ষাত করতে পারেন, সেরকম একটি স্লট খোঁজার জন্য বিএনপি নেতাদের দৌড়ঝাঁপ চলছে। আর এই প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে বিএনপির কয়েকজন নেতা ভারতের দূতাবাস এবং দিল্লিতে ভারতের কূটনৈতিক মহলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। ড. মইন খান, আমির খসরু মাহমুদ, আবদুল আউয়াল মিন্টু সহ আরো কয়েকজন ব্যক্তি ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, যেন মোদী সফরে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও বিএনপি নেতৃবৃন্দ সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন।
একাধিক সূত্র বলছে যে, এবার মোদীর সফর অত্যন্ত কর্মব্যস্ত সফর হবে। সফরের এখন পর্যন্ত যে খসড়া সূচী নির্ধারিত হয়েছে তাতে বিএনপির সঙ্গে সাক্ষাতের কোন সময়সূচী নির্ধারণ করা হয়নি। কূটনৈতিক সূত্র বলছে যে, অতীতে বিএনপির সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হতো। কারণ বিএনপি জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে ছিল এবং বিরোধী দলের নেতা হিসেবেই ভারতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাক্ষাত করত। কিন্তু এখন জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল হলো জাতীয় পার্টি এবং প্রটোকল অনুযায়ী জাতীয় পার্টির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সাক্ষাত হলেও হতে পারে। বিএনপির সঙ্গে কোন ফর্মুলায় নরেন্দ্র মোদীর সাক্ষাৎ হবে সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাছাড়া ভারতীয় কূটনীতিকরা মনে করেন যে, বিএনপিকে এখনই একটি গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দিতে রাজি নয় নরেন্দ্র মোদী সরকার। কারণ ভারতের কাছে এখনো এরকম পর্যাপ্ত তথ্য আছে যে, বিএনপির অনেক নেতাই ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সাথে সম্পর্ক রেখেছেন। মোদীর সফর নিয়ে বিএনপি`র আগ্রহ এবং দৌড়ঝাঁপের পরেও শেষ পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিএনপি নেতাদের বৈঠক হবে কিনা তা এখনও অনিশ্চিত।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।