নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৬ পিএম, ০১ মার্চ, ২০২১
সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে হঠাৎ করেই বিএনপির একটি চাঙ্গা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে আজ বিএনপি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে অনুষ্ঠান শুরু করেছে। ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেল লেকশোরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করা হয়েছে। বিএনপি এইবার প্রথম ৭ মার্চ উদযাপন করছে।
বিএনপির নেতারা বলছেন, সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের পাশাপাশি রাজপথের আন্দোলন, দুটিই তারা সমান্তরালভাবে করতে চায়। রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিএনপি তার সংগঠনের যে সীমাবদ্ধতা এবং দুর্বলতা সেটা কাটিয়ে উঠতে চায় বলে বিএনপির নেতারা বলছেন। এর মধ্যে গতকাল আকস্মিকভাবে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপির তিন নেতা সাক্ষাৎ করেছেন। অন্যদিকে বিএনপির সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে, লন্ডনে পলাতক বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের দীর্ঘদিন ধরে কোন খবর নেই। বিএনপির নেতাদের সঙ্গে তিনি এক রকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন। খালেদা জিয়ার গত কয়েকদিন ধরেই রাজনীতিতে একটি অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে এবং এখন তিনি আবার জেলে যাবেন, না জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি হবে তা নি টানাপোড়নের মধ্যে রয়েছেন।
এর মধ্যে বিএনপিতে পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে গুঞ্জন উঠেছে এবং বিএনপির মধ্যে একটি নীরব মেরুকরণ ঘটছে। বিএনপির যারা শুভাকাঙ্ক্ষী, যারা বিএনপির রাজনীতির প্রয়োজনীয়তার কথা মানেন এবং আওয়ামী বিরোধী একমাত্র রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি টিকে থাকবে বলে মনে করেন, তারা এখন এই মেরুকরণে উস্কানি দিচ্ছেন। তারা মনে করছে যে, এখন জিয়া পরিবারের বাইরে বিএনপিকে গড়ার সুযোগ এসেছে এবং এভাবেই যদি বিএনপি তৈরি হয় তাহলে বিএনপি একটি শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে যেমন আত্মপ্রকাশ করবে তেমনি অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং জোট থেকেও নেতৃবৃন্দকে এনেও বিএনপিকে শক্তিশালী করা যাবে। আর এই প্রক্রিয়ায় বিএনপি পূনর্গঠনে বিজেপি মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে। উপমহাদেশে পরিবারতন্ত্রের বাইরে গিয়ে বিজেপি প্রথম সফল রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে, যে রাজনৈতিক দলের উত্তরাধিকার নির্বাচিত হচ্ছে যোগ্যতার ভিত্তিতে এবং একটি যৌথ নেতৃত্বের মাধ্যমে দল পরিচালনা করছেন। বিএনপির মধ্যেই এখন বিজেপি মডেলের ব্যাপারে জোর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তবে বিএনপি নেতারা বলছেন যে, এটি স্রেফ গুঞ্জন এবং যারা বিএনপিকে ভাঙতে চাইছে, দুর্বল করতে চাইছে তাদের ষড়যন্ত্রের অংশ।
সাম্প্রতিক সময়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনের জন্য যে মেরুকরণ তৈরি হচ্ছে, সেই মেরুকরণে যারা উদ্যোক্তা তারা সবাই জিয়া পরিবারতন্ত্র মুক্ত একটি বিএনপির কথা বলছেন। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম ওয়ান-ইলেভেন থেকেই রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। তিনি মনে করেন যে, বিএনপির বর্তমান যে নেতৃত্ব আছে তাদের মধ্যে থেকেই নেতৃত্ব বেঁছে নিয়ে বিএনপিকে সংগঠিত করা উচিত। কর্নেল অলি আহমেদ প্রকাশ্যেই পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলছেন এবং তারেক জিয়ার এখন বিএনপিতে আসার যোগ্যতা নেই, এরকম মন্তব্যও তিনি করেছেন। কারো কারো সঙ্গে বিএনপির সুসম্পর্ক রয়েছে। এদের মধ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রকাশ্যেই তারেক জিয়াকে আপাতত রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার দাবি জানিয়েছেন এবং বিএনপির মধ্য থেকেই কাউকে নেতৃত্বে বেছে নেওয়ার কথা বলেছেন।
গত তিনমাস বিএনপির মধ্যে দৃশ্যত সেই মেরুকরণটি দেখা যাচ্ছে যে, জিয়া পরিবারের প্রভাবমুক্ত থেকে বিএনপি কিছু কর্মসূচি পালন করছে এবং সেই সমস্ত কর্মসূচির কারণে কিছু শুভ উদ্যোগও দেখা গেছে। বিএনপির ৭ মার্চ উদযাপনকে আওয়ামী লীগও স্বাগত জানিয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন এর মাধ্যমে বিএনপি তরুণ প্রজন্মের ভোটার, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে তাদেরকে প্রথমবারের মতো আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে। আর এই পরিবর্তনগুলো সম্ভব হয়েছে জিয়া পরিবারের প্রভাব মুক্ত থেকে নেতৃত্বের কারণে।
বিএনপির থিংক ট্যাঙ্কদের কেউ কেউ মনে করেন যে, বিএনপির একটি চিরন্তন সমর্থক গোষ্ঠী থাকবে যারা আওয়ামী লীগ বিরোধী এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল উগ্র বাম যারা ছিল এদের আশ্রয়স্থল হলো বিএনপি। কাজেই বিএনপিতে কে নেতা থাকলো না থাকলো সেটি বড় বিষয় নয়, বড় বিষয় হলো বিএনপির একটি ভোট-ব্যাংক আছে। যদি জিয়া পরিবারের প্রভাবমুক্ত থেকেই ভোট-ব্যাংকে কাজে লাগানো যায়, তাহলে বিএনপি শক্তিশালী হবে। বিজেপি যদি পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি না করে ক্ষমতায় আসতে পারে এবং একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে বিকশিত হতে পারে, তাহলে বিএনপি কেন পারবে না সেই প্রশ্ন বিএনপির মধ্যে এখন উঠছে। আর এজন্যই বিএনপির ভিতরে বাহিরে এখন জিয়া পরিবার মুক্ত একটি বিএনপিকে এগিয়ে নেওয়ার দাবি উচ্চারিত হচ্ছে। খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়া এখন কিছুটা হলেও দূরত্ব রেখে আছে। বিএনপির নেতারাই এখন নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে রাজনৈতিক কর্মসূচী এবং অন্যান্য ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এর ফলে পরিবর্তিত বিএনপি কতটা সফল হবে কিংবা বিএনপি আদৌ ভারতের বিজেপির মত একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিকশিত হতে পারবে কিনা সেটা সময় বলে দেবে।
মন্তব্য করুন
খন্দকার মোশাররফ হোসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জন বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে পিছু
হটল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির যেসব নেতা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ছিলেন, এরই
মধ্যে তাদের প্রার্থী না হতে বারণ করা হয়েছে। জামায়াতের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ কেন্দ্রীয়
নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে আলোচনার পর উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার এ সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্রের
এ সিদ্ধান্ত স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতারা তৃণমূলে জানিয়ে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে যারা মনোনয়নপত্র
জমা দিয়েছেন, তাদের প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে জামায়াত কোনো আনুষ্ঠানিক
ঘোষণা দেয়নি। দলীয় সিদ্ধান্ত না থাকলেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় জামায়াতের অনেক নেতা স্বতন্ত্র
প্রার্থী হিসেবে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সম্ভাব্য
প্রার্থীরা স্থানীয়ভাবে নানারকম প্রচার ও গণসংযোগও করছিলেন। বিশেষ করে রোজার মধ্যে
এবং ঈদুল ফিতরে তারা ব্যাপক গণসংযোগ করেছেন।
দলটির নেতারা বলছেন, মূলত বেশকিছু কারণে
বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাচ্ছে না জামায়াত। তার মধ্যে মোটাদাগে চারটি কারণের
কথা বলছেন নেতারা।
কারণগুলো হচ্ছে…
১। মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগে ক্ষমতাসীনদের
‘হস্তক্ষেপ’
২। বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থা ও পরিবেশের
প্রতি জনগণের ‘আস্থার সংকট’
৩। গণতন্ত্র না থাকা এবং
৪। উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে ‘অবৈধ
সরকার’কে বৈধতা না দেওয়া
এদিকে, উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখের (সোমবার) আগেই সিদ্ধান্ত বদল করায় জামায়াতের তৃণমূলে
অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মাঠপর্যায়ে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, যশোর, সাতক্ষীরা,
চুয়াডাঙ্গাসহ বেশকিছু উপজেলায় জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থী
হিসেবে নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করেছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি উপজেলার
সম্ভাব্য প্রার্থীরা বলেন, নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত এমন সময় এলো, যখন তারা ব্যাপকভাবে
গণসংযোগ করছিলেন। এতে তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে নেতিবাচক বার্তা যায়।
নির্বাচনে গেলে কী লাভ আর কী ক্ষতি—এটা ভেবে অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন দলের
নীতিনির্ধারকরা। তবে সার্বিক পরিস্থিতিতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা যে সিদ্ধান্ত
নিয়েছেন, সেটাকেও সম্মান জানাতে চান তারা।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) জামায়াতে
ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি
বিবেচনায় উপজেলা নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত। এরই মধ্যে সারা দেশে দলীয়
সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ মনোনয়ন জমা দিলে তা প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।
দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি-জামায়াতসহ
প্রায় ৬৩টি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন গত ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন
বর্জন করেছে। বিএনপিও এ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। ইসলামী দলগুলোর অন্যতম চরমোনাই
পীরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে না যাওয়ার
সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সবমিলিয়ে জামায়াতকেও শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত
নিতে হলো।
এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের
বিষয়ে শুরুর দিকে কিছুটা নমনীয় ছিল জামায়াত। জয়ের সম্ভাবনা আছে এবং স্থানীয়ভাবে প্রভাব
আছে—এমন উপজেলাগুলোতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত
নিয়েছিল দলটি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এবং প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট
উপজেলা ও জেলা কমিটির দায়িত্বশীল নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সে মোতাবেক সম্ভাব্য
প্রার্থীরা প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের চলামান রাজনৈতিক
ও সার্বিক পরিস্থিতিতে ঈদের আগে দলের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের
বৈঠক ডাকে জামায়াতে ইসলামী। সেখানে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা
হয়। একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ঈদুল ফিতরের পরপরই গত
শনিবার উপজেলা নির্বাচন না করার বিষয়ে জেলা ও উপজেলার দায়িত্বশীল নেতাদের মাধ্যমে তৃণমূলে
মৌখিকভাবে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের ব্যাপারে জামায়াতের
নেতারা বলছেন, তারা পর্যালোচনা করে দেখেছেন যে, দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো
পরিবেশ নেই। জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে ভূমিকা
রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। যার সর্বশেষ প্রমাণ গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন।
দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অসংখ্য
রাজনৈতিক দল এ সরকারের অধীনে নির্বাচন বর্জন করেছে। এ অবস্থায় জামায়াতে ইসলামী উপজেলা
নির্বাচনে অংশ নিয়ে ‘অবৈধ সরকার’কে বৈধতা দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। তা ছাড়া নির্বাচনের
আগেই বিভিন্ন স্থানে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীদের হুমকি দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। এসব
বিষয়কে বিবেচনা করে উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত।
গতকাল জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি
জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী শুধু নয়, বাংলাদেশের কোনো গণতান্ত্রিক
দল উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। কারণ, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দেশের
জনগণ ভোট দিতে যায়নি। তারা একতরফা নির্বাচন বর্জন করেছে। সেই জনরোষ এখনো আছে। সুতরাং
যেসব কারণে আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছি, সেসব কারণেই উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছি
না। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী জনগণের জন্য রাজনীতি করে। জনগণের প্রতি জামায়াতের দায়বদ্ধতা
আছে। দায়িত্বশীল দল হিসেবে জামায়াত জনমতকে উপেক্ষা করে নির্বাচনে যেতে পারে না’।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১৪ সালের জাতীয়
সংসদ নির্বাচনের পরপর অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে জামায়াতের শতাধিক প্রার্থী
উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলাসহ) হন। ২০০৯ সালের নির্বাচনে ২৪টি উপজেলায়
চেয়ারম্যানসহ ৩৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলাসহ) নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে দলীয়
প্রতীকে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন বর্জন করে জামায়াত। দলের নিবন্ধন না থাকলেও স্বতন্ত্র
প্রার্থী হওয়ার সুযোগ ছিল জামায়াত নেতাদের। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তে সেবার কেউ নির্বাচনে
অংশ নেননি।
উপজেলা নির্বাচন জামায়াত বিএনপি
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-কে বিজয়কে সুসংহত করার পথে
প্রতিবন্ধকতা উল্লেখ করে সন্ত্রাসী এ অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি
৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাদের বলেন, বিজয়কে সুসংহত করার পথে প্রতিবন্ধকতা হলো বিএনপির
মতো সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী অশুভ শক্তি। এ শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। আজকের এ দিনে
বিএনপিসহ স্বাধীনতাবিরোধী সন্ত্রাসী শক্তি সব অপশক্তিকে, যারা আমাদের বিজয়কে সংহত
করার প্রতিবন্ধক, এদের আমরা পরাজিত করব, পরাভূত করব, প্রতিহত করব। আমাদের লড়াইকে আমরা
এগিয়ে নিয়ে যাব।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি তো কোনো দাবিকে বিচ্ছিন্নভাবে
কিছু বলতে পারি না। মন্ত্রিসভা আছে, প্রধানমন্ত্রী আছেন। তারা এত বছর পর দাবিটা তুলছেন,
কেন তুলছেন এটাও জানার দরকার আছে।
তিনি আরও বলেন, আজকের এই দিনে আমরা শপথ নেব মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ধারাবাহিক
লড়াইয়ে আমরা এগিয়ে যাব। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বয়ে নিয়ে
যাব, এটাই হোক আমাদের শপথ।
এর আগে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার স্থপতি
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। প্রধানমন্ত্রীর
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর
প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বিএনপি মুজিবনগর দিবস ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে যে, মন্ত্রী এবং এমপিরা উপজেলা নির্বাচনে কোন প্রার্থীকে সমর্থন করতে পারবে না। তাদেরকে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই রকম বার্তা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে লিখিত নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই সমস্ত নির্দেশনা উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা উপজেলা নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করাতে মাঠে নেমেছেন। এমনকি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নির্বাচনী এলাকাতেই এমপিরা প্রার্থীর নাম ঘোষণা করছেন।
উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে পিছু হটল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির যেসব নেতা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ছিলেন, এরই মধ্যে তাদের প্রার্থী না হতে বারণ করা হয়েছে। জামায়াতের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে আলোচনার পর উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার এ সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্রের এ সিদ্ধান্ত স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতারা তৃণমূলে জানিয়ে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাদের প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।