নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ০৮ মে, ২০২১
২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি। সাবেক অর্থমন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ এ এম এস কিবরিয়া সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হলেন হবিগঞ্জের বৈদ্যের বাজার প্রাইমারি স্কুল প্রাঙ্গণে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে অনুরোধ করা হলো একটি হেলিকপ্টার দেওয়ার জন্য যাতে দ্রুত মুমূর্ষু কিবরিয়াকে ঢাকায় নিয়ে এসে বাঁচানোর শেষ চেষ্টাটা করা যায়। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার হেলিকপ্টার দিলো না। একটি এম্বুলেন্সে করে রক্তাক্ত, মুমূর্ষু সাবেক অর্থমন্ত্রী এবং মুক্তিযোদ্ধা কিবরিয়াকে ঢাকায় নিয়ে আসার পথে তিনি মারা গেলেন। ২০২১ এর মে, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে আছেন। তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার বেগম জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য একটি আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই লকডাউের মধ্যেও সেই আবেদন রাতেই আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। আইন মন্ত্রণালয় লকডাউন ভেঙে এই আবেদন পর্যালোচনা করেছে এবং বিকেল তিনটার মধ্যে রিপোর্ট দিয়েছে আইনমন্ত্রীর কাছে। বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার যেনো নির্বিগ্ন হয় সে জন্য ছুটির দিনও পাসপোর্ট অফিস খোলা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক সুস্থতা কামনা করে সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ সব নেতা।
এ দুটি ঘটনার পার্থক্য দিলেই শেষ হবে না। বেগম খালেদা জিয়া হলেন সেই ব্যক্তি যিনি প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটনো হয়েছিলো। ২০০৪ এর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনাটি ছিলো পুরোপুরি ভাবে শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে এবং পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় দেবার জন্য। আর এই ঘটনার দায় বেগম জিয়ার ওপর বর্তায় এ কারণেই যে, এই ঘটনার পর পর তিনি জাতীয় সংসদের এক ভাষণে এই ঘটনাকে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল হিসেবে বলার চেষ্টা করেছিলেন। শুধু তাই করেননি এই হামলার সমস্ত আলামত তার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিভিন্ন বাহিনী নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়েছিলো এবং সেই নাটকের মাধ্যমে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার মূল হোতাদের আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছিলো। আর সেই বেগম খালেদা জিয়াই যখন সর্বোচ্চ আদালত থেকে জামিন বিমুখ হয়েছেন, যখন তার মুক্তির কোনো পথ নেই তখন প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে তাকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে যে, খালেদা জিয়ার ব্যাপারে শেখ হাসিনা কেন এত মানবিক? যে রাজনীতিবিদ তাকে নিঃশেষ করতে চেয়েছিলো, পৃথিবী থেকে চিরবিদায় জানতে চেয়েছিলো, যে রাজনীতিবিদ সুযোগ পেলেই তাকে নিঃশেষ করে দিতে চায় তার ব্যাপারে কেন শেখ হাসিনা মানবিক? যে রাজনীতিবিদ যখন ক্ষমতাবান ছিলেন তখন মানুষকে ন্যূনতম মর্যাদা দিতেন না, মানবিক মূল্যবোধ ছিলো না, তার প্রতি কেন তিনি মানবতা দেখান? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা যায় যে, শেখ হাসিনার চারিত্রিক প্রকাশটিই হলো মানবিক। তিনি মানুষের দুঃখ-কষ্ট দেখতে পারেন না। চরম শত্রুর প্রতিও তিনি মানবতা দেখান। তার এই চারিত্রিক বৈশিষ্টটি অনেকটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতই। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর যে সমস্ত রাজাকার-আলবদর দালালদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো তাদের অনেকেই ছিলেন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের ব্যাপারে আইনের প্রয়োগ করলেও তাদের বিভিন্ন রকম সহযোগিতা করেছেন।
মুসলিম লীগের কয়েকজন নেতা যখন জেলে ছিলেন তখন বঙ্গবন্ধু তাদের পরিবারকে টাকা পাঠাতেন। ঠিক একই গুণ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে। যে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পঁচাত্তরের খুনিদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছে, স্বাধীনতা বিরোধীদের লালন পালন করেছে এবং তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে সেই রাজনীতিবিদকে তিনি কেবল মুক্তিই দেন নি এখন তার বিদেশে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন। কিন্তু চরম শত্রুর ব্যাপারে অতি মানবিক হলে তার মূল্য দিতে হয়। শেখ হাসিনা কি তেমন মূল্য দিবেন?
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।