ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদাকে বিদেশে নেয়ার আবেদন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:৩৩ পিএম, ০৯ মে, ২০২১


Thumbnail

‘দেশে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধা সত্ত্বেও খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার আবেদন বিএনপির রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

রোববার (৯ মে) দুপুরে ঢাকার মিন্টু রোডে সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে সায়েদাবাদের আর কে চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদের পক্ষ থেকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। 

`বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হোন, সেটিই আমরা চাই এবং এজন্য মহান স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি` উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, আজ বিএনপি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে বেগম জিয়া দ্রুত আরোগ্য লাভ করছেন, এটি অত্যন্ত সুখবর।

মন্ত্রী বলেন, `খালেদা জিয়া দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছেন এবং এটি নিশ্চিত করতে সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধার ফলে ইতিমধ্যেই তার করোনা নেগেটিভ এসেছে। এজন্য চিকিৎসকদেরও ধন্যবাদ জানাই।`

`কিন্তু এরপরও বেগম জিয়াকে বিদেশে নেয়ার জন্য বিএনপির আবেদন-নিবেদনের হেতু বোধগম্য নয়, এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করছে, কারণ তিনি এখানে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন` উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী। 

হাছান মাহমুদ বলেন, করোনা পজিটিভ কোনো রোগীকে অন্য কোনো দেশ নিচ্ছে না এবং নেগেটিভ হবার পরও বেশ কিছুদিন যে নানা শারিরীক সমস্যা থাকে, তা আমার করোনা হয়েছিল বলে আমি জানি, এগুলো স্বাভাবিক। বেগম জিয়াকে এখন বিদেশে নয়, দেশেই তার সেবা-শুশ্রুষা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। সে কারণে বেগম জিয়াকে তাদের (বিএনপির) বিদেশে নিয়ে যাবার আবেদনের উদ্দেশ্য চিকিৎসা নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বলেই আমার মনে হয়।`

স্বাধীনতা পরিষদের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সোহরাব খান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন টয়েলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট বলরাম পোদ্দার, এম এ করিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবদুল গণি ও স্বাধীনতা পরিষদের সভাপতি জিন্নাত আলী খান জিন্নাহ। 

পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠানে প্রায় পাঁচশত পরিবারের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন অতিথিরা।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলায়ও পড়ছে সংসদ নির্বাচনের ছায়া

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে বিরত থাকা বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন, সিপিবিসহ ১৪টি নিবন্ধিত দল উপজেলা নির্বাচনেও অংশ নিচ্ছে না। দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানে তেমন কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। আর সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে থাকা বেশিরভাগ দলই থাকছে উপজেলায়। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ তা ব্যবহার করছে না। তাদের পথেই হাঁটছে ১৪ দলীয় জোটের শরিক গণতন্ত্রী পার্টি।

তবে দলীয় প্রতীকেই উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিতে চায় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ ১১টি নিবন্ধিত দল। আর দলীয়ভাবে প্রার্থী দেওয়া হবে কি না—তপশিল ঘোষণার পরও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি পাঁচটি রাজনৈতিক দল। অবশ্য আওয়ামী লীগ প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়ায় এবারের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তাদের মতে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে লড়াই হবে মূলত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে।

দেশে মোট উপজেলা ৪৯৫টি। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইসি ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১৭ এপ্রিল ও প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। এরপর আগামী ২৩ মে দ্বিতীয়, ২৯ মে তৃতীয় ও ৫ জুন শেষ ধাপের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

উপজেলা নির্বাচনে কার স্বাক্ষরে প্রার্থী নির্ধারিত হবে, তা বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসি সূত্র জানায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন ও আচরণ বিধিমালায় ব্যাপক সংশোধন আনা হয়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয় ও স্বতন্ত্র দুই ধরনের সুযোগই রাখা হয়েছে। তবে এ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ছাড় দিয়ে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। নির্বাচনে যাতে অধিকসংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশ নিতে পারেন, সেজন্য প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ২৫০ ভোটারের সমর্থন সূচক স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা সংযুক্তির বিষয়টি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনী পোস্টার, নির্বাচনী প্রচারণা এবং প্রার্থীদের জামানতসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বড় ধরনের সংশোধন আনা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে বিএনপিসহ ১০টি দল। দলীয় প্রতীকে অংশ নেবে ১১টি দল। প্রতীক ছাড়া অংশ নেওয়ার পক্ষে দুটি। এখনো নির্বাচনে অংশ গ্রহণ বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় পাঁচটি রাজনৈতিক দল। সব মিলিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথেই নিবন্ধিত বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। তারা ইতোমধ্যে উপজেলাসহ স্থানীয় সরকারের সব পর্যায়ের নির্বাচনে অংশ নিতে প্রার্থীও ঠিক করতে শুরু করেছে।

জানা গেছে, বিএনপির নেতৃত্বাধীন যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর মধ্যে ছয়টি নিবন্ধিত। এসব দলের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, তারা উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করবেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে আটটি নিবন্ধিত দল। একটি ছাড়া সবগুলোই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক। এ ছাড়া সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

জাপার দপ্তর সম্পাদক রাজ্জাক খান জানিয়েছেন, দলীয় প্রতীকে তারা স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে দুই সিটিতেও তারা প্রার্থী দিয়েছেন। রংপুর সদর উপজেলা পরিষদে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিবন্ধিত দলগুলোর বেশিরভাগই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আবার সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে কোনো কোনো দল।

এর আগে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও বিএনপি পরে উপজেলার ভোটে অংশ নিয়েছিল। যদিও তখন পর্যন্ত স্থানীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেওয়ার বিধান চালু হয়নি। পরে ২০১৯ সালে উপজেলায় দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলেও বিএনপি সেখানে প্রার্থী দেয়নি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করার পর এবার স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও অংশ না নেওয়ার দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে রেখেছেন তারা।

তবে নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক তৃণমূল বিএনপি। দলটির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘দল হিসেবে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার একটা মনোভাব আছে। যারা অংশ নিতে চায় তাদের আমরা উৎসাহিত করছি। তবে দলীয়ভাবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মহাসচিব দেশের বাইরে রয়েছেন। ঈদের পর দেশে ফিরলে তখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি আরেক নতুন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)।

এ তথ্য জানিয়ে দলটির মহাসচিব ড. মো. শাহজাহান বলেন, ‘আসন্ন উপজেলা নির্বাচনও বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো হলে, সেখানে অংশ নেওয়ার কোনো অর্থ হয় না। তবে আমরা এখন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। শিগগির এ ব্যাপারে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হলে দলীয় প্রতীকে, নাকি প্রতীক ছাড়া যাব, তখন সে সিদ্ধান্তও হবে।’

কল্যাণ পার্টিও নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক বলে জানা গেছে। জানতে চাইলে দলটির চেয়ারম্যান সংসদ সদস্য সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ‘কল্যাণ পার্টি নির্বাচনমুখী দল। শিগগির উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে গেলে দলীয় হাতঘড়ি প্রতীকে ভোট করবেন তাদের প্রার্থীরা।’

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (কাঁঠাল প্রতীক) মহাসচিব জাফর আহমেদ জয় বলেন, ‘তারা দলীয় প্রতীকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।’

তবে চেয়ারম্যান পদে ১ লাখ টাকা জামানত নির্ধারণ সঠিক হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে আগে জামানত ছিল ১০ হাজার টাকা। তাই জামানতের টাকা আগের অবস্থায় নেওয়ার জন্য শিগগির রিট করা হবে।’

ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান শেখ ছালাউদ্দিন ছালু বলেন, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে উপজেলা নির্বাচনে যাবেন না। তবে দলের কোনো প্রার্থী চাইলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন, কোনো বাধা থাকবে না।’

দলীয় ‘একতারা’ প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। অন্যদিকে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) নির্বাচনের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

এদিকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বাংলাদেশ কংগ্রেস। ডাব প্রতীকের দলটির চেয়ারম্যান কাজী রেজাউল হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘আমরা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাব।’

তবে ১৪ দলের শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া জানিয়েছেন, তিনি এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেননি।

দলীয় প্রতীক ছাড়া অংশ নেবে গণতন্ত্রী পার্টি। দলটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীক ছাড়াই হওয়া উচিত।’

ওয়ার্কার্স পার্টি উপজেলা নির্বাচন করবে দলীয় হাতুড়ি প্রতীক নিয়ে। একই অবস্থানে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলও (জাসদ)।

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবিসহ পাঁচ দলের সমন্বয়ে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোট। জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘পরিবেশ না থাকায় আমরা উপজেলা নির্বাচনেও অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরাম। দলটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি না।’

দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে যেতে চায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। একই পথে হাঁটছে তরীকত ফেডারেশন। দলটির চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, ‘আমাদের কেউ নির্বাচনে আগ্রহী হলে সুযোগ দেওয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর এমন অবস্থানের বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নূরুল আমিন ব্যাপারী বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি সংসদ নির্বাচনে যেভাবে দলগুলোর অবস্থান ছিল উপজেলা নির্বাচনেও সে রকমই আছে। অর্থাৎ যারা সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল তারা এবারের নির্বাচনেও শরিক হচ্ছে। তবে নির্দলীয় নির্বাচন করতে আওয়ামী লীগ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এতে হয়তো প্রার্থী কিছুটা বাড়তে পারে। বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে অনেকেই স্বতন্ত্র হয়ে অংশ নিতে পারেন।’


নির্বাচন কমিশন   ইসি   বিএনপি   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির চোখে যারা সন্দেহভাজন

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ২৭ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি এখন দলে এবং তাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করছে এমন অনেক নেতাকেই বিশ্বাস করে না। বিএনপির নীতিনির্ধারকদের কাছে এ রকম তথ্য উপাত্ত আছে যে, তারা আসলে সরকারের সঙ্গে গোপনে আঁতাত করেছে এবং বিএনপির সঙ্গে থেকে আন্দোলনকে দুর্বল করেছে বা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এই সমস্ত নেতাদের কেউ কেউ বিএনপির দলের আবার কেউ কেউ দলের বাইরে। 

লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বিএনপির চোখে যারা সন্দেহভাজন এরকম কয়েকজন নেতার নাম উচ্চারণ করেছেন। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। গোপন কোন কথা তাদের সাথে আছে আদান প্রদান না করার জন্য এবং দলের পরিকল্পনা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা না করার জন্য স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকে পরামর্শ দিয়েছেন। গতকালের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সমস্ত নেতাদের ব্যাপারে সতর্ক করা হয়। 

বিএনপির চোখে যারা সন্দেহভাজন নেতা তাদের মধ্যে রয়েছেন;

মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন: মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিনকে বিএনপি সন্দেহজনক নেতা হিসেবে মনে করে। তার গতিবিধি, আচার-আচরণ এবং কথাবার্তা সবকিছুই সন্দেহজনক। তিনি বারবার মত পাল্টাচ্ছেন এবং একেক বার একেক রকম কথা বলছেন। তার সম্বন্ধে ধারণা হল যে, সরকারের কোন এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যই হয়তো মেজর হাফিজকে আবার মাঠে নামানো হয়েছে এবং সেই কারণে তিনি এখন বড় বড় বক্তৃতা দিচ্ছেন, লম্বা লম্বা কথা বলছেন। 

কর্নেল অলি আহমেদ: কর্নেল অলি আহমেদ বিএনপির তালিকায় আরেকজন সন্দেহভাজন ব্যক্তি। এলডিপির এই নেতা মাঝেমাঝেই বিএনপির ব্যাপারে জ্ঞান দেন এবং বিএনপিকে বিভিন্ন রকম উপদেশ এবং পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু কর্নেল অলি আহমেদের সঙ্গেও গোপনে আওয়ামী লীগের যোগাযোগ আছে এবং আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য তিনি সরকার বিরোধী অবস্থানে রয়েছেন বলে তারেক জিয়া দলের নেতাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন। 

মাহমুদুর রহমান মান্না: একদা মাহমুদুর রহমান মান্না তারেক জিয়ার অত্যন্ত প্রিয়ভাজন ছিলেন। মাহমুদুর রহমান মান্নাকে তিনি বিএনপিতে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বিএনপির সন্দেহভাজনদের তালিকার মধ্যে পড়েছেন। বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন যে, মান্না এখন বিএনপির সঙ্গে প্রকাশ্যে মিশলেও গোপনে গোপনে সরকারের সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে এবং সরকারের অনেক গোপন এজেন্ডা মাহমুদুর রহমান বাস্তবায়ন করছেন বলেও তাদের কাছে তথ্য আছে। মাহমুদুর রহমান মান্নার কিছু কর্মকাণ্ড নিয়ে বিএনপির মধ্যেই এখন মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে।

রেজা কিবরিয়া: একদা বিএনপির ঘনিষ্ঠ নেতা রেজা কিবরিয়াকেও এখন বিএনপি সন্দেহের চোখে দেখছে। তবে রেজা কিবরিয়াকে আওয়ামী লীগের এজেন্ট হিসেবে নয়, বরং অযোগ্য এবং রাজনীতিতে অপরিপক্ক একজন ব্যক্তি হিসেবে মনে করে বিএনপি। এ ধরনের বাচাল এবং অতি কথকদের এখন বিএনপি আর আশেপাশে ভেড়ানোর প্রয়োজন নেই বলে বিএনপির নীতি নির্ধারকরা মনে করছেন। 

আ স ম আব্দুর রব: বিএনপির এক সময় জোটের ঘনিষ্ঠ আ স ম আব্দুর রবকেও এখন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সন্দেহের চোখে দেখছেন। আ স ম আব্দুর রবরাও সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে তাদের কাছে খবর আছে। আর এ সমস্ত সন্দেহভাজন লোকদেরকে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে।


বিএনপি   মেজর হাফিজ উদ্দিন   কর্নেল অলি আহমেদ   মাহমুদুর রহমান মান্না  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

অবশেষে ১৪ দলকে সক্রিয় করার উদ্যোগ নিচ্ছে আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৭ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির ভারত বিরোধী কর্মসূচির পাল্টা হিসেবে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ দলকে আবার নতুন করে সাজানো এবং সক্রিয় করার জন্য দলটির সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। আগামী ঈদের পরপরই ১৪ দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাবে এবং দলটির ভিতর যে মান অভিমান, ক্ষোভ, হতাশা ইত্যাদি দূর করে দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কাজ শুরু করা হবে বলে একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে।

উল্লেখ্য যে, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগেই ১৪ দলের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এই সময় ১৪ দলের মিত্ররা আসন ভাগাভাগি নিয়ে বেশ অসন্তুষ্ট হন। ১৪ দলকে শেষ পর্যন্ত অল্প কিছু আসন দেওয়া হয় এবং অসন্তুষ্ট হয়েই ১৪ দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। তবে ১৪ দলের শরিকদেরকে নৌকা প্রতীকে অল্প কিছু আসন দেওয়া হলেও তাতে তারা যতটা অসন্তুষ্ট বা হতাশ হয়েছেন তার চেয়ে বেশি হতাশ হয়েছেন প্রতিটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। ওই নির্বাচনে ১৪ দলের হেভিওয়েট নেতা হাসানুল হক ইনু, ফজলে হোসেন বাদশাসহ অনেকেই পরাজিত হন। এরপর ১৪ দলের পক্ষ থেকে বার বার আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও আওয়ামী লীগ তাদেরকে এড়িয়ে গেছেন বলেই একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এমনকি নারী সংসদ সদস্য মনোনয়নের সময়েও ১৪ দলকে আমলে নেওয়া হয়নি। ১৪ দলের কোন সদস্য ছাড়াই আওয়ামী লীগ আটচল্লিশটি আসনে নারী সংসদ সদস্য মনোনয়ন দিয়েছে। যারা সবাই তাদের দলীয় প্রার্থী। এরকম বাস্তবতার ১৪ দল নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল।

অন্যদিকে নির্বাচনের পর হতাশগ্রস্ত বিএনপি হতাশা কাটতে নানা রকম উদ্যোগ এবং পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। এর মধ্যে তারা হঠাৎ করেই ভারত বিরোধী মনোভাব চাঙ্গা করেছে। মালদ্বীপের ইন্ডিয়া আউট কর্মসূচির মতো ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে এবং বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর প্রকাশ্যে ভারতীয় চাদর পুড়িয়ে দিয়ে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, এটি জনগণের কাছে এখন সবচেয়ে সমাদৃত দাবি।

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবার ভারত বিরোধিতা, সাম্প্রদায়িকতা এবং উগ্র মৌলবাদের উস্কানি সৃষ্টি হয়েছে। ভারত বিরোধীরা আড়ালে পাকিস্তানপন্থী রাজনীতিবিদরা সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে। এরকম বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার বিষয়টি সামনে এনেছে বলে জানা গেছে। ২০০১ সালে নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং ১৪ দল গঠন করে। এটি একটি আদর্শিক জোট। এখন যখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, নতুন করে ভারত বিরোধিতা শুরু হয়েছে তখন আওয়ামী লীগ আবার নতুন করে আবার ১৪ দলকে সক্রিয় করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেছেন যে, ১৪ দলের মধ্যে মান অভিমান থাকবে, নানা রকম ভুল বোঝাবুঝি থাকবে। কিন্তু আদর্শের প্রশ্নে আমরা এক। এখন যখন ভারতীয় পণ্য বর্জনের নামে নতুন করে অরাজকতার সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তখন অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। আর এ কারণেই ১৪ দল আবার সক্রিয় হচ্ছে এবং ঈদের পরই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী এই জোটকে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় দেখা যাবে বলে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন।

১৪ দল   আওয়ামী লীগ   ভারতীয় পণ্য বর্জন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সরকার বিরোধী হয়েও দল বাঁচাতে পারবেন জিএম কাদের?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৭ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

জিএম কাদের এখন ঘরে বাইরে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে তার দলের ভরাডুবি হয়েছে। গত নির্বাচনের চেয়ে তিনি উল্লেখযোগ্য কম আসন পেয়েছেন। দলের ভিতরে তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জাতীয় পার্টি একটা বড় ধরণের ভাঙনের মুখে পড়েছে। রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির একটি বড় অংশ আলাদা জাতীয় পার্টি গঠন করছে। এত কিছুর পর দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা জিএম কাদের এখন একটা বড় সমস্যা। কিন্তু তারপরও জিএম কাদের তাদের সরকার বিরোধিতাকে আঁকড়ে ধরে থাকতে চাইছেন। 

জি এম কাদের মনে করছেন যে, সরকারের বিরোধিতা করলে দলের জনপ্রিয়তা হয়তো বাড়তে পারে। আর তাতে দল টিকে থাকতে পারে। এ কারণে তিনি যেমন গোপনে সুশীল সমাজের সাথে এখনও সম্পর্ক রক্ষা করে চলছেন, তেমনি বিএনপির সাথে ঐক্যের বিষয়টি উড়িয়ে দেননি। আজ তিনি বিতর্কিত দৈনিক এবং সুশীল সমাজের মুখপত্র হিসেবে পরিচিত দৈনিক ‘প্রথম আলো’তে নিজের নামে একটি কলাম লিখেছেন। ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আসলে কেমন হল’ সে নিয়ে লিখিত কলমে জিএম কাদের লিখেছেন আশঙ্কাজনক উপলব্ধি। ফলে ৪২ শতাংশ ভোট পড়ার দাবি বাস্তবসম্মত মনে করি। বরং ৫ থেকে ১০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি হয়ে ভোট দিয়েছেন। কিছু কিছু এলাকায় ২০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে অনেক প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণা। 

স্বভাবতই প্রশ্ন আসে কী ভাবে ৪২ শতাংশ ভোট গণনায় এলো। এটা সম্ভব, যদি বেশ কিছু ব্যালট পেপারে অবৈধভাবে সিল মেরে প্রার্থীদের পক্ষে দেখানো হয় অথবা ব্যালট গণনা বাদেই নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নিজেদের পছন্দমতো ফলাফল তৈরি ও ঘোষণা করেন।

বাংলাদেশের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে ৭ জানুয়ারি। এই নির্বাচনের বিভিন্ন ত্রুটি বিচ্যুতি নিয়ে অনেকেই কথা বলেছেন। তবে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে সেই প্রতিবেদনে কেউ ভোটের হার নিয়ে প্রশ্ন তুলেন নি। ভোটের হার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে একমাত্র টিআইবি। তার তথাকথিত গবেষণা জরিপে। আর এতদিন পর জিএম কাদের এই ভোটের হার নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করলেন। তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে যে জিএম কাদেরের এই বক্তব্য স্ববিরোধী। কারণ জিএম কাদের নিজে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন এবং সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে অভিষিক্ত হচ্ছে। নির্বাচন যদি কারচুপি পূর্ণ হয়, ত্রুটিপূর্ণ হয়, তাহলে একজন সৎ দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তার সংসদে বসার কথা না। ওই নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করা উচিত। এই নির্বাচন নিয়ে তার কথা বলা উচিত। কিন্তু তিনি জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে বসছেন। মন্ত্রী পদ মর্যাদার সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন। আবার নির্বাচনে ৫ থেকে ১০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। এটি কি তার স্ববিরোধিতার নয়? 

বিভিন্ন মহল মনে করেন যে, এখন অস্তিত্বের সঙ্কটে ভুগতে থাকা জিএম কাদের মনে করছেন, যদি তিনি বিএনপির সঙ্গে জোট করেন এবং তীব্র সরকার বিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তাহলে জনগণ তার প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো একটি রাজনৈতিক দলের যদি সংগঠন না থাকে, রাজনৈতিক নেতা যদি জনগণের কাছে বিশ্বস্ত এবং আস্থাভাজন না হন তাহলে সে সংগঠন গড়ে উঠতে পারে না। জিএম কাদের একদিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন অন্যদিকে নির্বাচনের সমালোচনা করছেন। একদিকে সংসদে যাচ্ছেন অন্যদিকে ভোট কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন। একদিকে তিনি সরকারি সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন অন্যদিকে তিনি সরকারকে গালি দিচ্ছেন। এই স্ব বিরোধিতার কারণেই জাতীয় পার্টি আজ অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়েছে এবং এই জাতীয় পার্টি তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।

সরকার বিরোধী   জিএম কাদের   জাতীয় পার্টি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভারতকে চাপে রাখার কৌশলে বিএনপি

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৭ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

মুখে ভারত বন্দনা আর ভিতরে ভিতরে ভারত বিরোধিতাকে উস্কে দেওয়া- বিএনপির এই পুরনো কৌশল আবার নতুন করে চালু করতে যাচ্ছে। ভারতকে চাপে রাখার কৌশল গ্রহণ করেছে দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি। বিএনপি গতকাল তাদের দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক করেছে। এই বৈঠকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং এই আলোচনা থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে, তা হল বিএনপি এখন ভারতকে চাপে রাখতে চায়। 

গত দুটি নির্বাচনের আগে বিএনপির পক্ষ থেকে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল এবং ভারতের আনুকূল্য প্রার্থনা করা হয়েছিল। ভারতের প্রতি তারা নিঃশর্ত সমর্থন জানিয়েছিল এবং তারা ভারতের সমর্থন সহানুভূতি চেয়েছিল। কিন্তু ভারত বিএনপির কয়েকটি বিষয়ে সাচ্চা তাদের অবস্থান জানিয়ে দেন।

প্রথমত, ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতের সঙ্গে তারা কোন সম্পর্ক রাখতে পারবে না। এই শর্তটি বিএনপি মানেনি। 

দ্বিতীয়ত, বিএনপিকে বলা হয়েছিল যে, বিএনপিতে যেন তারেক জিয়ার নেতৃত্ব পরিবর্তন করা হয়। যেহেতু তারেক জিয়া দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এবং সরাসরি দেশে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না, কাজেই তার এখন নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করা উচিত্ নয়। 

তৃতীয়ত, ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, বিএনপিতে যারা জঙ্গিবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতার দোষে দুষ্ট, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাদেরকে দলে রাখা যাবে না। বিএনপি এই তিনটি বিষয়ের একটিও প্রতিপালন করেনি। যার ফলে ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি দূরত্ব তৈরি হয়। অবশ্য ভারতের সঙ্গে বিএনপির অবিশ্বস্ততা এবং দূরত্ব তৈরি হয় বহু আগে থেকেই। ২০০১ সালে ভারতের সমর্থন নিয়ে বিএনপি যখন ক্ষমতায় এসেছিল সেইবার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং জঙ্গিদের করিডর হিসাবে ব্যবহার করতে দেয় বিএনপি এবং ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার পর সরাসরি স্পষ্ট হয় যে, বিএনপি আসলে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় ভারতকে অস্থিতিশীল করতে চায়। এরপর থেকেই ভারতের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব তৈরি হয়। কিন্তু বিএনপি বিভিন্ন সময় প্রকাশ্যে ভারতের প্রতি আনুগত্য দেখানো এবং ভারত যা দাবি করে সবকিছু দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করেছিল। এখন বিএনপি সেই অবস্থান থেকে সরে আসছে। বরং ভারতকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে তারা ভারতীয় জাতীয় পণ্য বর্জনকে নিরাপদ দূরত্ব থেকে সমর্থন দিচ্ছেন। 

বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী ভারতীয় পণ্য বর্জনে অংশগ্রহণ করছেন। কিন্তু বিএনপি নেতারা বলছেন যে, এটি তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত নয়, দলীয় কর্মসূচি নয়। আবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বলেছেন যে, রুহুল কবির রিজভী নিজেই বলেছেন যে, এটি তিনি ব্যক্তিগতভাবে করছেন। অর্থাৎ এই কর্মসূচির ব্যাপারে বিএনপির মৃদু, মৌন এবং পরোক্ষ সমর্থন রয়েছে। ফলে বিএনপি চায় যে, ভারত বুঝুক যে, তারা বিএনপির সঙ্গে যদি একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক না করে তাহলে বাংলাদেশে ভারত বিরোধী রাজনীতি আবার উস্কে দেওয়ার ক্ষমতা বিএনপির কাছে। ভারত যেন বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ দুটি দলের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে সম্পর্ক রাখে সেই বার্তাটি দেওয়ার জন্যই ভারতকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে বিএনপি। সামনের দিনগুলোতে বিএনপি আরও কিছু ভারতবিরোধী কর্মসূচিকে ইন্ধন এবং সমর্থন জানাবে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। 

বিএনপি   ভারত বিরোধী   ভারতীয় পণ্য বর্জন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন