নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৩ জুন, ২০২১
স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি জামায়াতে ইসলাম নতুনভাবে সংঘটিত হচ্ছে এবং এখন তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে সংঘটিত হচ্ছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। হেফাজত কোণঠাসা হওয়ার প্রেক্ষিতে জামায়াত এখন হেফাজতের অনেক নেতাকে তাদের দলে ফেরানোর জন্য চেষ্টা করছে। হেফাজতের মাদ্রাসাভিত্তিক সুদৃঢ় সংগঠন রয়েছে। আর এই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে কাজ করছে হেফাজত। করোনার কারণে দেশের মাদ্রাসাগুলো বন্ধ রয়েছে। মাদ্রাসাগুলোতে জামায়াতে ইসলামের কর্মী এবং নেতারা গিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের তালিকা সংগ্রহ করছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই তালিকার ভিত্তিতে তারা ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, তাদেরকে নানা রকম উপঢৌকন এবং আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে।
বিভিন্ন এলাকায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের তারা জরো করছে এবং তাদের সাথে গোপন বৈঠক করছে। সেখানে তারা তথাকথিত ইসলামী দাওয়াতের নামে তাদেরকে সরকারবিরোধী বিভিন্ন প্রচারণায় উস্কে দিচ্ছে। হেফাজতের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার মামুনুল হকসহ বিভিন্ন হেফাজত নেতার বিরুদ্ধে সরকারের এ্যাকশনের বিষয়ে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরকে তারা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে। জানা গেছে যে হেফাজত এখন সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে যাওয়া এবং হেফাজতের অধিকাংশ নেতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির মধ্যে থাকার কারণে তাদের কার্যক্রম এখন স্থিমিত হয়ে গেছে। তাছাড়া হেফাজতের যারা নেতৃত্বে আছে তাদের মধ্যে ওই রকম রাজনৈতিক চাতুর্য না থাকার কারণে এর সুযোগ নিচ্ছে জামায়াত।
একাধিক সূত্র বলছে, জামায়াতের নেতৃবৃন্দ মনে করছে যে, তাদের সংগঠনের নতুন পাইপলাইন তৈরি করা ক্ষেত্রে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরকে তারা ভালোমতো ব্যাবহার করতে পারে। বাংলাদেশে ইসলামপছন্দ রাজনীতির মধ্যে হেফাজত এবং জামায়াতের মধ্যে একটা বিরোধ ছিল। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুটি ভাগ রয়েছে। একটি পক্ষ জামায়াতের বিরুদ্ধ পক্ষ। তারা জামায়াতকে সঠিক ইসলামী দল মনে করে না। আর যেহেতু হেফাজতের নেতৃত্বে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সংগঠিত ছিল কাজেই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে জায়গা পাচ্ছিল না জামায়াতে ইসলাম। এখন যখন হেফাজত কোণঠাসা, মাদ্রাসাগুলো বন্ধ এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অসংগঠিত সেই সময় জামায়াত এই সমস্ত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে তাদের রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনা সঞ্চালন করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তারা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরকে জামায়াতের রাজনীতি সম্বন্ধে নানা রকম কোনো কথাবার্তা বলছেন। এছাড়াও জামায়াতে ইসলাম বিভিন্ন আপাত নিরপেক্ষ সংগঠনের আড়ালে জামায়াতপন্থীদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র-যুব অধিকার পরিষদ বলে সাবেক ডাকসুর ভিপি নুরের নেতৃত্বে যে সংগঠনটি হয়েছে সেই সংগঠনটির নিয়ন্ত্রণও জামায়াত নিয়ে নিয়েছে। এছাড়াও জামায়াত একটি সুশীল সমাজের একটি অংশকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছে। যেহেতু জামায়াতের মূল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বীকৃত নয় এবং প্রায় বন্ধ সেই জন্য জামায়াত এখন ভিন্ন নামে বিভিন্ন সংগঠনের আদলে কাজ করছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল বলছে, তিনটি উপায়ে জামায়াত এখন কাজ করছে। প্রথমত তারা হেফাজতের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া নেতাকর্মীদেরকে সংগঠিত করছে। দ্বিতীয়ত, তারা মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন করার জন্য তৎপরতা গ্রহণ করছে। তৃতীয়ত, তারা বিভিন্ন বেনামী সংগঠনের মাধ্যমে জামায়াতের পক্ষে প্রচারণার জন্য উদ্বুদ্ধ করছে। আর এই কর্মকাণ্ডগুলো করার মাধ্যমে জামায়াত নতুনভাবে সংঘটিত হচ্ছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও জামায়াতপন্থীদের তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা এখন বিভিন্ন বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করছেন এবং যে অবস্থানটা সামনের দিনগুলোতে কোন ভয়ঙ্কর পরিকল্পনার অংশ বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।