নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৩ জুন, ২০২১
আজ আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা মোহাম্মদ নাসিমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। গত বছর এই দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গিয়েছিলেন। মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর এক বছর পর রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা শূন্যতা দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে এখন যখন রাজনৈতিক অঙ্গনে কর্মীদের কাছে একজন সত্যিকারের নেতার অভাব প্রকট, তখন বারবার করে মোহাম্মদ নাসিমের কথা মনে করছেন দলের কর্মীরা। মোহাম্মদ নাসিম এমন একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন যিনি সবসময় কর্মীর পরিবেষ্টিত থাকতে পছন্দ করতেন। তার বাসায়, দপ্তরে কিংবা রাজনৈতিক সমস্ত কর্মকাণ্ডে কর্মীদের ঘিরেই তিনি জাগ্রত থাকতেন। অসুস্থতা, রোগ-শোক ইত্যাদি ভুলে যেতেন তিনি কর্মীদের সান্নিধ্যে।
মোহাম্মদ নাসিমের অনেকগুলো অবদান রয়েছে, অনেক কীর্তি রয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় কীর্তি সম্ভবত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ রাখা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে তিনি যতটা না সক্রিয় ছিল তার চেয়ে বেশি সক্রিয় ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনালব্ধ রাজনৈতিক জোট ১৪ দলীয় জোটকে সক্রিয় রাখার ক্ষেত্রে। মোহাম্মদ নাসিম ১৪ দলের সমন্বয়কের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই ১৪ দলকে নানা ইস্যুতে সক্রিয় রাখার চেষ্টা করেছিলেন। তাকে ঘিরেই ১৪ দল একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছিল। মোহাম্মদ নাসিমের উদ্যোগে ১৪ দল বিভিন্ন সময়ে কর্মসূচির মধ্যে থাকত, নানারকম বৈঠক, আলোচনা এবং ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ১৪ দলের নেতাদেরকে রীতিমতো চাঙ্গা রেখেছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর এক বছর পর সবচেয়ে বড় শূন্যতা অনুভূত হচ্ছে ১৪ দলের ক্ষেত্রে। ১৪ দল গত এক বছরে শুধু নিষ্ক্রিয়ই হয়নি, ১৪ দল আছে কি নেই সেটি এখন অনুভূত হচ্ছে না।
মোহাম্মদ নাসিমের এই শূন্যতা কখনো পূরণ হবার নয়। শুধু ১৪ দলের সমন্বয়কারী হিসেবে নয়, আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে ছিল তখনও আওয়ামী লীগের যে রাজনৈতিক জোট সেই জোটকে ঐক্যবদ্ধ রাখার ক্ষেত্রেও মোহাম্মদ নাসিম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। বিশেষ করে সেইসময় জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের চিফ হুইপ থাকা অবস্থায় তিনি জাতীয় সংসদের সমস্ত বিরোধী দলগুলোকে একাট্টা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। জাতীয় সংসদে শুধু নয়, রাজপথে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো যখন বিভক্ত থাকে তখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। আর তখনই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এবং মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি শক্তিশালী হয়। এই রাজনৈতিক উপলব্ধিটা মোহাম্মদ নাসিমের অত্যন্ত তীব্র ছিল। আর এ কারণেই তিনি সবসময় আওয়ামী লীগের একক শক্তির উপর নির্ভরশীল না থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করতেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এই চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন।
অনেকেই মনে করেন মোহাম্মদ নাসিম ছিল জন্যই ১৪ দল সক্রিয় ছিল, ১৪ দলের নেতাদের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির দুঃখ বেদনা ভুলে যেতে পারত। কিন্তু মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর এখন ১৪ দলের শরিক দলগুলো অপাংক্তেয়। তারা না আছে সরকারে, না আছে বিরোধী দলে। তাদের খবর নিচ্ছে না কেউ। এরকম একটি পরিস্থিতিতে একটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে ঐক্যের রাজনীতিতে মোহাম্মদ নাসিমের কথা বারবার অনুভূত হয়। মৃত্যুর এক বছর পরও মোহাম্মদ নাসিম মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তির একজন অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে বেঁচে আছেন এবং বেঁচে থাকবেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বিএনপি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শামা ওবায়েদ সারাহ কুক
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনাটি জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্য স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এটি আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যন্ত যে পরিবারতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় যে জমিদারি প্রথা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই উদ্যোগ তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।