নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৩ জুন, ২০২১
আওয়ামী লীগ তার প্রতিষ্ঠার ৭২ বছর পার করলো। আওয়ামী লীগ একটি সুসময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। টানা ১২ বছরের বেশি সময় ধরে দলটি দেশ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে এবং এক রকম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষহীন। কিন্তু এরকম সুখী সময় আওয়ামী লীগের সবসময় ছিল না। আওয়ামী লীগ অনেক কঠিন এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পার হয়ে আজকের জায়গায় এসেছে। বিশেষ করে স্বাধীনতার পর পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট থেকে আওয়ামী লীগকে এক অস্তিত্বের পরীক্ষা দিতে হয়েছে এবং সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আজকে আওয়ামী লীগ এই জায়গায় এসেছে। আওয়ামী লীগ বিভিন্ন সময়ে দুঃসময় পার করে এসেছে। সেই দুঃসময়ে যারা আওয়ামী লীগের কান্ডারী ছিলেন তাদের কয়েকজনকে নিয়ে এই প্রতিবেদন।
জোহরা তাজউদ্দীন: পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্টের পর আওয়ামী লীগ একরকম বিলুপ্তই হয়ে গিয়েছিল। নেতাকর্মীরা সব জেলে। কিছু বিশ্বাসঘাতক খুনি মোশতাকের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল। আর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল একটাই যে, আওয়ামী লীগের শেকড় উপড়ে ফেলা। কিন্তু আওয়ামী লীগের শেকড় এত গভীরে প্রোথিত যে তার শেকড় উপড়ে ফেলা যায় না। এই সংকটময় সময়ে জোহরা তাজউদ্দীন আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠিত করার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। এই দুঃসময়ে তিনি আওয়ামী লীগের নিভু নিভু প্রদীপকে নিভতে দেননি।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী: পঁচাত্তর পরবর্তী আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে কান্ডারী হয়ে এসেছিলেন জাতীয় সংসদের বর্তমান উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং আওয়ামী লীগ সভাপতিকে দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। আর সে কারণেই আওয়ামী লীগ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সবসময় শ্রদ্ধাচিত্তে এখনো স্মরণ করেন।
জিল্লুর রহমান: জিল্লুর রহমানের ভূমিকা পঁচাত্তর পরবর্তীতে যেমন কান্ডারীর ছিল তেমনি ওয়ান-ইলেভেনের সময়ও ছিল। বিভিন্ন সংকটে বিশ্বস্ততা এবং আদর্শের প্রতি অবিচল থাকার যে উদাহরণ জিল্লুর রহমান দেখিয়েছিলেন তা শুধু আওয়ামী লীগের রাজনীতির নয় সারা দেশের রাজনীতির জন্য একটি অনুকরণীয় উদাহরণ।
মোহাম্মদ নাসিম: পঁচাত্তর পরবর্তী আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যারা আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। বিশেষ করে ৯১ নির্বাচনে বিরোধী দলের চিফ হুইপ থাকা অবস্থায় এবং নির্বাচনের পর সরকারে তিনি অন্যতম ক্রিয়াশীল ব্যক্তি ছিলেন। আওয়ামী লীগের নব জাগরণে তিনি শেখ হাসিনার একজন বিশ্বস্ত সৈনিক হিসেবে কাজ করেছেন।
মোহাম্মদ আছাদুজ্জামান: পঁচাত্তর পরবর্তী আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন মোহাম্মদ আছাদুজ্জামান। তিনি ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং আওয়ামী লীগকে মূল ধারার রাজনীতিতে ফিরে আনার ক্ষেত্রে একজন কান্ডারী হিসেবে চিহ্নিত।
ওবায়দুল কাদের: ওবায়দুল কাদের পঁচাত্তর পরবর্তীতে ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। জেল-জুলুম হুলিয়া মাথায় নিয়ে ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগকে রীতিমতো পুনর্জন্ম দিয়েছিলেন।
বেগম মতিয়া চৌধুরী: বেগম মতিয়া চৌধুরী ওয়ান-ইলেভেনের সময় পাদপ্রদীপে আসেন। সততা, নিষ্ঠা, বিশ্বস্ততা এবং নেত্রীর প্রতি একান্ত আনুগত্যের কারণে তিনি আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের একজন কান্ডারী হিসেবে বিবেচিত হবে।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম: সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও ওয়ান-ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগের হাল ধরেছিলেন। জিল্লুর রহমানের সঙ্গে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করা এবং আওয়ামী লীগের ভাঙ্গন ঠেকানোর ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন: প্রয়াত অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ওয়ান-ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। বিশেষ করে শেখ হাসিনার প্রতি বিশ্বস্ততা, দলের ঐক্য এবং শেখ হাসিনার মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেছিলেন।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের তৃণমূল এবং আরও অনেক নেতা আছেন তারা দুঃসময়ের জ্বলে উঠেছেন এবং আওয়ামী লীগকে আজকের অবস্থানে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে যাদের কিছু না কিছু হলেও অবদান রয়েছে।
মন্তব্য করুন
সদ্যই রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার, বাংলাদেশ ক্রিকেটের রত্ন সাকিব আল হাসান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নমিনেশন নিয়ে হয়েছেন মাগুরা-১ আসনের এমপি। তবে এরই মাঝে ভিন্ন এক সমালোচনার জন্ম নিয়েছে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে।
গুঞ্জন উঠেছে, দ্বাদশ নির্বাচনের পূর্বে ‘কিংস পার্টি’ খ্যাত বিএনএমে যোগ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমে এমন একটি ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। সাবিকের এমন কাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাকিব আওয়ামী লীগের টিকিটে মাগুরা থেকে নির্বাচন করে জয় লাভ করেছে। এর আগে সে কোনো দল করেছে কি না সেটা আওয়ামী লীগের কাছে বিবেচ্য নয়।
কাদের আরও বলেন, নমিনেশন চাওয়ার আগে সাকিব আমাদের পার্টির কেউ ছিল না। নমিনেশন যখন নেয় তাকে প্রাইমারি সদস্য পদ নিতে হয়। সে শর্ত পূরণ করা দরকার সেটা সে করেছে।
তিনি বলেন, সরকারি দল কিংস পার্টি করতে যাবে কেন? নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতিতে অনেক ফুল ফোটে। কোনটা কিংস পার্টি, কোনটা প্রজা পার্টি এটা সম্পর্কে আমার জানা নেই।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমাদের গণতন্ত্র ঠিক আছে। আমাদের নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন ছাড়া সরকারে কেউ ক্ষমতা বসাতে পারবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনিসুল ইসলামসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি বাংলাদেশের নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মেজর হাফিজ সাকিব আল হাসান কিংস পার্টি ড. মঈন খান বিএনপি
মন্তব্য করুন
মো. সিদ্দিকুর রহমান আওয়ামী লীগ বিপ্লব বড়ুয়া সুজিত রায় নন্দী
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার জন্য নতুন করে আবেদন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার ভাই শামীম ইস্কান্দারের করা এই আবেদন এখন আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন যে, সচিব তাকে ফাইলটি পাঠিয়েছেন। এটি তিনি দেখছেন। আগামীকাল তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। আইনমন্ত্রী এও বলেছেন যে, এ ব্যাপারে পূর্বের সিদ্ধান্ত থেকে তিনি খুব একটা সরে আসবেন না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে কি ধোঁকা দিয়েছে—এরকম একটি প্রশ্ন এখন বিএনপির মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। বিএনপি নেতারা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনায় এই প্রসঙ্গটি বারবার আনছেন। বিএনপির একাধিক নেতা মনে করে, বিএনপি যে আগ্রাসী অবস্থান গ্রহণ করেছিল, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিএনপি কর্মীদের মধ্যে যে তেজি ভাব এসেছিল, তার প্রধান কারণ ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব এবং আগ্রহ। তাছাড়া বিভিন্ন সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা কূটনীতিকরা বিএনপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যে ভাষায় যে ভাবে কথা বলেছেন তাতে বিএনপির নেতাদের মধ্যে স্থির বিশ্বাস জন্মগ্রহণ করেছিল যে, তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে চায় না। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম এজেন্ডা। আর এ কারণেই বিএনপি নেতারা এই বক্তব্যটিকে তাদের কর্মীদের কাছে সঞ্চারিত করেছিল এবং কর্মীরা উৎসাহিত হয়েছিল।
টানা ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে। ১৬ বছরে পা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করা আওয়ামী লীগ। টানা ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্ষমতার কেন্দ্রে একটা ভারসাম্য লক্ষ্য করা যায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীদেরকে বিভিন্ন সময় পরিবর্তন করে একেক মেয়াদে একেক জনকে মন্ত্রী করেন এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন করে নেতাদের যেমন যোগ্যতা পরিমাপ করেন, ঠিক তেমনি তাদেরকে ক্ষমতাবান করেন।