নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ২১ জুলাই, ২০২১
পেগাসাস হলো এক ধরণের আধুনিক প্রযুক্তি, যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে অন্যের ফোনে আড়িপাতা যায়। ইসরায়েলের একটি প্রতিষ্ঠান এই স্পাইওয়্যার প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেশে তা প্রকাশ্যে এবং গোপনে বিক্রি করছে। এই পেগাসাস ব্যবহার করে আরেকজনের ফোনের সব তথ্য হাতিয়ে নেওয়া যায়, ওই ফোনের ইমেইল, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার এবং অন্যান্য সমস্ত যাবতীয় তথ্য, ফোন নাম্বার, কথোপকথনের বিবরণ, মেসেজের বিবরণ সংগ্রহ করা যায়। এটি একটি অত্যাধুনিক যন্ত্র যার মাধ্যমে গোপনীয়তার সবকিছু উপড়ে ফেলা হয় এবং যেটি বাকস্বাধীনতা এবং অবাধ তথ্যপ্রবাহের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এমেনেস্ট ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতা একযোগে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে যে বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশে এই পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে।
পেগাসাসের মতই বিএনপিতে কিছু ব্যক্তি আছে যারা বিএনপির অন্যান্য নেতাদের ভেতরে আড়ি পেতে থাকেন, তাদের ভেতরের খবরগুলো সংগ্রহ করেন, তারা প্রকাশ্যে কি বলছেন গোপনে কি আলোচনা করছে দুটোর পার্থক্য বের করেন। তারা কার সাথে যোগাযোগ করছেন এবং কোথা থেকে অর্থ পাচ্ছেন ইত্যাদি তথ্য খুঁজে বের করেন। এই সমস্ত বিএনপির ছোট এবং মাঝারি সারির নেতারা অন্য নেতাদের সঙ্গে মিশে তথ্য আদায় করেন। এদেরকে এখন নাম দেওয়া হয়েছে তারেকের পেগাসাস। এরা তারেকের এক ধরনের স্পাই হিসেবে কাজ করেন যারা বিএনপির ভিতর থেকে বিএনপির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের গোপন তথ্য, ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিবরণ ইত্যাদি হাতিয়ে নেন এবং তারেককে পাঠিয়ে দেন। আর এই তথ্যগুলো পেয়েই তারেক আসলে বুঝতে পারেন যে, এই নেতা কতটুকু তার প্রতি অনুগত এই নেতার সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক কি পর্যায় রয়েছে এবং বিএনপির প্রতি তিনি কতটা নিষ্ঠাবান। এরকম কয়েকজন নেতা এখন বিএনপিতে আছেন যারা আসলে তারেকের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন যাদের প্রধান কাজ আন্দোলন করা নয়, সংগ্রাম করা নয়, রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামা নয়। বরং বিএনপির নেতাদের তথ্য সংগ্রহ করা এবং তাদের গোপন খবরগুলো তারেককে পৌঁছে দেওয়া। এরকম নেতাদের মধ্যে কয়েকজন হলেন:
তাবিথ আউয়াল: তাবিথ আউয়াল কোন বড় মাপের নেতা নন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে তার পিতার বদলে তিনি মনোনয়ন পেয়ে আলোচনায় এসেছেন। এমনি একজন ক্রীড়া সংগঠক কিন্তু এখন তিনি তারেকের পেগাসাস হিসেবেই কাজ করছেন। তারেককে বিভিন্ন নেতাদের সম্পর্কে তথ্য দেওয়া, বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে সরকারের গোপন যোগাযোগের তথ্য পৌঁছে দেওয়াই তাবিথ আউয়ালের অন্যতম প্রধান কাজ।
ইশরাক হোসেন: গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ঢাকা দক্ষিণের মনোনয়ন পেয়ে আলোচনায় এসেছিলেন ইশরাক হোসেন। কিন্তু ইশরাক হোসেনের মূল পরিচয় হলো তিনি বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের সাথে সখ্য গড়ে তোলেন, বিভিন্ন নেতাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেন, তাদের সাথে মন খুলে কথা বলেন এবং তাদের মনের খবরটা জানেন। এই মনের খবরটি তিনি লন্ডনে পাচার করে দেন।
রুমিন ফারহানা: রুমিন ফারহানা হঠাৎ গজিয়ে উঠা বিএনপির নেতা। বিএনপির নেতারাও তাকে হাইব্রিড বিএনপি বলে অভিহিত করেন। বিশেষ করে একটি মাত্র সংরক্ষিত আসনে রুমিন ফারহানার মনোনয়ন বিএনপির অনেকেই মেনে নিতে পারেনি। সেই রুমিন ফারহানারও প্রধান কাজ হলো তথ্য সংগ্রহ করে তারেককে পাঠানো। তবে রুমিন ফারহানা শুধু বিএনপি নেতাদের তথ্যই পাঠান না, সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখেন, তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেও তিনি লন্ডনে পাঠান।
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন: ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ডাবল এজেন্ট হিসেবে বিএনপিতে পরিচিত। একদিকে তার সঙ্গে যেমন বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সম্পর্ক রয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার আইনগত দিকগুলো যেমন তিনি দেখাশোনা করেন তেমনি তিনি বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের গোপন তথ্যগুলো সংগ্রহ করে লন্ডনে পাঠিয়ে দেন।
নিপুণ রায়: নিপুণ রায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের পুত্রবধূ। কিন্তু তার নিজস্ব পরিচয় আছে। তারেকপন্থী আগ্রাসী নারী নেতা হিসেবে পরিচিত। তবে তার মূল বিষয়টি হলো তিনি সার্বক্ষণিকভাবে ঢাকা এবং জেলার রাজনৈতিক খবরাখবর বিশেষ করে বিএনপির কোন নেতা কি করছে ইত্যাদি খবর লন্ডনে পৌঁছে দেন মুহূর্তের মধ্যে। আর এইজন্যই তাকে একজন রাজনৈতিক কর্মীর চেয়ে তারেক জিয়ার এজেন্ট হিসেবে মনে করা হয়।
এরকম আরো কিছু স্পাই রয়েছে বিএনপিতে যাদের প্রধান কাজ হলো তারেককে তথ্য সরবরাহ করা।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।