নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ৩১ জুলাই, ২০২১
বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার হয়ে এখন তিন দিনের রিমান্ডে আছেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। মাদক মামলা, বিদেশি মুদ্রার মামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। তার সঙ্গে সেফুদার যোগাযোগের খবরও এখন গণমাধ্যমে চাউর হয়েছে। কিন্তু চাকরিজীবী লীগের বিষয়টি নিয়ে তোলপাড়ের আগে হেলেনা জাহাঙ্গীর ছিলেন আওয়ামী লীগের একজন আলোচিত নেতা। তার জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন বা জয়যাত্রা টেলিভিশনের অফিসে অনেক প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের দেখা গেছে। হেলেনা তাদেরকে নিয়ে অনুষ্ঠানও করেছেন। হেলেনা জাহাঙ্গীরের ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে আওয়ামী লীগের কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে। এদের পৃষ্ঠপোষকতায়ই হেলেনা জাহাঙ্গীর রাতারাতি আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হয়েছেন। এদের কারণেই কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাও হয়েছেন হেলেনা।
হেলেনা জাহাঙ্গীরের দু:সময়ে সেই সমস্ত পৃষ্ঠপোষক এবং যাদের হাত ধরে হেলেনা জাহাঙ্গীর রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করেছিলেন তারা নিশ্চুপ। এমনকি তারা হেলেনা জাহাঙ্গীরের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করছে না। হেলেনা জাহাঙ্গীর যখন আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেন তখন আওয়ামী লীগের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের অনেকের সাথেই তিনি শুধু ছবি তোলেন নাই, অনেকের সাথে তার ঘনিষ্ঠতার কথাও জানা যায়। আওয়ামী লীগের পরিচয় ব্যবহার করেই হেলেনা জাহাঙ্গীর বিভিন্ন টকশোতে যেতেন। এখানে অনেকগুলো প্রশ্ন আওয়ামী লীগের সামনে এসেছে। প্রথমত, মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটিতে হেলেনা জাহাঙ্গীর এলেন কিভাবে। আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি দাবি করেছেন একজন মন্ত্রী সুপারিশে তাকে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো যে, গত বছর শাহেদ কেলেঙ্কারির পর আওয়ামী লীগের উপকমিটির কাউকে নেয়ার ক্ষেত্রে অনেকগুলো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল, অনেক সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল। তারপরও একজন মন্ত্রীর সুপারিশের যাচাই-বাছাই ছাড়াই একজনকে উপ-কমিটিতে নেয়া কতটা যৌক্তিক। প্রশ্ন উঠেছে যে, হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কারা ব্যবসা করতেন এবং সেই সমস্ত ব্যবসায়িক লেনদেনে কার কি অংশীদারিত্ব ছিল সেটি সামনে আসা প্রয়োজন।
লক্ষণীয় যে, শাহেদ, পাপিয়া, জিকে শামীম ইত্যাদি অনুপ্রবেশকারীরা অপকর্ম যখন সামনে আসে তখন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় কিন্তু তাদের যে পৃষ্ঠপোষক এবং তাদের যে গডফাদার তারা অন্তরালে চলে যান এবং গা-ঢাকা দেন। এমন পরিস্থিতি হয় যে, তারা ঐ সমস্ত অপকর্মকারীদেরকে চিনেন এমনটিও অস্বীকার করেন। এখনও সেই ঘটনা ঘটেছে। হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে যারা ঘনিষ্ঠ ছিলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন, মদদ দিয়েছেন তারা এখন আবার নিরাপদ দূরত্বে চলে গেছেন। কিন্তু এর ফলে আওয়ামী লীগের ক্ষতি হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে যারা ঘনিষ্ঠ ছিলেন তাদেরকে খুঁজে বের করার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগে চিরতরে অনুপ্রবেশ বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।