নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ০৪ অগাস্ট, ২০২১
বিএনপি থেকে বিতর্ক যাচ্ছেই না। দুদিন আগে বিএনপির পক্ষ থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণ এর নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। উত্তরা ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান এবং দক্ষিণে আবদুস সালামকে আহ্বায়ক করে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু এই কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপিতে এখন তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রথমত, বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দরা মনে করছেন যে, এই কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সিনিয়র নেতাদের কোন পরামর্শ গ্রহণ হয়নি, তাদের কোন মতামত নেয়া হয়নি। বিশেষ করে মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মধ্যে ঢাকাকেন্দ্রিক নেতারা এই কমিটির ব্যাপারে অন্ধকারে ছিলেন। কিছুদিন ধরে মির্জা আব্বাসের সঙ্গে তারেক জিয়ার মনোমালিন্য চলছিল। মির্জা আব্বাসকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছিল। আবার এখন যখন ঢাকার আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয় তখন মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মত নেতাদেরকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে। এটা বিএনপির সিনিয়র নেতারা মেনে নিতে পারছেন না।
বিএনপির একজন নেতা বলেছেন যে, স্থায়ী কমিটিকে যদি পাশ কাটিয়ে এরকম গায়েবী কমিটি দেওয়া হয় তাহলে দল কাজ করবে কিভাবে। তাহলে দলের কর্মীরা স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কর্মীরা মানবেই বা কিভাবে। আর এ কারণে বিএনপি`র সিনিয়র নেতাদের মধ্যে অভিমান বেড়েছে। দ্বিতীয়ত, বিএনপির মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছে যে যারা দলের ত্যাগী পরীক্ষিত নেতা-কর্মী আছেন তাদেরকে মূল্যায়ন করা হয়নি। এই মূল্যায়ন করার বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপিতে আলোচনা হচ্ছিল। বিশেষ করে ২০১৮ সালের নির্বাচন এবং পরবর্তীতে যে উপনির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেই উপনির্বাচন গুলোতেও যতক্ষণ পর্যন্ত বিএনপি অংশগ্রহণ করেছিল ততক্ষণ পর্যন্ত দলের ত্যাগী পরীক্ষিত নেতাদের অনেকেই মনোনয়ন পাননি।টাকা দিয়ে মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তিদের সংখ্যা ছিল বেশি। এ নিয়ে বিএনপির নেতারা প্রকাশ্য কথা বলেছিলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে লন্ডন থেকে যে কমিটিগুলো আসছিল প্রত্যেকটা কমিটি টাকার বিনিময় হচ্ছে এমন গুঞ্জন বিএনপিতে সব সময় ছিল। এখন যখন ঢাকা মহানগরীর কমিটি ঘোষণা করা হল তখন এই গুঞ্জন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে এবং বিএনপিতে এখন সরাসরি আলোচিত হচ্ছে যে কে কত টাকা দিয়ে এই কমিটিতে ঢুকেছেন। তৃতীয়ত, যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে এবং যারা কমিটিতে আছেন তাদের অনেকেই নেতৃবৃন্দ চেনেও না। আবার অনেকেই অভিযোগ করছেন যে, আমান উল্লাহ আমান হলেন কেরানীগঞ্জের, তিনি দায়িত্ব পেয়েছেন ঢাকা উত্তরের। এভাবে দলকে কেমন করে চলবে সে নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। এই ঢাকা মহানগর কমিটির মাধ্যমে বিএনপিতে দীর্ঘদিনের যে হতাশা, ক্ষোভ পুঞ্জীভূত আকার ধারণ করেছে। বিএনপির মধ্যে একটি বড় অংশ মনে করছে যে সম্মান নিয়ে বিএনপি থেকে সরে পড়াই ভাল। এমনকি তালিকায় স্থায়ী কমিটির অন্তত তিনজন সদস্য রয়েছেন। বিএনপিতে এই লকডাউনের মধ্যেও নেতারা তাদের বাসায় বাসায় বৈঠক করছেন। এসব বৈঠকে ঢাকার কর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন। আর এই সমস্ত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারে যেকোনো সময়। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, বিএনপিতে গণপদত্যাগের ঘটনা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।