নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন প্রায় ৪ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে চায়। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে ফেব্রুয়ারিতে। ডিসেম্বরের পর এই নির্বাচন কমিশন নতুন কোনো নির্বাচনের আয়োজন করতে পারবে না। সেজন্য নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বরের মধ্যে সবগুলো ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। আর এই নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড এবং সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সহ বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচন বিএনপি বর্জন করে আসছে। আর এরকম বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এসব নির্বাচনগুলো উন্মুক্ত করে দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে। যেহেতু এসব নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে না, কাজেই এই নির্বাচনগুলোতে দলীয়ভাবে প্রার্থী দিলে স্থানীয় তৃণমূলের নির্বাচনগুলো উৎসাহহীন এবং আগ্রহহীন হয়ে পড়তে পারে। এরকম বিবেচনা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের মধ্যে এসেছে। আর সে কারণেই এই নির্বাচনগুলো উন্মুক্ত করে দেয়া যায় কিনা এ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুটো দিক নিয়েই কথাবার্তা হচ্ছে। এরমধ্যে ইতিবাচক দিকগুলো হয়েছে যে, দলীয় প্রতীক না দিয়ে উন্মুক্ত করে দিলে তৃণমূল পর্যায়ে প্রকৃত নেতৃত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে এবং একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে ভোটের ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ বাড়াতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। আবার এর নেতিবাচক দিকও রয়েছে। নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিলে এসব নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিতে পারে, তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়তে পারে। কারণ প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একাধিক মনোনয়ন ইচ্ছুক প্রার্থী রয়েছে। আর এরকম উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে শেষ পর্যন্ত এর প্রভাব ইতিবাচক হবে না নেতিবাচক হবে সেটি ভেবে দেখা হচ্ছে। আর এই সমস্ত বিষয় গুলো নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
উল্লেখ্য যে, সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে বিজয়ী করে। এখন নির্বাচন আইন অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন সহ সকল স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করে অংশগ্রহণ করতে হয়। দেখা যাচ্ছে যে, জাতীয় নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি হয় এবং অনেক ক্ষেত্রেই এই বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় না। তাছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন পোস্ট পর্যায়ে মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রেও কতগুলো সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিশেষ করে জেলায়, উপজেলা থেকে যে স্থানীয় মনোনয়ন বোর্ড গঠন হয়, সেই মনোনয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে ব্যাপক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আছে। এমপিরা এবং দলের প্রভাবশালী নেতারা তাদের নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেন, সেখানে যোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তা যাচাই করা হয় না বলেই অনেকে অভিযোগ করেছেন। অতীতেও এ ধরনের প্রবণতা দেখা গেছে। তাছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের দলীয় প্রতীক দেওয়ার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অনুপ্রবেশকারী দলের ভিতর ঢুকে যায় এবং প্রভাব বিস্তার করে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন যে, বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের যে চেয়ারম্যানরা রয়েছেন তাদের একটি বড় অংশ জামায়াত-বিএনপি থেকে আসা, আওয়ামী লীগের টিকিট নেওয়া। কাজেই এই ধারা কিভাবে বন্ধ করা যায় সেটি আওয়ামী লীগের একটি চিন্তার বিষয় রয়েছে। আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি সবকিছু বিচার বিশ্লেষণ বিবেচনা করেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ থাকবে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন হচ্ছে। সামনে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন চলাকালে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে কোনো সম্মেলন, মেয়াদোত্তীর্ণ সম্মেলন, কমিটি গঠন এই প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে’।
মন্ত্রী-এমপির নিকটাত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, নিকটজনদেরকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। যারা ভবিষ্যতে করতে চায় তাদেরও নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। যারা আছে তাদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেকেই এখনো নির্বাচনে আছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রত্যাহারের তারিখ শেষ হোক, তার আগে এ বিষয়ে কীভাবে বলা যাবে।
ওবায়দুল কাদের উপজেলা নির্বাচন সেতুমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।