নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১
সম্প্রতি ক্রমশ দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ছে বিএনপি। নির্বাচনের আগেই বিএনপি ভাঙ্গতে পারে বলে মনে করছেন একাধিক বিএনপি নেতা। তারা বলেন যে, ১৪ বছরের বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে থাকার পরও বিএনপিতে ভাঙ্গন ধরেনি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকজন ব্যক্তি বিএনপি ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র করছেন এমনটি বলছেন বিএনপি নেতারা। বিএনপির নিষ্ক্রিয় কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা এবং বিএনপিভাবাপন্ন কিছু ব্যক্তি যারা বিএনপির সঙ্গে বিভিন্ন ভাবে জড়িত ছিলেন বা আছেন তারাই বিএনপি ভাঙার ষড়যন্ত্র করছে বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন। সেই সাথে নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সিদ্ধান্ত, খালেদা জিয়ার মুক্তি, লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার কর্তৃত্ব সহ একাধিক কারণেই নির্বাচনের আগে বিএনপি ভাঙ্গতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এই কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে,
প্রথমত, বিএনপি এখন নো-ইলেকশন নীতিতে অনড়। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন সহ উপ-নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করেনি বিএনপি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ফলে বিএনপি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন বিএনপির তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী। তাই বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের উপর বিশ্বাস, আস্থা এবং ভরসা চলে গেছে তৃণমূলের। তাই বিএনপির এই নো-ইলেকশন নীতির ফলেই নির্বাচনের আগে বিএনপি ভাঙ্গতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
দ্বিতীয়ত, বিএনপির নেতারা মনে করছেন যে, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, কর্নেল (অব:) অলি আহমেদ, অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী সহ আরও অনেকেই বিএনপিকে ভাঙ্গতে সোচ্চার হয়েছেন। বিএনপিকে আক্রমণ করে বিভিন্ন সময় তাদের দেয়া বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এইসব ব্যক্তিরা বিএনপির অনেকের বিরাগভাজন হলেও বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীর কাছে বেশ প্রশংসিত। তাই এটি বিএনপিতে ভাঙ্গনের অন্যতম কারণ হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তৃতীয়ত, বিএনপির কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতার সাথে গোপনে সরকারের যোগসাজশ আছে বলে মনে করছেন বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মী। তারা মনে করেন যে, যখনই আন্দোলনের কোন ইস্যু সৃষ্টি হয়ে তখন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা তা সুকৌশলে এড়িয়ে যান। তাই তাদের সাথে গোপনে সরকারের যোগসাজশ আছে বলে মনে করেন তারা। বিশেষ করে বিএনপির মহাসচিব সহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে তারা প্রশ্ন তুলেছেন
চতুর্থত, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে চায় দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা নির্বাচন বর্জন করলেও তা তৃণমূলের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই নির্বাচনে আনার রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে বিএনপিতে ভাঙ্গন চায় আওয়ামী লীগ।
পঞ্চমত, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তারেক জিয়ার কর্তৃত্বের ইস্যুতেও বিএনপি ভাঙ্গতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আর এই সব মিলিয়ে বিএনপিতে একধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। যা বিএনপিকে অনিবার্য ভাঙ্গনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।