নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১
বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে একটি তৃতীয় স্রোত তৈরির চেষ্টা দীর্ঘ দিনের। বিভিন্ন সময় এই উদ্যোগ নেয়া হলেও সেই উদ্যোগ অঙ্কুরে বিনষ্ট হয়। বিভিন্ন সময়ে এরকম উদ্যোগ গ্রহণের জন্য চেষ্টা করে সুশীল সমাজ। কিন্তু সেই উদ্যোগ নানা বাস্তবতায় ভেস্তে যায়। আবার নতুন করে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের সুশীল সমাজের একটি বড় অংশ মনে করেন যে, আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে একটি তৃতীয় শক্তির উত্থান দরকার এবং এই তৃতীয় শক্তির মাধ্যমে রাজনীতিতে সুশীল আধিপত্য বিস্তার করা সম্ভব। আর এ লক্ষ্যে আবার নতুন করে কাজ করছে সুশীল সমাজ। অন্যান্য উদ্যোগগুলোর মত এই উদ্যোগেরও ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকলেও সুশীল সমাজ চেষ্টার কোন ত্রুটি করছে না।
গত কিছুদিন ধরেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশের সুশীল সমাজরা নিজেদের মধ্যে একের পর এক বৈঠক করছেন এবং আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরের একটি নতুন মেরুকরণের চেষ্টা করছেন। এর বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায় যে, সুশীল সমাজের অন্যতম প্রতিনিধি বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এখন আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে সমান্তরালভাবে সমালোচনা করছেন। এটি তৃতীয় শক্তির উত্থানের একটি প্রাথমিক লক্ষণ বলে অনেকে মনে করছেন। তাছাড়া সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন হিসেবে পরিচিত সংগঠনটি সারাদেশে রাজনীতিতে মেরুকরণের জন্য কাজ করছে। বদিউল আলম মজুমদার এই সুশাসনের জন্য নাগরিকের প্রধান। তিনি বাংলাদেশের বিরাজনীতিকরণের অন্যতম প্রবক্তা। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন দূতাবাসে আবার সুশীল সমাজরা বৈঠক করছে।
তবে সুশীল সমাজের বিভিন্ন প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বললে তারা এ ধরনের উদ্যোগের কথা অস্বীকার করেছেন। তারা বলছেন যে করোনার প্রকোপের কারণে দীর্ঘদিন দেশের রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ ছিল। দূতাবাসগুলো বাংলাদেশের সর্বশেষ বিভিন্ন ইস্যুতে তথ্য চায়। আর এই সমস্ত তথ্য দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দূতাবাসে চা-চক্র এবং অন্যান্য অনুষ্ঠান হচ্ছে। বাংলাদেশে এখন করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ার কারণে এসব অনুষ্ঠানে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা যোগদান করছেন। আর এর মাধ্যমে বিভিন্ন পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য জানতে চাইছেন। এর বাইরে সুশীল সমাজের কোনো উদ্যোগ নেই।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের সুশীলদের একটি বড় অংশ যারা বিএনপিপন্থী হিসেবে পরিচিত ছিল তারা বিএনপির থেকে নিজেদেরকে নিরাপদ দূরত্বে রাখছেন। আবার অন্যদিকে বিরাজনীতিকরণের উদ্যোক্তা সুশীলদের সঙ্গে বিএনপিপন্থী সুশীলদের একটি সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে। আর সে কারণেই বাংলাদেশের সুশীল সমাজরা এখন এক বিন্দুতে মিলিত হয়েছেন। বাংলাদেশে সুশীলদের শিরোমণি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ তৎপর দেখা যাচ্ছে। তিনি বিভিন্ন দূতাবাসের অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন, যে সমস্ত অনুষ্ঠানে ড. আসিফ নজরুল, বদিউল আলম মজুমদার, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, টিআইবির প্রধান নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, সুলতানা কামাল তাদেরকে দেখা যাচ্ছে। এর ফলে অনেকেই মনে করছেন যে, বাংলাদেশের সুশীল নতুন কোনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছেন কিনা। বিশেষ করে সরকারের বিভিন্ন ইস্যুতে তারা সমালোচনায় আবার মুখর হচ্ছেন। এর ফলে সরকারবিরোধিতার ক্ষেত্রে বিএনপি বা মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলোর চেয়ে সুশীলদেরকে এখন বেশি তৎপর মনে করা হচ্ছে। এর ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে হয়তো একটি নূতন মেরুকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে নেতৃত্ব ছাড়া শুধু সুশীল সমাজরা একত্রিত হলেই রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি হওয়া অসম্ভব। কিন্তু সুশীল সমাজরা একত্রিত হয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে কিছু ষড়যন্ত্র করতে পারেন এমনটি মনে করেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বিএনপি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শামা ওবায়েদ সারাহ কুক
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনাটি জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্য স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এটি আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যন্ত যে পরিবারতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় যে জমিদারি প্রথা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই উদ্যোগ তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।