নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১
বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগের আগে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২১ ধারা অনুযায়ী তার জামিনের মেয়াদ আরও ছয় মাস বৃদ্ধির আনুষ্ঠানিক পরিপত্র জারি করেছে। এর ফলে বেগম খালেদা জিয়া সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রায় দু`বছর মুক্ত থাকার নিশ্চয়তা পেলেন। এবার চতুর্থবারের মতো বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলো। বিএনপি`র বিরুদ্ধে যখন সরকার সরব বিশেষ করে একাত্তরে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে তার ষড়যন্ত্র এবং জিয়ার মৃত্যুর পর তার লাশ আছে কিনা এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্কের মধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলো। রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে, যখন সরকার বিএনপিকে তীব্র সমালোচনা করছে, অন্যদিকে বিএনপি যখন একদফা আন্দোলনের হুশিয়ারি উচ্চারণ করছে তখন খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হল কেন।
সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ভাবে বলা হয়েছে, বিষয়টি সম্পূর্ণ মানবিক। এর সাথে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে এই জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধিতে হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে সরকার ভয় পায়। এজন্য তাকে বিদেশ যেতে দিচ্ছে না। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এটি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করলেও বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা একে মন্দের ভালো বলেছেন। বেগম খালেদা জিয়া পরিবারের একজন সদস্য বলেছেন যে, সরকারের এই পদক্ষেপে তারা হতাশ নন। তবে বেগম জিয়াকে যদি উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়া হতো তাহলে তারা আরো খুশি হতেন।
সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে থেকে জামিনে মুক্ত রাখাটাকে একটি রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে বিবেচনা করছে। এর ফলে আওয়ামী লীগ সরকার দুইভাবে লাভবান হচ্ছে। প্রথমত, বেগম খালেদা জিয়া শর্তযুক্ত জামিনের ফলে তিনি কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। তাকে নিষ্ক্রিয় রাখা হয়েছে। বিএনপি নেতারাই দাবি করেন যে, তিনি একসময় ছিলেন নাজিমুদ্দিন রোডে বন্দি। এখন তিনি গুলশানের ফিরোজা বন্দি। কাজেই বেগম খালেদা জিয়াকে নিষ্ক্রিয় রাখাটা সরকারের একটি বড় কৃতিত্ব। দ্বিতীয়ত, বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রাখলে এটি একটি স্পর্শকাতর রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হতে পারত। এর ফলে সরকার সমালোচিত হতো এবং বিভিন্ন মহল সরকারের পদক্ষেপের নিন্দা জানাত। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যে, এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে বিএনপি একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার সুযোগ পেত। সরকার সেই সুযোগটি বন্ধ করে দিয়েছে।
পাশাপাশি সরকারের একাধিক ব্যক্তি মনে করেন যে, এই মুহূর্তে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিলে সেখানে গিয়েই তিনি ভিন্ন রূপ ধারণ করবেন। বিশেষ করে লন্ডনে পলাতক তাঁর পুত্র খালেদা জিয়ার নামে বিভিন্ন বিবৃতি উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে একটি ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি করবে। আর একারণেই বেগম খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্তি দিয়ে সরকার তার অবস্থাকে সুদৃঢ় করেছে। খালেদা জিয়াই এখন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ট্রাম্পকার্ড। খালেদা জিয়া যতক্ষণ নিষ্ক্রিয় থাকছেন ততক্ষণ বিএনপি আর যাই হোক কোনো আন্দোলন করতে পারবে না। আবার সরকারের কাছ থেকে মুচলেকায় মুক্তি নিয়ে খালেদা জিয়াও সরকার বিরোধী অবস্থানে যেতে পারবেন না। ফলে যতক্ষণ খালেদা জিয়া ৪২১ ধারায় জামিনে থাকবেন ততক্ষণ বিএনপিও আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। যতই তারা কথার যুদ্ধ করুক না কেন, বড় ধরনের আন্দোলন করার মতো বাস্তব পরিস্থিতি তাদের থাকবে না।
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।