নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১
বিএনপির সিরিজ বৈঠকের দ্বিতীয় দফা শুরু হচ্ছে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে। আগামীকাল বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে বিএনপি তিন দিনব্যাপী আরেক দফা বৈঠকের আয়োজন করেছে। এই বৈঠকে অংশ নিবেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা এবং জেলার নেতৃবৃন্দ। এই বৈঠকটি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জন্য অগ্নিপরীক্ষা বলে বিবেচিত করা হচ্ছে। নানা কারণে জেলা পর্যায়ে এবং জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে তোপের মুখে রয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নেতৃত্বের ব্যর্থতা, অনিষ্পন্ন জেলা কমিটিগুলো গঠন করার ক্ষেত্রে অযোগ্যতা এবং দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার ব্যর্থতার অভিযোগ। আগামী তিনদিন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন বলেই বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র মনে করছে। এই বৈঠকে হট সিটে থাকবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির নতুন করে আন্দোলন শুরু করা এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করার অভিপ্রায় থেকে ধারাবাহিক বৈঠক করছে। ধারাবাহিক বৈঠকের প্রথম দফা শেষ হয়েছে গত সপ্তাহে। গত সপ্তাহের ৭, ৮ এবং ৯ তারিখে বিএনপি প্রথম দফার বৈঠক করে এবং এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত গুলো নিয়ে গত শনিবার একটি স্থায়ী কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে বিএনপি ১০ থেকে ১২ দফা কর্মসূচি নির্ধারণ করেছে বলে বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
এখন বিএনপি দ্বিতীয় দফা বৈঠক শুরু করতে যাচ্ছে কাল থেকে। এই বৈঠকের ব্যাপ্তি এবং আলোচ্য সূচী আরও গভীর হবে বলে জানা গেছে। দীর্ঘদিন ধরেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে জেলা কমিটিগুলোর নানারকম ক্ষোভ, বিক্ষোভ এবং অভিমান রয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর থেকেই জেলা কমিটিগুলোর সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সম্পর্ক কম। মহাসচিব হওয়ার পর তিনি খুব কমই বিভিন্ন জেলায় সফর গেছেন। নিজের নির্বাচনী এলাকা ছাড়া অন্য এলাকায় তার সফর খুবই সীমাবদ্ধ। অথচ দলের মহাসচিব হিসেবে তার সকল জেলায় সফর করার কথা ছিল। বিভিন্ন জেলা থেকে তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেয়া হলেও তিনি এসব চিঠির জবাব দেননি। এমনকি সেই সব নির্বাচনী এলাকাগুলোতে সফরও করেননি। এছাড়াও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, অকার্যকর নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকা কমিটিগুলো পুনর্গঠনের জন্য তাকে বারবার অনুরোধ করা হলেও তিনি সেই পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেননি।
অবশ্য বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এ ধরনের কমিটি পুনর্গঠন করার পর ক্ষমতায় নেই। তিনি শুধুমাত্র পোস্ট বক্স মাত্র। লন্ডন থেকে যে সমস্ত নির্দেশনা আসে সেইসব নির্দেশনাগুলো কার্যকর করাই তারা একমাত্র কাজ। কিন্তু তারপরও মহাসচিব হিসেবে জেলাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা, তাদের সুখ-দুঃখ গুলো শোনা এবং তাদের বিরুদ্ধে যখন মামলা হয়রানি হয়, তখন তাদের পাশে থাকা দলের মহাসচিবের একটি অন্যতম দায়িত্ব। কিন্তু এই দায়িত্ব তিনি কতটুকু সুষ্ঠুভাবে পালন করেছেন তা নিয়ে বিএনপির মধ্যে অনেক ক্ষোভ রয়েছে। তাছাড়া বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে অনেক রকমের প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যোগদান এবং এই নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে জোট করা এবং জামায়াতকে ২০টি আসন ছেড়ে দেওয়া, আবার নির্বাচনের পরে সংসদে যাওয়া ইত্যাদি বিষয় নিয়ে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ওপর অত্যন্ত অসন্তুষ্ট। আগামী তিন দিনের বৈঠকে এই বিষয়গুলো নিয়ে তীব্র সমালোচনা হবে।
বিএনপির একজন নির্বাহী কমিটির সদস্য বলেছেন যে, সবকিছু তারেক জিয়ার ওপর চাপিয়ে দিয়ে লাভ নেই। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় থাকেন। কাজেই তাকে আসলে প্রকৃত অবস্থা তারেক জিয়াকে বোঝাতে হবে। বিএনপির বর্তমান অবস্থা কি, নির্বাচনের পরে যাওয়া উচিত কিনা ইত্যাদি সম্পর্কে নির্মোহভাবে লন্ডনে সঠিক তথ্য দেয়া উচিৎ ছিল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। সেই দায়িত্ব তিনি পালন করেননি বলে অনেকে মনে করেন। আর সেই জন্য আগামী তিন দিন বিএনপির বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে তোপের মুখে পড়তে যাচ্ছেন তা মোটামুটি নিশ্চিত।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।