নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, শুধু এটাই আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ নয় এই পদের সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে আছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, তার হাত ধরেই আওয়ামী লীগ বিকশিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এ কারণেই অন্য দলের সাধারণ সম্পাদক বা মহাসচিবের পদের চেয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদটি অনেক আবেগঘন, স্পর্শকাতর এবং গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের অবদান অনস্বীকার্য আর আওয়ামী লীগের অবদানের কথা আলোচনা করলেই এই দলের সাধারণ সম্পাদক পদটি বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়। আওয়ামী লীগের অনেক সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশের রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে হেঁটেছেন, আবার অনেকেই বিচ্যুত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর পর আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ, তিনি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মুজিবনগর সরকার যার নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছিল। আবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আব্দুর রাজ্জাক দল ভেঙেছিলেন, আব্দুল জলিল ওয়ান ইলেভেনের সময় যথাযথ ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেননি। আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদকের পদটি নিয়ে সেই কারণেই সব সময় সার্বক্ষণিক আলোচনা হয়। সাধারণত আওয়ামী লীগের ক্রিয়াশীল নেতৃবৃন্দের মধ্যে জনপ্রিয় নেতাকে সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন দেওয়া হয় আর এই মনোনয়ন প্রক্রিয়াটি করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
পঁচাত্তরের পর আওয়ামী লীগের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া অনেক জনপ্রিয় নেতা ছিলেন এবং অনেকেই সাধারণ সম্পাদকের পদের জন্য আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু জনপ্রিয় হবার পরও তারা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হতে পারেননি। এটি আওয়ামী লীগের অনেকের কাছে এক রহস্যময় প্রশ্ন। তবে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই বলেন যে সভাপতি সাথে সমন্বয় করে সাধারণ সম্পাদককে কাজ করতে হয়, এ কারণে আওয়ামী লীগ সভাপতির পছন্দ সাধারণ সম্পাদক হওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য নানা সমীকরণ মিলাতে হয়। আর এই বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় নেতা আছে যারা সাধারণ সম্পাদক হতে পারেনি। এদের মধ্যে রয়েছেন:
১. আমির হোসেন আমু: পঁচাত্তর-পরবর্তী রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। একসময় সে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সবচেয়ে বিশ্বস্ত রাজনৈতিক নেতা ছিলেন আমির হোসেন আমু, দল পুনর্গঠনে তার ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সহযোগী অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ পুনর্গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। একসময় তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে খুবই জনপ্রিয়তম প্রার্থী ছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হতে পারেননি।
২. তোফায়েল আহমেদ: তোফায়েল আহমেদকে আওয়ামী লীগের অন্যতম জনপ্রিয় নেতা মনে করা হয়। বিশেষ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে স্নেহভাজন রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন তোফায়েল আহমেদ, কিন্তু পঁচাত্তরের তার ভূমিকা নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে নানা প্রশ্ন ওঠে। ৭৫ পরবর্তী রাজনীতিতে তোফায়েল আহমেদ এবং আব্দুর রাজ্জাক এর মধ্যে বিরোধ ছিল প্রকাশ্য। সারাদেশেই দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে বিভক্ত ছিল। আর একারণে শেষ পর্যন্ত তোফায়েল আহমেদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হতে পারেননি কখনো।
৩. মোহাম্মদ নাসিম: প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিম আওয়ামী লীগের জাতীয় চার নেতার অন্যতম ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর পুত্র ছিলেন। রাজনীতিতে তার গৌরব উজ্জ্বল ঐতিহ্য ছিলো বিশেষ করে আওয়ামী লীগ পুনর্গঠনে তিনি শেখ হাসিনার একজন বিশ্বস্ত সিপাহসালার হিসেবেই পরিচিত ছিল। ৯১ এর নির্বাচনের বিপর্যয়ের পর ডঃ কামাল হোসেন যখন আওয়ামী লীগ সভাপতিকে চ্যালেঞ্জ করেন সেই সময়ে শেখ হাসিনার পক্ষে নির্ভীকভাবে যারা দাঁড়িয়ে ছিলেন তাদের মধ্যে মো. নাসিম ছিলেন অন্যতম। তিনি আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি বহুল উচ্চারিত নাম হলেও কখনো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হতে পারেননি।
৪. বেগম মতিয়া চৌধুরী: অগ্নিকন্যা হিসেবে পরিচিত বেগম মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগ এসেছিলেন কঠিন দুঃসময়ে, ৭৫ পরবর্তীতে যখন আওয়ামী লীগ বিধ্বস্ত। একজন অসামান্য সাংগঠনিক দক্ষতার অধিকারী এই নেতা আওয়ামী লীগের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন বটে, কিন্তু এখনো তাকে আওয়ামী লীগ হিসেবে মনে করেন না অনেকেই। আর এ কারণেই ছাত্র ইউনিয়ন থেকে আসা মতিয়া চৌধুরীকে কখনো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিবেচনায় নেয়া হয়নি।
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।