নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১
গত ৬ দিন ধরে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। এসব বৈঠকে তিনি বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শুনেছেন এবং তার অভিমতও ব্যক্ত করেছেন। দুই সপ্তাহে ছয় দিনব্যাপী এই বৈঠকের পর বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন যে, তারেক জিয়া এখন বিএনপিকে ক্ষমতায় নিতে চান না। বরং প্রথমে তিনি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চান। আর একারণেই বড় ধরনের আন্দোলন নয় বরং ষড়যন্ত্রের দিকেই তার মনোযোগ রয়েছে। বিভিন্ন প্রসঙ্গে আকার-ইঙ্গিতে তিনি একথা বলেছেন। একাধিক বিএনপি নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে যে, তারেক জিয়া এই সমস্ত বৈঠকে এটাও বলেছেন যে আগে আওয়ামী লীগকে বিদায় করতে হবে, আমাদের ক্ষমতায় আসার চিন্তা বাদ দিতে হবে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে যে, তারেক জিয়া আওয়ামী লীগকে হটাতে একটি মাস্টারপ্ল্যান গ্রহণ করেছেন এবং সেই মাস্টারপ্ল্যানের পাঁচটি অংশ রয়েছে বলেও বিএনপি`র একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
প্রথমত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষ ছড়ানো। ইতিমধ্যে লন্ডন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সুইডেন থেকে বাংলাদেশে বিরোধী লাগাতার প্রচারণা শুরু হয়েছে এবং নোংরা অশ্লীল কুৎসিত ভাষায় তারেক জিয়ার কিছু ভাড়াটে লোক আওয়ামী লীগের বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী সম্বন্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করছে। এই সমস্ত ইউটিউব এবং ফেসবুকের কন্টেন্টগুলো অবাধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সরকার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বিএনপির নেতারা মনে করছেন যে এটি তাদের সাফল্যের প্রথম ধাপ। এর ফলে মানুষের মধ্যে এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। এই বিভ্রান্তি তৈরি জরুরি বলে মনে করছেন বিএনপি নেতারা।
দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। তারেক জিয়ার ষড়যন্ত্রের দ্বিতীয় ধাপ হলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করা এবং বাংলাদেশে একটি কর্তৃত্ববাদী শাসন চলছে এ সম্পর্কে প্রচারণা করা। আর এ ক্ষেত্রেও তারেক জিয়ার মাস্টারপ্ল্যান অনেকটা সফল বলে বিএনপি নেতারা দাবি করছেন। তারা বলছেন যে, এমেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউস, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রতিনিয়ত নেতিবাচক মন্তব্য দিচ্ছে। বিশেষ করে গুম, নিরাপত্তা, মানবাধিকার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ইত্যাদি ইস্যুগুলো সামনে আসছে। এটি চলতে থাকলে সরকার কিছুটা হলেও চাপে পড়বে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে জঙ্গি এবং সন্ত্রাসীদের মদদ দেওয়া, উস্কে দেওয়া। তারেক জিয়ার মাস্টারপ্ল্যানের আরেকটি অংশ হলো যে, বাংলাদেশে যে সমস্ত ম্রিয়মাণ মৌলবাদী জঙ্গি গোষ্ঠী আছে সেগুলোকে উস্কে দেওয়া এবং সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যেন তারা অংশগ্রহণ করে সেজন্য অর্থায়ন করা, এরকম প্রক্রিয়াও চলছে। বিএনপির বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে যে, খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে দৃশ্যমান কিছু হবে বলে জানা গেছে।
চতুর্থত, সরকারের ভেতরে ষড়যন্ত্র। তারেক জিয়ার মাস্টারপ্ল্যানের চতুর্থ ধাপ হলো সরকারের ভিতরেই ষড়যন্ত্র। সরকারের ভেতরের বেশকিছু লোকজনকে ‘পারচেজ’ করে তাদেরকে দিয়ে সাবোটার্স করানোটা তারেক জিয়ার মাস্টারপ্ল্যানের একটি অংশ। এখনো প্রশাসনের মধ্যে বেশকিছু বিএনপি-জামাতপন্থি লোক আছে যাদের সঙ্গে তারেক জিয়ার এবং তারেক জিয়ার বাহিনীর যোগাযোগ রয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই যোগাযোগ টিকে আরো সংহত করে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা এবং তা মূল ধারার গণমাধ্যমে প্রকাশ করে একটি মিশন বাস্তবায়ন চলছে বলেও বিএনপির সূত্রগুলো দাবি করেছে।
পঞ্চমত, সুশীল সমাজকে সামনে নিয়ে আসা। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সুশীল সমাজকে ক্ষেপিয়ে তোলাও তারেকের মিশনের একটি অংশ। বিশেষ করে সুশীল নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমগুলোতে আওয়ামী লীগ বিরোধী এবং সরকারবিরোধী নানারকম প্রতিবেদন প্রকাশ করা যেন সাধারণ মানুষকে অস্থিতিশীল করা হয়। এরকম একটি পরিস্থিতি তৈরি করে একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপট সৃষ্টি তারেকের প্রধান লক্ষ্য।
বিএনপির নেতারা বলছেন যে, তারেক জিয়া চান প্রথমে আওয়ামী লীগকে হঠাতে এবং আওয়ামী লীগকে রাজপথের আন্দোলন দিয়ে হটানো যাবে না, এটিও বিএনপি মনে করে এবং বিশ্বাস করে। কাজেই তারা এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় যেখানে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ঘটে। তবে তৃতীয়পক্ষ কে সে সম্পর্কে বিএনপির নেতারা কেউই কিছু বলেননি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বিএনপি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শামা ওবায়েদ সারাহ কুক
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনাটি জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্য স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এটি আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যন্ত যে পরিবারতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় যে জমিদারি প্রথা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই উদ্যোগ তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।