ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির ক্যাপসুল ফর্মুলায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৮ অক্টোবর, ২০২১


Thumbnail

কুমিল্লার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। একটু পর্যবেক্ষণ করলেই দেখা যায়, প্রত্যেকটি ঘটনা একই ফর্মুলায় এবং একই কায়দায় সংঘটিত হচ্ছে। প্রথমে একটি গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সেই গুজবটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। কিছু মানুষ যেন তৈরিই থাকছেন, এরপর তারা হিন্দু সংখ্যালঘু এলাকায় যাচ্ছে, নির্বিচারে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ-লুটপাট করে চলে আসছে। এরপর এই ঘটনায় সঙ্গে যারা মূল উদ্যোক্তা তারা গা ঢাকা দিচ্ছেন। এই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় গুজব সৃষ্টিকে বলা হয় ক্যাপসুল ফর্মুলা। এই ফর্মুলাটা বিএনপির আবিষ্কার। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি প্রথমে এই ক্যাপসুল ফর্মুলা আবিষ্কার করেছিল। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো যে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক ধ্বংস করে দিতে হবে এবং এজন্য বাংলাদেশে ১৪৮ টি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা বিএনপি-জামায়াত চিহ্নিত করেছিল। ১ অক্টোবরের নির্বাচনের রাতেই শুরু হয় এই ক্যাপসুল ফর্মুলা। ক্যাপসুল ফর্মুলার মূল বৈশিষ্ট্য হলো যে, একটি গুজব ছোট আকারে ছড়িয়ে দেওয়া হবে এবং এই গুজব বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষজনের কাছে পৌঁছানো হবে এবং জনগণকে উত্তেজিত করা হবে। উত্তেজিত জনগণ সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা করবে। এই ক্যাপসুল ফর্মুলায় যারা মূল গুজবটি সৃষ্টি করেন তারা ঘটনার আড়ালে থাকেন। এই ক্যাপসুল ফর্মুলার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো যে, সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষকে উত্তেজিত করা হয়, উত্তেজিত করে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করা হয়।

২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৪২ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এই সময় বিএনপির পরিকল্পনা ছিল যে, আওয়ামী লীগের প্রধান ভোটব্যাঙ্ক সংখ্যালঘুদের যদি বিতাড়িত করে দেওয়া যায় তাহলে আওয়ামী লীগ আর কোনোদিনই ক্ষমতায় আসতে পারবে না। আর এজন্যই বিএনপি সেই সময়ে ক্যাপসুল ফর্মুলা চালু করেছিল। তখন বাংলাদেশে এরকম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছিল না, ফেসবুক টুইটার ছিল না। সেসময় গুজব ছড়ানো হত কান কথার মত করে একজন একটি আরেকজনকে বলতো। এভাবেই পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়িয়ে দেয়া হতো। সাধারণত গুজব ছড়ানো হয় দেশব্যাপী কিন্তু বিএনপির এই ক্যাপসুল ফর্মুলায় একটি ছোট্ট গণ্ডিকে ক্যাপসুল এলাকাকে চিহ্নিত করা হতো। যে এলাকাটি হিন্দু অধ্যুষিত এবং সেই এলাকায় ধর্মপ্রাণ মানুষদের মধ্যে এমনি হিন্দুদের নিয়ে এসব হিন্দু বা সংখ্যালঘুদের নিয়ে একটা অসন্তোষ বা এক ধরনের অস্বস্তি ছিল। এই সমস্ত এলাকায় এই গুজব ছড়িয়ে দিয়ে মানুষজনকে উত্তেজিত করা হতো এবং আক্রমণের প্রথম ধাপটি পরিচালিত হত কিছু পেশাদার সন্ত্রাসী এবং দুর্বৃত্তদের দিয়ে। তারপর তারা সরে পড়তেন। সাধারণ মানুষ কিছু বুঝে না বুঝে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় নিজেদেরকে যুক্ত করতেন।

ঠিক ২০০১ সালের এই মডেল এবার অনুসরণ করা হয়েছে কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। তবে এবার গুজব ছড়ানোর ক্ষেত্রে আর শারীরিক যোগাযোগের পথ ব্যবহার করা হয়নি, এবার গুজব ছড়ানো হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পীরগঞ্জের ঘটনাটি যদি দেখা যায়, সেখানে ফেসবুকে একজন সংখ্যালঘু তরুণ আপত্তিকর বক্তব্য বলেছে বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে। আসলে সংখ্যালঘু তরুণ কি ছড়িয়েছে, তার ফেসবুক পেজে কি বলেছে সেটি সম্পর্কে যাচাই-বাছাই ছাড়াই মানুষ উত্তেজিত হয়েছে এবং পীরগঞ্জের মাঝিপাড়ায় যেয়ে ভাংচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের এই ক্যাপসুল ফর্মুলাই এখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ক্ষেত্রে বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

যুক্তরাজ্যে থাকলে রাজনীতি করতে পারবেন না তারেক?

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

তারেক জিয়ার যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে নতুন সংকট তৈরি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ রয়েছে। বিশেষ করে অপরাধ বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকার এখন তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আবার নতুন করে প্রচেষ্টা শুরু করেছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ড. হাছান মাহমুদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর পরই এ বিষয়টিকে তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন এবং যুক্তরাজ্যে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসকে এ ব্যাপারে তৎপর হওয়ার জন্য তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। তার এই নির্দেশনা অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস আবার নতুন করে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করছে এবং তারেক জিয়ার ব্যাপারে তাদের অবস্থান জানতে চাচ্ছে।

তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করার অঙ্গিকার আওয়ামী লীগ ৭ জানুয়ারী নির্বাচনেই করেছে। সেই অঙ্গিকার বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামী লীগ তার চেষ্টা এবং তৎপরতা নতুন করে শুরু করেছে বলে জানা গেছে। এরকম বাস্তবতায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত সারা কুক বিএনপির তিন নেতাকে ডেকেছিলেন এবং তাদের কাছে এ মনোভাবগুলো জানান।

বিট্রেনসহ পশ্চিমা দেশগুলো এখন চাইছে যে, তারেক জিয়ার রাজনীতির নেতৃত্বের অবসান ঘটুক। তিনি বিএনপিতে কোন অলঙ্কারিক পদ গ্রহণ করুক। যেন তিনি উপদেষ্টা বা দলের পৃষ্টপোষক হতে পারেন। কিন্তু দলের নির্বাহী দায়িত্ব যেন তিনি পালন না করেন সে ব্যাপারে পশ্চিমা দেশগুলো থেকেও বিএনপির উপর এখন একধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন।

বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, একাধিক কারণে পশ্চিমা দেশগুলো এরকম মনোভাব ব্যক্ত করছে। প্রথমত, পশ্চিমা দেশগুলো অনেক নীতি নির্ধারণী বিষয়ে যখন মতামত জানতে চান তখন বিএনপি নেতারা এই মতামত দিতে পারেন না। কারণ সব কিছুর জন্য তারা তারেক জিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকেন। লন্ডনে তারেক জিয়া যে নির্দেশ দিবে সে নির্দেশ পালন করা যেন তাদের একমাত্র কাজ। ফলে কূটনৈতিকরা বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন।

দ্বিতীয়ত, তারেক জিয়ার এখন সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত থাকাটা সংগঠন এবং গণতন্ত্রের পরিপন্থী। কারণ, একজন দন্ডিত ব্যক্তি কখনোই একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে থাকতে পারেন না এবং থাকা উচিত নয়। এরককম বাস্তবতা থেকে তারেক জিয়াকে রাজনীতির মূল নেতৃত্বের বাইরে রাখার জন্য যুক্তরাজ্য প্রস্তাব করছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, তারেক জিয়া একজন রাজনৈতিক আশ্রয় লাভকারী হিসেবে যুক্তরাজ্যে গত ১৬ বছর ধরে অবস্থান করছেন। আর রাজনৈতিক আশ্রয় লাভকারী কোন ব্যক্তিকে যুক্তরাজ্য রাখে মানবাধিকার এবং জীবনের অধিকার সুরক্ষার স্বার্থেই। তারেক জিয়া বাংলাদেশে এলে তার জীবন হুমকি হতে পারে, তিনি প্রতিহিংসার স্বীকার হতে পারেন, একারণেই ব্রিটিশ সরকার তাকে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রাখতে পারেন। কিন্তু ব্রিটেনে থেকে যদি তিনি অন্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কথা বলেন বা কাজ করেন, একজন রিফিউজি হয়ে যদি তিনি অন্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেন- সেক্ষেত্রে সেটি হবে রাষ্ট্রদ্রোহিতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। এখন তারেক জিয়া সেই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জাড়িত তা অনেকে মনে করে। আর এ কারণেই সরকারের পক্ষ থেকে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তাছাড়া সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি এখন সামনে এসেছে তা হলো, তারেক জিয়া একধিক মামলায় দন্ডিত হয়েছেন এবং এ মামলাগুলো হাইকোর্টে বিচারাধীন আছে। আদালতে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার জন্যই তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ফেরত আনা জরুরী বলে মনে করছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।


আওয়ামী লীগ   বিএনপি   তারেক জীয়া   পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কঠোর শেখ হাসিনা: সিদ্ধান্ত না মানলে সব হারাবেন মন্ত্রী-এমপিরা

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। শুধু কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেই তিনি ক্ষান্ত হননি। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করারও শাস্তিমূলক হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। আর এ কারণে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের একের পর এক বৈঠক করছেন এবং মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা যাতে উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেন সে জন্য সতর্ক বার্তা ঘোষণা করছেন।

আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলছেন, ওবায়দুল কাদের যা বলছেন তা হলো শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতির বক্তব্যের অনুরণন। আওয়ামী লীগ সভাপতি যেভাবে তাকে নির্দেশনা দিচ্ছেন সে বক্তব্যই তিনি প্রচার করছেন। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা যেন সারা দেশে আওয়ামী লীগের কোন কোন এমপি-মন্ত্রী এবং নেতাদের স্বজনরা প্রার্থী আছেন তার তালিকা তৈরি করেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ৩ টি বিষয়ের প্রতি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রথমত, কোন মন্ত্রী-এমপি কিংবা প্রভাবশালী নেতা তার নিকট আত্মীয় বা স্বজনকে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করাতে পারবে না। দ্বিতীয়ত, উপজেলা নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রী কোন প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা করতে পারবে না। তৃতীয়ত, কোন মন্ত্রী এমপি উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রশাসন বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে হাত মেলাতে পারবেন না। এই ৩ টির কোন একটির যদি ব্যত্যয় হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ধাপে ধাপে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উপজেলা নির্বাচনের ৩ ধাপে যে তফসিল নির্বাচন কমিশন ঘোষনা করেছে। তার মধ্যে প্রথম ধাপে ২৭ জন মন্ত্রী এমপির স্বজনরা উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন। ২য় ধাপে প্রার্থীতার সংখ্যা আরো বেশি হওয়ার কথা। এখানে ১৫২ টি উপজেলার মধ্যে ৮৭ জন মন্ত্রী-এমপির সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করার আগ্রহ জানিয়েছে, যারা মন্ত্রী-এমপিদের নিকট আত্মীয়। আর ৩য় ধাপে এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০০-২৫০ জন মন্ত্রী-এমপির আত্মীয় স্বজন উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছেন। এখন যদি তারা নির্বাচন থেকে সরে না দাড়ান, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে?

আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলছেন, আগামী ৩০ এপ্রিল দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, এই বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তবে সিদ্ধান্ত হবে ধাপে ধাপে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে প্রার্থী দিবেন তাদেরকে প্রথমত, দলের পদ হারাতে হবে। দ্বিতীয়ত, আগামী নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে তাদেরকে কালো তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হবে। তৃতীয়ত, যারা মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী আছেন, তারা মন্ত্রীত্ব ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, শেষ পর্যন্ত কেউ যদি দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হটকারী অবস্থান গ্রহন করে, তাহলে দল থেকে বহিষ্কারের মতো আওয়ামী লীগ গ্রহণ করতে পারে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র মনে করছে।

তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে আছেন। এ ব্যাপারে তিনি কোন ছাড় দেবেন না। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কালো তালিকায় যদি থাকেন, তাহলে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন হতে বাধ্য।   


শেখ হাসিনা   উপজেলা নির্বাচন   আওয়ামী লীগ   মন্ত্রী-এমপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন ঘিরে বিএনপির কেন্দ্র ও তৃণমূলে তোলপাড়

প্রকাশ: ০৪:২৩ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তারা আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিবে না। আর যদি দলটির কোনো নেতাকর্মী স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেয় তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি বহিষ্কারও করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

তবে দলের এমন কঠোর হুঁশিয়ারি থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন তৃণমূল বিএনপি’র নেতারা। তারা মনে করছেন, যেহেতু উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছে না, সে কারণে উপজেলা নির্বাচন বর্জন করা উচিত হয়নি দলের। বরং এই নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থীরা দাঁড়ালে তাদের শক্তি সামর্থ্য হতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির কেন্দ্র ও তৃণমূলের মধ্যে চলছে তোলপাড়। বাড়ছে দ্বন্দ্ব এবং দূরত্ব। বর্তমানে যেসকল নেতাকর্মীরা নির্বাচনের মাঠে রয়েছে তাদের নির্বাচন থেকে ফেরানো নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন বিএনপি’র নীতিনির্ধারকেরা। তারা মনে করছেন, প্রথম ধাপের নির্বাচনে প্রার্থীদের ফেরানো না গেলে পরের ধাপগুলোতে প্রার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে, আর তাতে দলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।

আগামী ৮ মে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। এই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ। এরই মধ্যে এই নির্বাচনে বিএনপির ৪৫ নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে বিএনপির তৃণমূলের একাধিক নেতা বলছেন, জাতীয় আর স্থানীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে তাদের জনপ্রিয়তা তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকবেন। এতে বিএনপির অনেক নেতার সম্ভাবনা আছে জেতার।

অন্যদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা আশা করে বসে আছেন যে, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ২২ এপ্রিলের আগেই সবাই ভোট থেকে সরে দাঁড়াবেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক জানান, কেউ যদি দলের নির্দেশনা অমান্য করেন তাহলে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিএনপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপি এক সংবাদ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না। তাদের দাবি এ নির্বাচন হচ্ছে ‘প্রহসনমূলক নির্বাচন’।

কিন্তু কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও সারা দেশের নেতাকর্মীদের অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যারা বিগত সময়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। এবার তারা নির্দলীয় ব্যানারে প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। আর যেহেতু তারা স্বতন্ত্রভাবেই নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিয়েছেন সেজন্য লন্ডন বা দলের কেন্দ্রীয় মহলের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় থাকছেন না।

নির্বাচনে আগ্রহী ময়মনসিংহ জেলা দক্ষিণ যুবদলের সহসভাপতি মাজহারুল ইসলাম জুয়েল বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাঙা রাখতে এবং তাদের সংঘবদ্ধ করতেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছি। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন অংশ নিলে বহিষ্কারও করতে পারে। বিষয়টি মাথায় রেখে ত্রিশাল উপজেলার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণসংযোগ করছি, তাদের সঙ্গে কথা বলছি। তবে জনগণ চায় আমি নির্বাচনে অংশ নিয়ে তাদের প্রতিনিধি হই।

এছাড়াও ত্রিশাল উপজেলা বিএনপি নেতা আনোয়ার শাদাত বলেন, আমার বাবা বিএনপি থেকে ত্রিশালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। আমার বাবার ইচ্ছা ছিল আমিও জনপ্রতিনিধি হই। তার ইচ্ছাতেই বিএনপির সঙ্গে আছি। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে গণসংযোগ শুরু করেছি। এ ব্যাপারে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। দলীয় সিদ্ধান্তে বহিষ্কার করলেও নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করে জনগণের সেবা করতে চাই। যেহেতু স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় কোনও প্রতীক থাকবে না, সেই বিবেচনা থেকে আমি নির্বাচনে অংশ নিতে চাই।

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে দলের শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখার জন্য এবার তিনি চেয়ারম্যান পদে ভোট করছেন।

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার দুবারের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন ভূইয়া দুলাল বলেন, তৃণমূলের অনেক নেতাই নির্বাচন করতে আগ্রহী।

বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের পরপরই উপজেলা নির্বাচন বিএনপিকে অনেকটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে। নির্বাচনে অংশ না নিলে মাঠপর্যায়ে জনপ্রতিনিধিত্বশীল নেতাদের ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক মাসুদুল আলম চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে তিনি জানান, আমরা দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি অনুগত। তার পরও অনেক সময় কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিষয়ে স্থানীয় মতামতে ভিন্নতাও আসে। আমরা স্থানীয়ভাবে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন শুরু হয়। বিএনপি ২০২১ সালের মার্চের পর থেকে সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। বরং দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের অনেক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। এর আগেও সিটি করপোরেশন বা ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। তা সত্ত্বেও দলটির তৃণমূলের অনেক নেতা অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে দেড় শতাধিক প্রার্থী বিজয়ীও হয়েছেন।


উপজেলা নির্বাচন   বিএনপি   তৃণমূল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচনের সময় কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ: কাদের

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ থাকবে। 

শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময়  ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন হচ্ছে। সামনে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন চলাকালে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে কোনো সম্মেলন, মেয়াদোত্তীর্ণ সম্মেলন, কমিটি গঠন এই প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে’। 

মন্ত্রী-এমপির নিকটাত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, নিকটজনদেরকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। যারা ভবিষ্যতে করতে চায় তাদেরও নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। যারা আছে তাদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। 

নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেকেই এখনো নির্বাচনে আছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রত্যাহারের তারিখ শেষ হোক, তার আগে এ বিষয়ে কীভাবে বলা যাবে। 


ওবায়দুল কাদের   উপজেলা নির্বাচন   সেতুমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

জামায়াতও ধোঁকা দিলো বিএনপিকে?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে। 

বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সামনে আরও যে দুটি তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে স্বাধীনতাবিরোধী এই রাজনৈতিক দলটির আরও ৬৩ জন প্রার্থী হতে চলেছেন। দলের পক্ষ থেকে তাদেরকে সবুজ সঙ্কেতও দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের এটি প্রতারণা। 

তবে কোন কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, বিএনপিকে কাছে পেতে এবং বিএনপির সঙ্গে থাকার জন্য জামায়াত ইচ্ছা করে এই ধরণের কৌশল নিয়েছে। যেহেতু জামায়াতের কোন রাজনৈতিক নিবন্ধন নেই এবং তারা দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে পারে না, কাজেই কারা জামায়াতের, কারা হেফাজতে ইসলামের এটি বোঝা দুষ্কর। তা ছাড়া জামায়াতের নেতারা যেহেতু তেমনটা পরিচিত নয় তারা অনেকটা আন্ডারগ্রাউন্ডের মতো করে কাজ করেন, সে কারণে অনেকেই জামায়াতের নেতাদেরকে চেনে না। তারা বিভিন্ন ইসলামিক দাওয়াত, ইসলামী শিক্ষা ইত্যাদি আলোকে এখন জামায়াতের রাজনীতি অনেকটা গোপনেই প্রচার করছে। এ কারণে কারা জামায়াতের রকন, কারা সাথী বা কারা বড় নেতা এটা সাধারণভাবে বোঝার উপায় নেই। তবে স্থানীয় পর্যায়ে যারা রাজনীতি করেন তারা জামায়াতের নেতাদেরকে চেনেন এবং তাদের সাথে তাদের ওঠা বসা হয়েছে। 

বিএনপি যখন নির্বাচন বর্জনের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখন জামায়াতও ঘোষণা করেছে যে, তারা এই নির্বাচনে দাঁড়াবে না এবং যারা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন তাদেরকে সরে আসার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জামায়াতের প্রার্থীদের কেউই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। আগামী ২২ এপ্রিল প্রথম পর্যায়ে উপজেলা নির্বাচনগুলোতে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। 

জামায়াতের বিভিন্ন সূত্র বলছে, এই সময়ে তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন না। বিএনপির নেতারা এখন মনোনয়ন টিকিয়ে রাখার জন্য এবং নির্বাচন করার জন্য তাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দেন দরবার করছেন। এই সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে বোঝাচ্ছেন যে, জামায়াতও নির্বাচন বর্জন করেছে। কিন্তু বিএনপির স্থানীয় নেতারা বলছেন, জামায়াত নির্বাচন বর্জন করেনি। বরং জামায়াত নির্বাচনের মাঠে আছে। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, প্রকাশ্য জামায়াত নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে কৌশলগত কারণে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে যে সমস্ত উপজেলাগুলো তারা শক্তিশালী সেখানে তারা প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে। 

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী সহ অন্তত ১২টি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় জামায়াত ইতোমধ্যে তাদের প্রার্থীদেরকে নিয়ে মাঠে আসছে। 

বিভিন্ন মহল মনে করেন যে, একাধিক কৌশলগত কারণে জামায়াত তাদের পরিচয় গোপন করে নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। প্রথমত, জামায়াত মনে করছে, যদি সরকারের দিক থেকে জানাজানি হয় যে, জামায়াত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে তাহলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সংশ্লিষ্টরা জামায়াতের প্রার্থীকে প্রতিহত করার জন্য সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তাদের বিরুদ্ধে আবার হয়রানি গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে। এ কারণে জামায়াত নির্বাচনের প্রার্থিতার কথা প্রকাশ করছে না।

দ্বিতীয়ত, বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য জামায়াত বাইরে থেকে বলছে যে, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না।

তৃতীয়ত, জামায়াত তার সাংগঠনিক শক্তি কতটুকু, তাদের কর্মী সমর্থকদের অবস্থান কী তা যাচাইয়ের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে উপজেলা নির্বাচন। এটি তাদের অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক কর্ম তৎপরতা হিসেবে বিবেচনা করছে। আর এ কারণে জামায়াত তাদের নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করছে না। 

তবে বিএনপির মাঠের নেতারা বলছেন, এটি জামায়াতের আরেকটি প্রতারণা এবং বিশ্বাসঘাতকতা। জামায়াত যে বিভিন্ন সময় প্রতারণা করে এটি তার প্রমাণ। বিএনপির নেতারা আরও বলছেন, ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পরও জামায়াত বিএনপির সঙ্গে একই ধরনের প্রতারণা করেছিল। বিএনপিকে সরকার গঠনের সমর্থন দেওয়ার পর জামায়াত আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্য করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলন করেছিল। এখন জামায়াত সেই প্রতারণার আরেক রূপ প্রকাশ করছে। এই উপজেলা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তারা একদিকে যেমন সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করছে অন্যদিকে নিজেদের সংগঠনকে গুছিয়ে নিচ্ছে।

জামায়াত   বিএনপি   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন