নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৮ অক্টোবর, ২০২১
৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার অন্যতম মূলমন্ত্র ছিল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক বাংলাদেশ। বাংলার হিন্দু, বাংলার খ্রিস্টান, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার মুসলমান আমরা সবাই বাঙালী। এটি ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম মূলমন্ত্র। কিন্তু আমাদের মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আবার সাম্প্রদায়িকতার সাথে লড়াই করতে হচ্ছে আমাদের। এই লড়াইয়ে আওয়ামী লীগ একা কেন, সেই প্রশ্ন এখন সবচেয়ে বড় হয়ে উঠেছে। ১৯৭১ সালে যখন বাঙালী যখন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল, তখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ ছিল। কৃষক, শ্রমিক, জেলে, মজুর, তাঁতি ও সর্বস্তরের মানুষ দল-মত নির্বিশেষে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়েই যুদ্ধ করেছিল।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৮১ সালে যখন আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন শেখ হাসিনা তখন তিনি জনগণকে আবার ঐক্যবদ্ধ করেন সাম্প্রদায়িকতা, উগ্রবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে। সকলকে নিয়েই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার লড়াই শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। আর সেকারণে আওয়ামী লীগ কখনো একা চলে নি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তি, এমনকি যারা বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করেছিল তাদেরকেও কাছে টেনে নিয়ে শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের এক বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রাম করেছেন। আর সেই বাস্তবতায়ই ১৪ দল গঠিত হয়েছে, যে দলটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন ও ধারণ করে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যে সন্ত্রাস ও সহিংসতার ঘটনাগুলো দেখা যাচ্ছে, উগ্র মৌলবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প সর্বত্র ছড়িয়ে পরছে সেই ঘটনায় আওয়ামী লীগ যেন একাকী। এমনকি বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ যে এই ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত হবে তেমন লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। ১৪ দল অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। এমন ঘটনার পরপরই আমরা বিভিন্ন সময় দেখেছি ১৪ দলের বৈঠক হয়েছে এবং ১৪ দলের নেতারা সরেজমিনে বিভিন্ন আক্রান্ত এলাকায় গেছেন। কিন্তু এবার যেন সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম।
২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়ের পর আওয়ামী লীগ একলা চলো নীতি অনুসরণ করে চলছে। এই প্রথমবারের মতো পঁচাত্তর পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীসভায় অন্য দলের সদস্যদের রাখা হয় নি। এমনকি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী ১৪ দলের কার্যক্রমেও একটা সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ১৪ দলের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। কিন্তু একটি বিষয় সকলকে মনে রাখতে হবে যে, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বাংলাদেশে দুর্বল নয়। তারা সংখ্যায় কম, কিন্তু তারা সংঘবদ্ধ। তাদের বিপুল বিত্ত আছে এবং দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও তৎপর।
এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের একলা চলো নীতি হবে আত্মঘাতী। তাই সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আওয়ামী লীগ যতই একলা চলবে, ততই আওয়ামী লীগ পিছিয়ে পরবে। ততই উগ্র মৌলবাদী ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর আস্ফালন বাড়বে। আর এমন বাস্তবতায় সংশ্লিষ্ট সকলেই মনে করে যে, আওয়ামী লীগকে একলা চলো নীতি থেকে দূরে থাকতে হবে, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যের এক মেলবন্ধন গড়ে তুলতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সকলকে নিয়ে। আর আওয়ামী লীগ যদি এটি না করতে পারে, তবে সাম্প্রদায়িক শক্তির এই দাপট ও উস্কানি আরও বাড়বে।
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।