নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৮ অক্টোবর, ২০২১
নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কৌশলের কাছে বারবারই মার খাচ্ছে বিএনপি। আগামী নির্বাচনের এখনো দুই বছর বাকি। সেই নির্বাচনের কৌশলের ছক এখনি আওয়ামী লীগ কষতে শুরু করেছে। আর সেই কৌশলের কাছে বিএনপি আবারও মার খাবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ধারনা করছেন। আওয়ামী লীগের দ্বায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ নির্বাচনের ব্যাপারে এবার ভিন্ন পথে এগোচ্ছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ চেয়েছিল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক এবং বিএনপি যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেজন্য আওয়ামী লীগ অনেকগুলো ছাড় দিয়েছিল। যেমন, অন্তবর্তীকালীন সরকারে বিএনপিকে অন্তর্ভূক্তির প্রস্তাব দিয়েছিল, বেগম খালেদা জিয়াকে গণভবনে চায়ের নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি যায় নি। বরং আওয়ামী লীগের কৌশলের কাছে তারা পরাজিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনে ১৫১ জন বিনা ভোটে নির্বাচিত হলেও ওই সরকার পাঁচ বছর হেসে খেলে সময় পার করেছে।
২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভিন্ন কৌশল নেয়। সেই সময় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে বিএনপিকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানায় এবং একটি সংলাপ হয়। সরকারের কৌশলের কাছে পরাজিত হয়ে বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা কোন দাবি অর্জন ছাড়াই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। এবার বিএনপি বলেছে যে তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোন নির্বাচনেই যাবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিএনপি কি করবে সেটি নির্ভর করছে আওয়ামী লীগের কৌশলের উপর। আগামী সপ্তাহে আওয়ামী লীগ সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সার্চ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। রাষ্ট্রপতি বিদেশে থাকার জন্যই এই প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়েছে বলে সরকারের দ্বায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। এখন রাষ্ট্রপতি দেশে ফিরেছেন। তিনি একটি সার্চ কমিটি গঠনের আহ্বান জানাবেন। সার্চ কমিটি গঠনের আগেই তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কোন আলোচনা করবেন কিনা তা নিয়েও বিভিন্ন রকমের কথা আছে, তবে সে সম্পর্কে কোন নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায় নি। কিন্তু রাষ্ট্রপতি আলোচনা করুন বা না করুন সার্চ কমিটির মাধ্যমে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন হবে এবং সেই নির্বাচন কমিশনটি সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলেই সরকারের দ্বায়িত্বশীল সূত্রগুলো আশ্বস্ত করেছেন।
এরকম পরিস্থিতে যদি সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয় তাহলে প্রথমেই বিএনপি একটি হোঁচট খাবে। তাছাড়া বিএনপি যে হুমকি দিচ্ছে যে তারা নির্বাচন বর্জন করবে, তারা নির্বাচন বর্জন করলেও শেষ পর্যন্ত সেটি নির্বাচনের পথে কোন বাঁধা হবে না বলেও আওয়ামী লীগের দ্বায়িত্বশীল মহল মনে করছে। কারণ ইতিমধ্যে রেজা কিবরিয়া ও নুরের নেতৃত্বে গন অধিকার পরিষদ গঠিত হয়েছে। গণ অধিকার পরিষদ ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে তারা ৩০০ আসনে নির্বাচন করবে। নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যেও ভাঙনের সুর শোন যাচ্ছে। নির্বাচন এলে বিএনপির মধ্যে একটি বড় অংশ নির্বাচনের পক্ষে যাবে বলে জানা গেছে। এছাড়াও বিএনপির মধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের একটি ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া এখনও বিএনপির সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। তাই বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচন নিয়ে কি ভূমিকা রাখবেন সেটিও দেখার বিষয়। আর সরকার শেষ পর্যন্ত বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম বা তারেক জিয়া নয়, বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে একটি আপোষ রফা করতে পারে বলেও অনেকে ধারনা করছেন। আর সেই আপোষ রফা হলে বিএনপির একটি বড় অংশই নির্বাচনে যাবে। সেসময়ে বেগম জিয়া আর তারেক জিয়ার মধ্যে মতবিরোধ বিএনপিকে ভাঙনের মুখেও নিয়ে যেতে পারে।
এছাড়াও নির্বাচনের আগে আগে ইসলামপন্থী কিছু দল শক্তিশালী হবে এবং তারা জোটও করবে বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। আর এই সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচন নিয়ে বিএনপি আওয়ামী লীগকে একঘরে করার বদলে বিএনপিকেই একঘরে করা হবে শেষ পর্যন্ত। বিএনপি একাই নির্বাচন যদি বর্জন করে তাহলে সেটি নির্বাচনের উপর কোন বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে না। অন্যদিকে এরকম একটি চাপের মুখে বিএনপিকে হয়তো শেষ পর্যন্ত তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে নির্বাচনের দিকেই আসতে হবে। এখনও দু’বছর বাকি আছে। আওয়ামী লীগের কৌশলগুলো কি হবে সেটিও অনুমান করার মতো পর্যাপ্ত সময় এখনও হয়নি বলেই অনেকে মনে করেন।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।