নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৭ এএম, ২৫ নভেম্বর, ২০২১
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে গত শনিবার (২০ নভেম্বর) গণঅনশন কর্মসূচী পালন করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিএনপির সেই গণঅনশন কর্মসূচী দেখে বুঝার উপায় নেই যে দলের চেয়ারপার্সনের অসুস্থতার ইস্যুতে কোন অনশন কর্মসূচী চলছে। বরং এটি যেন বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য ছিলো ব্যাপক আনন্দ উৎসবের। গণঅনশন কর্মসূচীতে চলছে নেতাকর্মীদের ব্যাপক শো-ডাউন, আনন্দ-উল্লাস। নেতাকর্মীরা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় ‘সেলফি’ আর ‘ফটোসেশন’ এর কাজেই মত্ত ছিলো। বিভিন্ন পর্যায়ের এই নেতাকর্মীদের কাছে এক প্রকার ধরাশায়ী হলেন কেন্দ্রীয় নেতারা। কেন্দ্রীয় নেতাদের কথা পাত্তা না দিয়েই নেতাকর্মীদের নিজেদের কাজে ব্যস্ত। বিএনপির এই গণঅনশন কর্মসূচীই প্রমাণ করে যে, বিএনপিতে এখন কোন চেইন অব কমান্ড নেই। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতাদের চোখেমুখে সেই দেখা যায় কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার বিরক্তি এবং হতাশা।
সেইদিন গণঅনশনের শুরুতেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে বলেন, আজকের কর্মসূচী অনশন। বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে এই অনশন পালন করবেন, কেউ দাঁড়িয়ে থাকবেন না, উঠে যাবেন না। বসে থেকে কর্মসূচি পালন করবেন। বিএনপি মহাসচিব যখন ডায়াসে দাঁড়িয়ে এমন আহ্বান রাখছেন ঠিক সে সময় দেখা যায় অংশগ্রহণকারীরা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় ‘সেলফি’ আর ‘ফটোসেশনে’ ব্যস্ত। অনশনরত সেই নেতাকর্মীরা আবার এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করেন, আবার অনেকে অনশনস্থলই ত্যাগ করতে থাকেন। এতে অনশন কর্মসূচীতে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিএনপির মহাসচিব অনশনরত নেতাকর্মীদের কিছু খেতে নিষেধ করলেও নেতাকর্মীদের আশপাশে অবস্থান নেওয়া হকারদের কাছ থেকে ঝালমুড়ি, শসা, ছোলা-বাদাম ও আনারস খেতে দেখা যায়। হোটেলে বসে দুপুরের খাবারও খেতে দেখা গেছে অনেক নেতাকর্মীদের। শতাধিক নেতাকর্মী চা, পান, সিগারেট খেতে ভিড় করেন।
বিএনপির এমন একটি ব্যর্থ, অসফল এবং হাস্যকর গণঅনশনের পর গতকাল বুধবার (২৪ নভেম্বর) আবার বিএনপির নতুন করে দেয়া ৮ দিনের কর্মসূচী কতটা সফল অবে সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। বিএনপি গত ২০ নভেম্বরের মত নতুন করে আবারও তামাশা করতে যাচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলেন যে, যে দলটি দলের চেয়ারপার্সনের মুক্তির দাবিতে একটি গণঅনশন করতে পারে না, যে দলে নেতৃত্ব বলে কিছু নেই, সেই দলের এই সমস্ত কর্মসূচী কেবলই তামাশা। আজ যুবদলের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার মধ্যদিয়ে শুরু হতে যাওয়া বিএনপির ৮ দিনের কর্মসূচী কি আবারও বাদাম খেয়ে সেলফি তোলার কর্মসূচী? বিএনপির কর্মসূচী নিয়ে এমন প্রশ্ন এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।