প্রেস ইনসাইড

সিডনিতে শোকে, শ্রদ্ধায় এবং গৌরবে আব্দুল গাফফার চৌধুরীকে স্মরণ

প্রকাশ: ১০:৩১ এএম, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২২


Thumbnail সিডনিতে শোকে, শ্রদ্ধায় এবং গৌরবে আব্দুল গাফফার চৌধুরীকে স্মরণ

সিডনি থেকে প্রকাশিত মুক্তমঞ্চ পত্রিকার আয়োজনে গত ২৭ আগস্ট, ২০২২, সন্ধ্যায় শোকে ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হলো প্রয়াত কিংবদন্তী সাংবাদিক​, মুক্তমঞ্চ পত্রিকার উপদেষ্টা​ আব্দুল গাফফার চৌধুরীকে। উক্ত স্মরণ সভাটিতে যেন এক সাংস্কৃতিক মিলনমেলা বসেছিল সিডনি প্রবাসী সুধীজনদের। আলোচকদের মধ্যে অনেকেই আব্দুল গাফফার চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। ২০০০ এবং ২০০৫ সালে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলেন। 

এই মহাত্মনের স্মরণে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেউ হয়েছেন অশ্রুসজল, কেউ হয়েছেন বাকরুদ্ধ। মুক্তমঞ্চ পত্রিকার সম্পাদক আল নোমান শামীমের সভাপতিত্বে এবং উপন্যাসিক ড. শাখাওয়াৎ নয়নের সঞ্চালনায় আব্দুল গাফফার চৌধুরীর জীবন ও কর্মের বিভিন্ন বিষয়ে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শিক্ষাবিদ, কবি এবং রাজনীতিবিদ ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক নেহাল নেয়ামুল বারী, রাজনীতিবিদ গামা কাদির, কলামিস্ট এবং গল্পকার অজয় দাশগুপ্ত, বঙ্গবন্ধু কাউন্সিলের সভাপতি শেখ শামিমুল হক, প্রশান্তিকা ডট কম এর সম্পাদক আতিকুর রহমান শুভ, শিক্ষাবিদ এবং সাংস্কৃতিক সংগঠক ড. কাইয়ুম পারভেজ, কবিতা পারভেজ, শিক্ষাবিদ এবং রাজনীতিবিদ ড. খায়রুল চৌধুরী, রাজনীতিবিদ প্রবীর মৈত্র, রাজনীতিবিদ শফিকুল আলম, শিল্পী এবং শিক্ষাবিদ ড. পলাশ বসাক, রাজনীতিবিদ সেলিমা বেগম, মোটিভেশনাল স্পিকার পল মধু, সাংস্কৃতিক সংগঠক ড. স্বপন পালসহ অনেক গুণীজন।

অস্ট্রেলিয়া আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশের রাজনীতি দিশেহারা হয়ে পড়েছিল, সেই দুর্দিনে এই আব্দুল গাফফার চৌধুরী জাতিকে পথ দেখিয়েছেন। ড. কামাল হোসেন প্রসঙ্গে একটা সময় তিনি শেখ হাসিনার সমালোচনা করেছিলেন, তখন অন্যান্য বুদ্ধিজীবিরা তাঁকে আওয়ামীলীগের রাজনীতির বাতিঘর শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা না হারাতে অনুরোধ করেন। তিনি সেই অনুরোধ রেখেছিলেন এবং আমৃত্যু তিনি জাতীয় বিবেকের ভুমিকায় অবিচল থেকেছেন’।

একুশে একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও সামাজিক সংগঠক নেহাল নেয়ামুল বারী বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে গাফফার চৌধুরীর অবদান, ভাষা আন্দোলনে অবদান উল্লেখ করে বলেন, এক জাতি একজনই গাফফার চৌধুরীর জন্ম দেয়। শহীদ দিবসের সঙ্গীতসহ গাফফার চৌধুরীর বিভিন্ন সাহিত্য প্রতিভার দিক আলোচনা করেন তিনি।

অত্যন্ত আবেগঘন বক্তব্যে হৃদয়ে দাগ কেটেছেন অজয় দাশগুপ্ত দাদা এবং ড. কাইউম পারভেজ। অজয় দাশগুপ্ত বলেন– “যতদিন এই পৃথিবীতে মাত্র একজন বাঙালি বেঁচে থাকবে ততদিন পর্যন্ত তাঁর লেখা ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কী ভুলিতে পারি’ বেঁচে থাকবে”।

কাইউম পারভেজ স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘একবার আমাকে একজন প্রশ্ন করেছিল– উনি (আব্দুল গাফফার চৌধুরী) তো শুধু একটি গানই লিখে গেছেন, আর কি অবদান আছে? আমি উত্তরে তাকে বলেছিলাম– জি, ওই একটি গানই একটি দেশ স্বাধীন হয়েছে। কে না জানে একাত্তরের এই স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল ওই ৫২ এর একুশে ফেব্রুয়ারিতেই। আর এই গানটাই ছিল তার প্রধান অস্ত্র, যেটা বাঙালি জাতি মনে রেখেছে’।

কবিতা পারভেজ আবেগ আপ্লুত কন্ঠে বলেন, আসলেই আমরা গাফফার চাচার জীবনকে নিয়ে যখন কথা বলছি, তখন তা উদযাপনই হবে, কেননা, এক জীবনে এতো অর্জন খুব বেশী মানুষের হয় না। কবিতা পারভেজ তাঁর পিতা এম আর আখতারের সাথে গাফফার চৌধুরীর গভীর সম্পর্কের গল্প শোনান।

বঙ্গবন্ধু কাউন্সিলের সভাপতি শেখ শামীম বলেন, বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত কাছের মানুষটি ছিলেন গাফফার চৌধুরী। আওয়ামী লীগের রাজনীতির মাঠে কঠোর সমালোচক হলেও তিনি শেখ হাসিনা আর বাংলাদেশের প্রশ্নে ছিলেন কোমল হৃদয়ের একজন।

জনাব গামা আব্দুল কাদির দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলেন, আব্দুল গাফফার চৌধুরীকে হারানোটা আমাদের জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমরা তাঁর লেখার জন্য সবসময় অপেক্ষা করতাম। তিনি চিরস্মরনীয় হয়ে থাকবেন।

ড. খায়রুল চৌধুরী বলেন, ‘উলংগং ইউনিভার্সিটিতে আমার থিসিস লেখার সময় আমরা বাঙালি নাকি বাংলাদেশী এই বিতর্কের সেরকম কোনো টেক্সট পাচ্ছিলাম না; একমাত্র ভরসা ছিল আব্দুল গাফফার চৌধুরীর লেখা একটি বই এবং পত্র–পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধ। যা আমাকে খুবই সাহায্য করেছে’। এছাড়াও তিনি বলেন, আমাদের সময়ের এই মহান মানুষটি আমাদের জাতিসত্ত্বার ইতিহাসকে টেক্সটচুয়ালাইজড করেছেন। তাঁর অবদানকে অস্বীকার করা যাবে না’।

সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠক শফিকুল আলম গাফফার চৌধুরীর জীবনের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে বলেন, গাফফার চৌধুরী শুধুই লেখক বা গীতিকার বা কবিই ছিলেন না, তিনি ছিলেন স্বাধীনতার চার মূল নীতির প্রশ্নে আমৃত্যু লড়াই করে যাওয়া সংগ্রামী পুরুষ। বাংলাদেশের আজ তাঁর মতো শক্ত কথা সহজে বলার কলমের কাছেই আশ্রয় খোঁজে।

সাবেক কাউন্সিলর রাজনীতিবিদ প্রবীর মৈত্র গাফফার চৌধুরীর পারিবারিক ঐতিহ্যের উপর আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, ‘হাজী ওয়াজেদ চৌধুরী, জওহরলাল নেহেরুর বাবা মতিলাল নেহেরুর সেক্রেটারি ছিলেন। অল ইন্ডিয়ান কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির মেম্বার ছিলেন’।

আতিকুর রহমান শুভ বলেন, ‘তিনি ছিলেন আমাদের পাঠ্যপুস্তকের মতো। তাকে পড়ে পড়ে আমরা বেড়ে উঠেছি। যে বয়সটা ছিলো গল্প– উপন্যাস পড়বার ঠিক সেই বয়স থেকে আমরা তাঁর কলাম পড়তাম। কখনও দুর্বোধ্য মনে হতো না। গল্পের মতো করে তিনি আমাদের ইতিহাসকে বিশেষ করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে চিনিয়েছেন। এক্টিভিস্টের মতো কাজ করে গেছেন। আমার বন্ধুর ছোট ভাই এক ব্লগারকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়ে এনে বিদেশে প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছেন। পরীমণির মতো একজন চিত্রনায়িকার বাঁচার অধিকারকেও তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন। আসছে ফেব্রুয়ারির বইমেলায় তাঁর অসমাপ্ত জীবনীও বই আকারে আসছে। এই খবরটা আমি জানতাম। সেটাও সিডনির সুধীজনদের জানালাম’।

সাংস্কৃতিক সংগঠক ডঃ স্বপন পাল বলেন, গাফফার চৌধুরীরা অসাম্প্রদায়িক সমৃদ্ধিশালী যে বাংলাদেশের পথ দেখিয়েছেন, তা থেকে আমাদের সরে আসার কোনো পথ নেই।

আওয়ামী পরিবারের রাজনীতিক সেলিনা বেগম বলেন, গাফফার চৌধুরীরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অবিচল ছিলেন, ছিলেন বলেই বাংলাদেশকে বুকে ধারন করেছেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ তৈরিতে জননেত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম আলোকবর্তিতা হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন।

অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগ নেতা এমদাদ হক বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে কালজয়ী লেখককে বাংলাদেশ মনে রাখবে।

ড. পলাশ বসাক বলেন, বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী অনেক বুদ্ধিজীবি আমরা দেখেছি; তাঁরা অনেকেই একটা সময়ের ডিরেইল্ড হয়ে গেছেন। কিন্তু আব্দুল গাফফার চৌধুরী আমৃত্যু দেশ ও জাতির পক্ষে অবিচল থেকেছেন। অসাম্প্রদায়িকতার ব্যাপারে তিনি ছিলেন আপোষহীন।

কলামিস্ট পল মধু বলেন, গাফফার চৌধুরীর স্মরণ সভায় উনার স্মৃতির প্রতি অর্ঘ্য নিবেদন আমাদের জন্য সম্মানের। এতো বড় মাপের মানুষকে আমরা সম্মান করছি, অনুভব করার চেস্টা করছি, এটি আমাদের জন্যও বড় সম্মান।

অনুষ্ঠান শুরু হয় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ড.পলাশ বসাকের কন্ঠে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে, দেশের গান গেয়ে শোনান মারিয়া মুন, তারপর আব্দুল গাফফার চৌধুরীর জীবন ও কর্মের উপর একটি সংক্ষিপ্ত ভূমিকা পাঠ করেন শাখাওয়াৎ নয়ন। অতঃপর পলাশ বসাকের নেতৃত্বে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ এই অমরকাব্যগাঁথা সমবেতভাবে গেয়ে আলোচনা শুরু করা হয়।

​এসময় আরাও উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ প্রেস ও মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি মোঃ রহমতুল্লাহ, সহ-সভাপতি কাজি সুলতানা সিমি,  শিল্পী আতিক হেলাল ও আফরীন মিতা,  সিডনি বেঙ্গগলিজ ডট কমের আবু তারিক, অপু সারোয়ার, আবৃত্তিশিল্পী নুসরাত জাহান স্মৃতি, আবৃত্তিশিল্পী আরিফুর রহমান, আবৃত্তিশিল্পী ফরহাদ আসমার, সাংস্কৃতিক কর্মী নামিদ ফারহান, জে জে অপূর্ব, আসরাফ আরিস, জাহাঙ্গীর হোসেন, সামাজিক সংগঠক সাজ্জাদ হোসেন, কবি ফজলুল মিরাজসহ সিডনির সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিমন্ডলের পরিচিতজন।

কথাসাহিত্যিক শাখাওয়াৎ নয়নের তথ্যসমৃদ্ধ সঞ্চালনা আলোচনা সভাটিকে অলংকৃত করেছে। মুক্তমঞ্চ পত্রিকার সম্পাদক আল নোমান শামীম সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে নৈশভোজের আহবান জানান এবং অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

সিডনি   আব্দুল গাফফার চৌধুরী  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

শেরপুর প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা

প্রকাশ: ০৩:২২ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিটিভি ও দৈনিক সমকাল পত্রিকার শেরপুর জেলা প্রতিনিধি দেবাশীষ ভট্রাচার্যকে সভাপতি ও বাংলা ইনসাইডারের স্টাফ রিপোর্টার প্রতিনিধি মোঃ মেরাজ উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে শেরপুর প্রেসক্লাবের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি নির্বাচন করা হয়েছে।

 

এর আগে ক্লাবের বিপুল সংখ্যক সদস্যসহ জেলার প্রায় পৌনে দুইশ সাংবাদিকের উপস্থিতিতে ইতিপূর্বে সম্পূর্ন অনিয়মতান্ত্রিকভাবে গঠিত শেরপুর প্রেসক্লাবের কমিটি ক্লাবের স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম ও ব্যর্থতার অভিযোগে ক্লাবের সদস্যদের দাবীর মুখে শেরপুর প্রেসক্লাবের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়। এতে ক্লাবের দুই তৃতীয়াংশ সদস্য সর্বসম্মত সমর্থন প্রদান করেন।   

 

এর আগে বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে শেরপুরের প্রবীন সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযুদ্ধা আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় ভার্চুয়ালী যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন সংসদ উপ নেতা ও শেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেরপুর-১ সদর আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ছানুয়ার হোসেন, শেরপুর-৩ আসনের এমপি এডিএম শহিদুল ইসলাম, শেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান, শেরপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ রফিকুল ইসলাম, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুন্নাহার কামাল, জেলা জাসদের সভাপতি শেরপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন, শেরপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবিহা জামান শাপলা, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বায়েযীদ হাসানসহ আরো অনেকে।

 

এসময় বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান সরকার সাংবাদিকদের কল্যাণে নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্বাধীনভাবে খবর প্রচার করে আসছে। আমরা শেরপুরের সাংবাদিকদের কল্যাণে সব ধরনের সহযোগিতা করবো। আমি নতুন নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাই।’ 

 

আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সদস্যরা উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করে। পরে সর্বসম্মতিক্রমে উপদেষ্টা পরিষদের কাছে দায়িত্ব অর্পন করা হয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করার জন্য। উপদেষ্টা পরিষদ সভাপতি হিসেবে বিটিভি ও দৈনিক সমকালের শেরপুর জেলা প্রতিনিধি দেবাশীষ ভট্রাচার্যকে সভাপতি ও ইনডিপেনডেন্ট টিভির স্টাফ রিপোর্টার মেরাজ উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তাব করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত করা হয়। 


প্রেসক্লাব   নতুন কমিটি  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

প্রথম আলো বিক্রি: দর কষাকষিতে চারটি শিল্প গ্রুপ

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মিডিয়া স্টার লিমিটেডের মালিকানাধীন প্রথম আলো বিক্রির জন্য মালিকপক্ষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা প্রথম আলো বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের সাথে কথাবার্তা বলছেন। প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান নিজেই দু একটি শিল্প গ্রুপের সাথে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও মালিকপক্ষের অন্যরা সিমিন রহমান শাজরেহ হক দুজনই প্রথম আলো বিক্রির জন্য বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে আলাপ করছেন বলে জানা গেছে। 

বিষয়ে বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, প্রথম আলো বিক্রির জন্য যে দর হাঁকা হয়েছে সেটি অনেক বেশি এবং একারণে আলাপ আলোচনা শুরু হলেও দর কষাকষি চলছে বেশ ভালোভাবেই। সাবের হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন কর্ণফুলী গ্রুপ প্রথম আলো কিনতে আগ্রহী ছিল। কিন্তু প্রথম আলোর পক্ষ থেকে যে দাম চাওয়া হয়েছে সেই দামে কর্ণফুলী গ্রুপ প্রথম আলো কিনতে রাজি নয় বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। 


বিভিন্ন সূত্রগুলো জানিয়েছে, কর্ণফুলী গ্রুপের দর কষাকষির প্রেক্ষাপটে আরও কয়েকটি বড় বড় শিল্প পরিবার প্রথম আলো কেনার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছে এবং তারাও মিডিয়া স্টারের পরিচালকদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা শুরু করেছে। 

যে সমস্ত শিল্প গ্রুপ প্রথম আলো কেনার ব্যাপারে আগ্রহ উঠেছে তাদের মধ্যে এখন সবার শীর্ষে রয়েছে এস আলম গ্রুপ। এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এক সময় প্রথম আলোতে কর্মরত ছিলেন এবং তিনি মতিউর রহমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ প্রিয় ভজন হিসেবে পরিচিত। রাজনৈতিক ভাবেও তারা এক সময়ে কমিউনিস্ট রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার মাধ্যমেই এস আলম গ্রুপ এখন প্রথম আলো গ্রুপের সঙ্গে পত্রিকা বিক্রির বিষয়টি নিয়ে আলাপ আলোচনা শুরু করেছেন। 

প্রথম আলোর বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এখন এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তারা এই বিষয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে দর কষাকষি করছে বলে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। দর কষাকষিতে পিছিয়ে নেই দেশের অন্যতম শিল্প গ্রুপ স্কয়ারও। স্কয়ার গ্রুপের সঙ্গে প্রথম আলোর একটি আলাদা সম্পর্ক রয়েছে। মতিউর রহমানের সঙ্গে স্কয়ার গ্রুপের মালিক দুই ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে স্কয়ার গ্রুপের অর্থায়নে প্রতি বছর প্রথম আলো মেরিল প্রথম-আলো উৎসব করে থাকে, যেখানে তারকাদেরকে পুরস্কার দিয়ে প্রথম আলোর একান্ত অনুগত করে রাখা হয়। স্কয়ার গ্রুপের পক্ষ থেকেও পত্রিকাটি কেনার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে বলে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। 


উল্লেখ্য, স্কয়ারের মালিকানাধীন মাছরাঙা টেলিভিশন রয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্কয়ার গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার অঞ্জন চৌধুরী পত্রিকা কেনার ব্যাপারে প্রথম আলোর মালিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও একাত্তর টেলিভিশনের মালিক প্রতিষ্ঠান এমজিআই বা মেঘনা মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজও প্রথম আলো কিনতে আগ্রহী। এমজিআই অন্যতম দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং একাত্তর টেলিভিশনের মালিকানায় রয়েছে। তারা প্রথম আলো কেনার ব্যাপারে ইতোমধ্যে কথাবার্তা বলছে বলে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।

একাধিক সূত্র বলছে, প্রথম আলো বিক্রির জন্য যে দাম চাওয়া হচ্ছে সেটি অনেক বেশি। আর এ কারণেই এখন দর দামের বিষয়টি মূখ্য হয়ে উঠেছে। তবে প্রথম আলো যে শেষ পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে সেটি এখন পর্যন্ত মোটামুটি নিশ্চিত।

প্রথম আলো   স্কয়ার গ্রুপ   মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ   একাত্তর টিভি   মিডিয়া স্টার লিমিটেড  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

‘নিবন্ধনের জন্য আবেদনের বাইরে থাকা অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করা হবে’

প্রকাশ: ০৯:১৮ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেনে, সাংবাদিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আবেদনের বাইরে থাকা অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের ২১৩টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল আছে। এর বাইরে শুধু অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিবন্ধন আছে ২১৩টির। এই ৪২৬টির পাশাপাশি আরও কতগুলো নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে, ছাড়পত্রও হয়েছে। সেগুলোর একটি তালিকা আছে। এর বাইরে আরও কতগুলো আছে, যেগুলো আবেদন করেছে, প্রক্রিয়াধীন আছে, তবে ছাড়পত্র হয়নি। সব কটির তালিকা করতে বলা হয়েছে। এগুলো বিটিআরসিতে পাঠাতে বলা হয়েছে। এর বাইরে যতগুলো অনলাইন নিউজ পোর্টাল আছে, যেগুলো অনিবন্ধিত, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার দাবি ছিল সাংবাদিকদের। অনলাইন গণমাধ্যমের কমিটি, প্রেসক্লাবসহ অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনও একই দাবি করেছে। সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে’।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারপর নতুন করে যারা আবেদন করবে, তখন তা চালু হবে। আবেদন না করলে চালু হবে না। আবেদন করলে নিবন্ধন পাওয়ার আগপর্যন্ত চালু থাকবে। কারণ, তাকে চলতে হবে, দেখতে হবে যে কেমন হচ্ছে। তারপর যদি ছাড়পত্র না হয়, তখন আবার বন্ধ। কিন্তু আবেদন করল না, কোনো প্রক্রিয়ায় যায়নি, সেগুলো যদি চলে, সেখানে যদি অসত্য ও অপতথ্যের মাধ্যমের চকটদার খবর দেওয়া হয়, তাহলে সেই ধরনের সাংবাদিকতা পেশাদারির সঙ্গে যারা সাংবাদিকতা করছেন, তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই সাংবাদিকদের সুরক্ষার স্বার্থে, সাংবাদিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’।

এছাড়াও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জায়গাটি সমুন্নত রেখে অপতথ্য রোধ করতে চান বলে জানান মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকতার জন্য চমৎকার পরিবেশ তৈরি করতে চাই। তথ্যপ্রবাহকে অবারিত করতে চাই।’

গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন দ্রুত সময়ের মধ্যে পাস করার প্রত্যাশার কথা জানান তথ্য প্রতিমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান।



অনলাইন নিউজ পোর্টাল   তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী   মোহাম্মদ আলী আরাফাত  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

প্রথম আলো বিক্রি: কর্ণফুলী গ্রুপের সাথে আলোচনা শুরু?

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রথম আলো বিক্রির গুঞ্জন সত্য হিসেবে পল্লবিত হতে শুরু করেছে। প্রথম আলো বিক্রির জন্য দু’টি প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষ অনানুষ্ঠানিকভাবে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে। ট্রান্সকম গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ‘মিডিয়া স্টার লিমিটেড’ বিক্রির বিষয়টি নিয়ে পর্দার আড়ালে আলাপ-আলোচনা এবং দর কষাকষি শুরু হয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে, প্রথম আলোর সম্পাদক এবং প্রকাশক মতিউর রহমান যিনি মিডিয়া স্টার লিমিটেডের অন্যতম অংশীদারও বটে। তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের সঙ্গে প্রাথমিক আলাপ-আলোচনা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন সূত্র বলছে, মতিউর রহমানের আগ্রহ পত্রিকাটি সাবের হোসেন চৌধুরীর কাছে বিক্রি করা। সাবের হোসেন চৌধুরী এর আগেও তার মালিক ছিলেন।

মতিউর রহমান সাপ্তাহিক একতার সম্পাদক ছিলেন। কমিউনিস্ট পার্টির মালিকানাধীন পত্রিকাটি থেকে গ্লাসনোস্ট এবং পেরেস্ট্রোইকা পর সরে যান মতিউর রহমান। এরপর তিনি আজকের কাগজের বিশেষ প্রতিবেদক হিসেবে নাঈমুল ইসলাম খানের অধীনে যোগদান করেন। আজকের কাগজে যোগদানের পরে তিনি আজকের কাগজের ভাঙ্গন প্রক্রিয়া তরান্বিত করার চেষ্টা করেন। আজকের কাগজের তরুণ-উদ্দীপ্ত কর্মীবাহিনীকে কাজে লাগিয়ে তিনি নতুন করে একটি পত্রিকা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। সেই সময় তিনি পর্দার আড়ালে বর্তমান পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেন।

সাবের হোসেন চৌধুরীর সাথে তার চুক্তি ছিল আজকের কাগজের পুরো কর্মী বাহিনী নিয়ে তিনি আরেকটি নতুন পত্রিকা তৈরী করবেন। এবং সেই আলোচনার ফলশ্রুতিতেই আজকের কাগজে অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে এবং এক পর্যায়ে প্রয়াত কাজী শাহেদ আহমেদ পত্রিকার কর্তৃত্ব গ্রহণে বাধ্য হন। এসময় মতিউর রহমান সাবের হোসেন চৌধুরীর অর্থায়নে ‘ভোরের কাগজ’ প্রকাশের উদ্যোগ নেন। সেই সময় শাহবাগ থেকে ভোরের কাগজ প্রকাশের জন্য যে অফিস তা আজকের কাগজের ভাঙ্গনের বহু আগেই মতিউর রহমান নিয়েছিলেন।

মতিউর রহমান ‘আজকের কাগজ’ পত্রিকাতে গিয়েছিলেন পত্রিকা থেকে কর্মীদেরকে ভাগিয়ে নেওয়ার জন্য বলেও আজকের বাস্তবতায় প্রতিয়মান হয়। আজকের কাগজ থেকে ভোরের কাগজের জন্ম হওয়ার সময় প্রথমে এই পত্রিকার প্রকাশক ছিলেন নাঈমুল ইসলাম খান। এর পিছন থেকে অর্থ বিনিয়োগ করেন সাবের হোসেন চৌধুরী এবং কর্ণফুলী গ্রুপ।

প্রথম দিকে সাবের হোসেন চৌধুরী কাগজ পত্রে কোন মালিকানায় ছিলেন না। এরপর ঘটে নাটকীয় ঘটনা। নাঈমুল ইসলাম খানকে ভোরের কাগজ থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং সেখানেও সাংবাদিকদের কৌশলে ব্যবহার করেন মতিউর রহমান। মতিউর রহমান যেহেতু রাজনৈতিকভাবে অভিজ্ঞ। কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন সেকারণে তিনি আজকের কাগজের বিভাজন প্রক্রিয়া ভোরের কাগজে পুনঃপ্রয়োগ করেন এবং ভোরের কাগজের তরুণ সংবাদকর্মীদের উত্তেজিত করে নাঈমুল ইসলাম খানকেই ভোরের কাগজ থেকে সরিয়ে দিতে সফল হন।

এরপর ভোরের কাগজে পাদপ্রদীপে আসে কর্ণফুলী গ্রুপ এবং সাবের হোসেন চৌধুরীরা। তাদের প্রিন্টার্স লাইনে নাম প্রকাশিত হয়। ভোরের কাগজ যখন একটি মর্যাদার জায়গায় পৌঁছে গেছে এবং ভোরের কাগজ যখন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য নাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ঠিক সেই সময় নতুন করে ষড়যন্ত্র করেন মতিউর রহমান। তিনি ভোরের কাগজের কর্মীদের নিয়ে ট্রান্সকম গ্রুপের লতিফুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং ভোরের কাগজ থেকে সিংহভাগ কর্মীদের বের করে নিয়ে গিয়ে প্রথম আলো তৈরী করেন। যেটি ট্রান্সকম গ্রুপের মালিকানাধীন ছিল। শুধুমাত্র শ্যামল দত্ত ছাড়া ভোরের কাগজে উল্লেখযোগ্য আর কেউ থাকেননি। সবাই মতিউর রহমানের সাথে প্রথম আলোতে যোগদান করেন। অচিরেই ভোরের কাগজের জনপ্রিয়তা প্রথম আলো গ্রহণ করে। এখন মতিউর রহমান ট্রান্সকম গ্রুপের অভ্যন্তরীণ বিরোধ এবং মালিকানার দ্বন্দ্বের কারণে পত্রিকাটি অন্য মালিকের কাছে হস্তান্তর করতে চেষ্টা করছেন।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, প্রথম আলো বিক্রির পিছনে দুই বোনের বিরোধ থাকলেও প্রথম আলোকে ট্রান্সকম গ্রুপের থেকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে মূখ্য ভূমিকা রাখছেন মতিউর রহমান নিজেই। কারণ সামনের দিনগুলোতে সিমিন রহমান এবং শাজরেহ হক এর বিরোধ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে এ নিয়ে একটি অনিশ্চয়তা রয়েছে। আর একারণেই তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে আবার ফেরত যেতে চাইছেন। মতিউর রহমান ভোরের কাগজ থেকে বের হওয়ার পর কিছুদিন সাবের হোসেন চৌধুরীর সম্পর্কের শিথিলতা থাকলেও এখন তা আবার আগের মত হয়েছে বলে জানা গেছে।

একাধিক সূত্র বলছে যে, কর্ণফুলী গ্রুপের সঙ্গে মতিউর রহমানের পর্দার আড়ালের বৈঠক ফলপ্রসূ হলে মিডিয়া স্টারের বোর্ড সভায় প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টি মতিউর রহমান নিজেই উপস্থাপন করতে পারেন।

তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, মিডিয়া স্টারের অন্যতম মালিক ট্রান্সকম গ্রুপের দুই বোন শেষ পর্যন্ত কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে পত্রিকা বিক্রি করবেন নাকি অন্য কোন বৃহত্তর শিল্প গ্রুপের কাছে পত্রিকাটি বিক্রি করবেন সেটি বোঝা যাবে আরও পরে।

প্রথম আলো   কর্ণফুলী গ্রুপ   ট্রান্সকম গ্রুপ  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

ট্রান্সকমের বিরোধ: বিক্রি হচ্ছে প্রথম আলো?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ট্রান্সকম গ্রুপের পারিবারিক বিরোধের কারণে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে—এমন গুঞ্জন এখন মিডিয়া পাড়ায়। বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে যে, মামলার সমঝোতা করতে গিয়ে দুই বোন একটি আপস ফর্মুলা আসার চেষ্টা করছে এবং সেই আপস ফর্মুলা অংশ হিসেবে তারা কিছু প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছেন। এই পরিকল্পনা যদি শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত হয় তাহলে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাবে। 

ট্রান্সকম গ্রুপের মালিকানাধীন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই দৈনিক পত্রিকাটিকে কেনার জন্য অন্তত দুজনের আগ্রহের কথা শোনা যাচ্ছে। এদের মধ্যে অন্যতম হল দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরা। অন্যজন হলেন বর্তমান পরিবেশ পরিবেশ এবং জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর কর্ণফুলী গ্রুপ। 

উল্লেখ্য, ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত লতিফুর রহমানের মৃত্যুর পর তাদের দুই বোনের বিরোধ এখন আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। গত পয়লা ফেব্রুয়ারি লতিফুর রহমানের ছোট মেয়ে শাজরেহ হক ট্রান্সকম গ্রুপের সিইও এবং তার বড় বোন সিমিন রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত, প্রতারণা এবং শেয়ার জালিয়াতের মামলা করেন। এই মামলায় তিনি তার মা, বোন, ভাগ্নে সহ আটজনকে অভিযুক্ত করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত, সম্পত্তি দখল এবং শেয়ার হস্তান্তরের অভিযোগ আনেন। এই অভিযোগ এখন তদন্ত করছে পিবিআই। 

অভিযোগে বলা হয়েছে, জাল জালিয়াতি করে শেয়ার হস্তান্তর করা হয়েছে। কোনো দলিলে তিনি সই করেননি। অথচ তার এবং ভাইয়ের নামে যে শেয়ার দেওয়া হয়েছে তার প্রায় দ্বিগুণ শেয়ার আছে সিমিনের নামে। এরপর ২২ মার্চ শাজরেহ হক আরেকটি মামলা করেন, যেখানে তিনি তার ভাইকে হত্যার অভিযোগ আনেন। এতে আসামি করা হয় বোন সিমিন রহমান এবং যারাইফ আয়াত হোসেনসহ ১১ জনকে। মাকে এই মামলার আসামি করেননি। 

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ১৬ জুন গুলশানের বাসায় নিজের শোবার ঘরে মারা যান সিমিন এবং শাজরেহের ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমান। তিনি নিঃসন্তান এবং তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল। আর এই হত্যা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে, সিমিন রহমান এবং অন্যরা যোগসাজশ করে তার ভাইকে হত্যা করেছে। আর এই মামলায় ইতিমধ্যে সিমিন রহমান আদালতে গিয়ে জামিন নিয়েছেন। 

পারিবারিক বিরোধের কারণে ট্রান্সকম গ্রুপের অবস্থা যখন টলটলয়মান ঠিক সেই সময় ট্রান্সকম নিয়ন্ত্রিত দেশের অন্যতম প্রভাবশালী দৈনিক প্রথম আলো বিক্রির গুঞ্জন উঠেছে। উল্লেখ্য, ট্রান্সকম গ্রুপের পরিচালক হিসাবে এখনও মেয়ে শাজরেহ হক রয়েছেন। পারিবারিক বিরোধের কারণে বিভিন্ন সম্পত্তিগুলো তারা ভাগ বাটোয়ারা করার চেষ্টা করছেন। আদালতের বাইরে এই বিরোধ মেটানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন মা শাহানাজ রহমান। তিনি দুই বোনের সঙ্গে কথা বলছেন এবং বিষয়টি মীসাংসা করার চেষ্টা করছেন। এমনকি সম্পত্তিগুলো ভাগ বাটোয়ারা করার ক্ষেত্রেও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যেতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র আভাস দিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে প্রথম আলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কেউই কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

ট্রান্সকম গ্রুপ   প্রথম আলো  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন