সাহিত্যে গভীর জীবনদর্শনের প্রতিফলন ঘটিয়ে এবং ভিন্ন ধারা সৃষ্টি করে এবারের ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৯’ সাংবাদিক, কবি ও কথাসাহিত্যিক শাহনাজ মুন্নী।
শাহনাজ মুন্নীর অগ্রজ এবং অনুজ কথাসাহিত্যিকদের মতে, ৩০ বছরের সাহিত্যচর্চায় শাহনাজ মুন্নী তিলে তিলে নিজেকে গড়ে তুলেছেন। নারীবাদের ক্ষেত্রে পুরুষকে নারীর প্রতিপক্ষ না করে সমকক্ষ হিসেবে হাজির করেছেন।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) গল্প, উপন্যাস ও কবিতায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে পাক্ষিক অনন্যা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, শাহনাজ মুন্নী তাঁর কবিতায় ক্রুদ্ধ এক অন্ধকারের গল্প বলেছেন, হেঁটেছেন হৃদয়ঘরের বারান্দায়। কলমের মাধ্যমে সৃষ্টি করেছেন নতুন ভুবন। এই বিশাল পথে তাঁর সঙ্গী শুধু শব্দ। এ পর্যন্ত শাহনাজ মুন্নীর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ২৪টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ‘এলো ক্রুদ্ধ অন্ধকার’, ‘বাদুর ও ব্র্যান্ডি’, ‘তৃতীয় ঘণ্টা পড়ার আগেই’, ‘পান সুন্দরী’, ‘নির্বাচিত গল্প’, ‘আমি আর আমিন যখন আজিমপুর থাকতাম’। এবার অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশ পাচ্ছে উপন্যাস ‘স্নানের শব্দ’।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কথাসাহিত্যিক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হামীম কামরুল হক বলেন, নারী তাঁর স্বতন্ত্র সত্ত্বা নিয়ে চলেন। নারীর দেখা পৃথিবী, অস্তিত্ব তাঁর কর্মে হাজির হয়। একটি মানুষকে সামগ্রিকভাবে দেখার যে ক্ষমতা, তা নারীর থাকে; একজন পুরুষ তা পারেন না। নারীবাদের চর্চায় পুরুষকে কখনো কখনো তীব্র প্রতিপক্ষ হিসেবে হাজির করা হয়। শাহ্নাজ মুন্নী নারীবাদের চর্চায় পুরুষকে সমকক্ষ হিসেবে দেখেন। তিনি বলেন, এই সময়ের জটিল আবর্ত শাহ্নাজ মুন্নীর লেখায় সহজভাবে উঠে আসে। তাঁর লেখায় গভীর আন্তরিকতা। তিনি একজন লেখকের সামগ্রিক দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক। তিনি বলেন, অন্যন্যা সাহিত্য পুরস্কার নারী সাহিত্যিকদের অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিচ্ছে। একজন নারীর সাহিত্যিক হওয়ার পেছনে অনেক দুঃখ–কষ্ট থাকে। সংসারের প্রাত্যহিক অনেক কাজ ‘দক্ষতার’ সঙ্গে করতে না পারার কারণে অনেক সময় তাঁরা সমাদৃত হতে পারেন না। শাহ্নাজ মুন্নী সাহিত্যজগতে এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেছেন। তাঁর জীবনদর্শন অনেক গভীর। তিনি তিলে তিলে নিজেকে কবি ও কথাসাহিত্যিক হিসেবে তৈরি করেছেন। শাহ্নাজের সাহিত্য পড়ে তিনি নিজে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।
পুরস্কার পাওয়ার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শাহনাজ মুন্নী বলেন, সাহিত্যে এটা তাঁর প্রথম আনুষ্ঠানিক পুরস্কার। তবে দীর্ঘ সাহিত্যজীবনে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ও অনুপ্রেরণার অনেক অনানুষ্ঠানিক পুরস্কার জমেছে তাঁর। বাংলাদেশের নারীদের অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে চলতে হয়, সামাজিক সব দায়িত্ব ও কর্তব্য নারীর ওপর চাপানো হয়। সেসব পালন করে একজন নারী সাহিত্যচর্চায় অংশ নিতে পারেন। শাহ্নাজ মুন্নী জানান, তিনি লেখার মাধ্যমে আনন্দ খুঁজে পান। সাহিত্যচর্চা তিনি আজীবন চালিয়ে যেতে চান।
সভাপ্রধানের বক্তব্যে পাক্ষিক অনন্যা ও দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, ভালো মনের চর্চায় বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে। অনেকে এখন শুধু দেখতে চান, পড়তে চান না। ছাপার জগতকে বিরাট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। অনন্যার কার্যালয়ও আগের জায়গায় নেই। ছাপা সাময়িকীর বদলে অনন্যা চলে এসেছে অনলাইনে। পরিবর্তিত সমাজের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্যও অনেক পড়তে হবে।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন লেখক নূর কামরুন্নাহার। অনুষ্ঠানের শুরুতে আবৃত্তি করেন সাহিনা মিতা এবং গান পরিবেশন করে ‘অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার’–প্রাপ্ত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মেয়েদের দল ‘এফ মাইনর’।
প্রসঙ্গত, বাংলা ১৪০১ সনে (১৯৯৩ সাল) ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার’ প্রবর্তন করা হয়। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিবছর একজন কৃতী নারী সাহিত্যিক অথবা সাহিত্য- গবেষককে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
শাহনাজ মুন্নী অনন্যা সহিত্য পুরস্কার
মন্তব্য করুন
প্রথম আলো স্কয়ার গ্রুপ মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ একাত্তর টিভি মিডিয়া স্টার লিমিটেড
মন্তব্য করুন
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেনে, সাংবাদিকদের
দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আবেদনের বাইরে থাকা অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো বন্ধ করে
দেওয়া হবে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত ‘মিট
দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের ২১৩টি অনলাইন
নিউজ পোর্টাল আছে। এর বাইরে শুধু অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিবন্ধন আছে ২১৩টির। এই ৪২৬টির
পাশাপাশি আরও কতগুলো নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে, ছাড়পত্রও হয়েছে। সেগুলোর একটি তালিকা
আছে। এর বাইরে আরও কতগুলো আছে, যেগুলো আবেদন করেছে, প্রক্রিয়াধীন আছে, তবে ছাড়পত্র
হয়নি। সব কটির তালিকা করতে বলা হয়েছে। এগুলো বিটিআরসিতে পাঠাতে বলা হয়েছে। এর বাইরে
যতগুলো অনলাইন নিউজ পোর্টাল আছে, যেগুলো অনিবন্ধিত, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার দাবি ছিল
সাংবাদিকদের। অনলাইন গণমাধ্যমের কমিটি, প্রেসক্লাবসহ অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনও একই
দাবি করেছে। সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে’।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারপর নতুন করে যারা আবেদন করবে,
তখন তা চালু হবে। আবেদন না করলে চালু হবে না। আবেদন করলে নিবন্ধন পাওয়ার আগপর্যন্ত
চালু থাকবে। কারণ, তাকে চলতে হবে, দেখতে হবে যে কেমন হচ্ছে। তারপর যদি ছাড়পত্র না হয়,
তখন আবার বন্ধ। কিন্তু আবেদন করল না, কোনো প্রক্রিয়ায় যায়নি, সেগুলো যদি চলে, সেখানে
যদি অসত্য ও অপতথ্যের মাধ্যমের চকটদার খবর দেওয়া হয়, তাহলে সেই ধরনের সাংবাদিকতা পেশাদারির
সঙ্গে যারা সাংবাদিকতা করছেন, তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই সাংবাদিকদের সুরক্ষার স্বার্থে,
সাংবাদিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’।
এছাড়াও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জায়গাটি সমুন্নত রেখে অপতথ্য রোধ
করতে চান বলে জানান মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকতার জন্য চমৎকার পরিবেশ
তৈরি করতে চাই। তথ্যপ্রবাহকে অবারিত করতে চাই।’
গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন
দ্রুত সময়ের মধ্যে পাস করার প্রত্যাশার কথা জানান তথ্য প্রতিমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ
শুকুর আলী ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত
মন্তব্য করুন
প্রথম আলো কর্ণফুলী গ্রুপ ট্রান্সকম গ্রুপ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে স্বাধীনতার ইতিহাসে নতুন
রেকর্ডে ছুটি পেলেন সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। চলত মাসের
১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের সরকার নির্ধারিত ছুটি এবং নোয়াবের ১৩ এপ্রিল বিশেষ ছুটিসহ
এবারের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রেকর্ড ৬ দিনের ছুটি পেয়েছে সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিক সহ
কর্মকর্তারা।
শনিবার (৬ এপ্রিল) সংবাদপত্রের মালিকদের
সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)-এর বৈঠক শেষে চলতি মাসের
৯ থেকে ১৪ এপ্রিল টানা ৬ দিন ছুটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়।
তবে প্রচলিত রেওয়াজে, প্রতিবছর সংবাদকর্মীরা
২৯ রমজান থেকে ঈদে তিন দিনের ছুটি ভোগ করেন। রোজা ৩০টি পূর্ণ হলে এই ছুটি চার দিনে
পরিণত হয়। সে হিসাবে ৯ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত সর্বোচ্চ ছুটি হওয়ার কথা। কিন্তু এবার
ঈদের ছুটির এক দিন পর ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ হওয়ায় সরকার নির্ধারিত ছুটি রয়েছে। এজন্য
নোয়াব ১৩ এপ্রিল বিশেষ ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়।
এসময় নোয়াবের বৈঠকে ১৩ এপ্রিল বিশেষ
ছুটি ঘোষণার বিষয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য সম্মতি দেন। তা ছাড়া এদিন পত্রিকা প্রকাশ হলেও
সংবাদপত্র বিপণন সংস্থা সংবাদপত্র হকার্স কল্যাণ বহুমুখী সমিতি তা বিপণনে অপারগতা জানায়।
অন্যদিকে ঈদের ছুটির এক দিন পরই পহেলা
বৈশাখের ছুটি থাকায় সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)
ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নও (ডিইউজে) নোয়াবের কাছে ১৩ এপ্রিল বিশেষ ছুটি ঘোষণার আহ্বান
জানায়।
ডিইউজে সভাপতি সোহেল হায়দার
চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ঈদের ছুটি চিরাচরিত। একইভাবে পহেলা বৈশাখের ছুটিও। কিন্তু
এবার ঈদের ছুটির এক দিন পরই পহেলা বৈশাখ। তাই সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা যাতে পরিবারের
সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পান, আমরা সেই আবেদন নোয়াবের কাছে জানিয়েছি। এতে কর্মীদের
কর্মস্পৃহা আরও বাড়বে। তা ছাড়া গণমাধ্যমে ছুটিও এমনিতে অনেক কম।
তিনি জানান, ঈদের ছুটি ৬ দিন হওয়ায় এটি রেকর্ড। স্বাধীনতার পর আর কখনও সংবাদমাধ্যম ৬ দিন বন্ধ থাকেনি।
মন্তব্য করুন
মিডিয়া স্টার লিমিটেডের মালিকানাধীন প্রথম আলো বিক্রির জন্য মালিকপক্ষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা প্রথম আলো বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের সাথে কথাবার্তা বলছেন। প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান নিজেই দু একটি শিল্প গ্রুপের সাথে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও মালিকপক্ষের অন্যরা সিমিন রহমান শাজরেহ হক দুজনই প্রথম আলো বিক্রির জন্য বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে আলাপ করছেন বলে জানা গেছে।
প্রথম আলো বিক্রির গুঞ্জন সত্য হিসেবে পল্লবিত হতে শুরু করেছে। প্রথম আলো বিক্রির জন্য দু’টি প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষ অনানুষ্ঠানিকভাবে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে। ট্রান্সকম গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ‘মিডিয়া স্টার লিমিটেড’ বিক্রির বিষয়টি নিয়ে পর্দার আড়ালে আলাপ-আলোচনা এবং দর কষাকষি শুরু হয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ট্রান্সকম গ্রুপের পারিবারিক বিরোধের কারণে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে—এমন গুঞ্জন এখন মিডিয়া পাড়ায়। বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে যে, মামলার সমঝোতা করতে গিয়ে দুই বোন একটি আপস ফর্মুলা আসার চেষ্টা করছে এবং সেই আপস ফর্মুলা অংশ হিসেবে তারা কিছু প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছেন। এই পরিকল্পনা যদি শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত হয় তাহলে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাবে।