প্রেস ইনসাইড

জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নই কি প্রথম আলোর উদ্দেশ্য?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৩ এপ্রিল, ২০২৩


Thumbnail জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নই কি প্রথম আলোর উদ্দেশ্য?

গতকাল ২ এপ্রিল (রোববার) দৈনিক প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই আমাদের সম্পাদকীয় নীতির ভিত্তি’- শিরোনামে একটি উপ-সম্পাদকীয় লিখেছেন। ওই উপ-সম্পাদকীয়তে তিনি দাবি করেছেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনাই দেশের বহুল প্রচারিত দৈনিকটির সম্পাদকীয় নীতি। উপ-সম্পাদকীর শুরুতেই তিনি লিখেছেন, ‘গত ২৩ মার্চ প্রথম আলোর ২৭ জন নতুন কর্মীকে নিয়ে জ্যেষ্ঠ সহকর্মীরা অফিসের বড় সভাকক্ষটিতে বসেছিলাম। বসেছিলাম প্রথম আলোয় চর্চিত সম্পাদকীয় নীতি, মূল্যবোধ আর সংস্কৃতি তাঁদের বুঝিয়ে বলতে। সেখানে খুব সুনির্দিষ্টভাবে আমরা বলেছিলাম, মুক্তিযুদ্ধের যেটা চেতনা, এক কথায় সেটাই প্রথম আলোর সম্পাদকীয় নীতির মূল ভিত্তি।’ 

তবে এই উপ সম্পাদকীয় প্রকাশিত হবার পর সংবাদ মাধ্যম সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ মহল মনে করছেন, গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ২৯ মার্চ রাতে প্রথম আলো সম্পাদক এবং প্রতিবেদক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর- এই সময়ে একটু নরম হয়েছে প্রথম আলোর সুর। বিজ্ঞ মহল বলছেন, কিন্তু প্রশ্ন হলো, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সম্পাদকীয় নীতির একটি জাতীয় দৈনিক মহান স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে কেন এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে? দৈনিকটি একজন দিনমজুর জাকির হোসেনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছিল, ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো’। কিন্তু পরে জানা গেছে, প্রথম আলোর এই প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ ভুয়া। শিশুটির নাম সবুজ এবং সে প্রথম শ্রেণির একজন ছাত্র। সে মোটেও দিনমজুর নয়। বরং সে পরিবারকে সাহায্য করার জন্য স্কুল শেষ করে বিকেল বেলায় মায়ের সাথে ফুল বিক্রি করে থাকে।

প্রশ্ন হচ্ছে, যে ছবিটি ছাপা হয়েছে, সে ছবির মানুষটি দিনমজুর জাকির হোসেনই হোক বা শিশু সবজুই হোক, সেটা না হয় বাদই থাকলো। কিন্তু স্বাধীনতা নিয়ে যে কটুক্তি ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম’- এ ধরনের একটি উদ্ধৃতি একটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দৈনিক কিভাবে প্রকাশ করে?- বলছিলেন সংবাদপত্র সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ মহল।              

বিজ্ঞ মহল আরও বলছেন, তারা (প্রথম আলো) মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে বলে, এজন্যই কি তারা বিভিন্ন সময়ে জামায়াত-বিএনপিকে তোষামোদ করেছিল? আবার জামায়াতের হাত থেকে যখন ইসলামী ব্যাংককে মুক্ত করা হয়েছে, তার প্রতিশোধ নেয়ার জন্যই কি - ইসলামী ব্যাংকে ‘ভয়ঙ্কর নভেম্বর’- শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল এই প্রথম আলো? তার জন্যই কি তারা আবার জামায়াতের হাতে ইসলামী ব্যাংককে তুলে দেয়ার পায়তারা করেছে? এটাই কি তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সংগঠনের সময়ে গণজাগরণ মঞ্চের লাকির চরিত্র হনন করে গল্পও ছেপেছিল প্রথম আলো! এই কি তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা? মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জন্যই কি তাদের স্বাধীনতা দিবসে দেশের স্বাধীনতাকে এমন কটাক্ষ? এসব কর্মকান্ড থেকে সহজেই প্রতীয়মাণ হয় যে, জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নই প্রথম আলোর উদ্দেশ্য!



সাজ্জাদ শরীফ ওই উপ-সম্পাদকীয়তে আরও লিখেছেন, ‘পাকিস্তান রাষ্ট্রের ভেতরে গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা, সম–অধিকার, সাম্য ও বাঙালিত্বসহ যেসব আদর্শের অভাব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নেতা এবং কোটি মানুষকে পীড়িত করেছিল এবং মুক্তিযুদ্ধকে অনিবার্য করে তুলেছিল, সেই চেতনাই আমাদের সাংবাদিকতা–চর্চার ভিত্তি। কারণ, এই আদর্শের চর্চার মধ্যেই আছে নাগরিক ও দেশের উন্নয়ন। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আমাদের সাংবাদিকতার অন্তরে লালন করি। কারণ, আমরা সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জয় চাই।’

কিন্তু বিজ্ঞ মহল বলছেন, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এবং তার সম্পাদিত পত্রিকাটি সব সময়ই গণতন্ত্র বিরোধী। এই গণতন্ত্রবিরোধী অবস্থানের চিত্র বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে প্রকাশিত হয়েছে। ১/১১ এর সময়ে তার অবস্থান এবং তার আসল চেহারা প্রস্ফুটিত হয়েছিল। সেই সময়ে তিনি দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে একটি লেখা লিখেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন ‘দুই নেত্রীকে সরে যেতে হবে’। অর্থাৎ ১/১১- এর সময়ে তিনি ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’র সপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বিরাজনীতিকরণের অন্যতম একজন উদ্যোক্তা। 

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে প্রথম আলো এবং এর সম্পাদক মতিউর রহমান জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তায়নে কাজ করেছেন। এসব বিষয়ে বেশ কিছু যুক্তি এবং উদাহরণ তুলে ধরা হচ্ছে।  

এক. ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জামায়াতের কোনো নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ করেনি প্রথম আলো। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল। বাংলাদেশের জন্য এক অন্ধকার সময়। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনে ভোট কারচুপি করে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ভোট কারচুপির হীন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। নির্বাচনের আগেই বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা প্রশাসনের মদদে প্রায় তিন শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করে। মিথ্যা অজুহাতে গ্রেফতার করা হয় হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে। সংখ্যালঘু ভোটারসহ নারী ভোটাররা যাতে ভোট কেন্দ্রে না আসে তার জন্য ভয়ভীতি দেখায় বিএনপি - জামায়াত ক্যাডাররা। নির্বাচনের পর পরই শুরু হয় দেশজুড়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী, সমর্থক আর সংখ্যালঘুদের উপর বর্বরোচিত হামলা, নির্যাতন। নির্বিশেষে হামলা চালায় অসহায় সহজ সরল মানুষের ওপর। হত্যা, ধর্ষন, নির্যাতনে আত্মহারা হয়ে যায় সমগ্র জাতি। শিশু, মহিলা, বৃদ্ধ কেউ বাদ যায়নি বিএনপি-জামায়াতের হায়েনাদের অত্যাচার, নির্যাতন থেকে। হাজার হাজার সংখ্যালঘু মানুষ বাস্তুভিটা থেকে আশ্রয়হীন অবস্থায় পাড়ি জমায় পার্শ্ববর্তী গ্রামে, শহরে, মহল্লায়, পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে। তারপরও জীবন রক্ষা হয়নি। অনেকে পাঁচ বছর ধরে বাস্তুভিটায় ফিরেও আসতে পারেননি। মানবতার এত বড় অসম্মান এদেশে স্বাধীনতার পর আর কখনও হয়নি। লুণ্ঠিত হয় মানবতা। কিন্তু সেই সময়ে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত এই পত্রিকা জামায়াতের কোনো নেতার বিরুদ্ধে একটিও সংবাদ প্রকাশ করেছে বলে দেখা যায়নি।  

দুই. ১/১১ এর সময়ে তারা (প্রথম আলো) ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’র কথা বলেছে। কিন্তু এ সময় তারা কখনই জামায়াতের কোনো নেতার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অসদাচরণ বা জামায়াতের অগণতান্ত্রিকভাবে দল পরিচালনার কথা বলেনি। বরং পরোক্ষভাবে জামায়াতের প্রশংসা করেছে। সামরিক সমর্থিত মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সরকারের সময়ে এই প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান লিখেছিলেন, ‘দুই নেত্রীকে সরে যেতে হবে’- শিরোনামে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দেশের বিরাজনীতিকরণের উস্কানি। অথচ ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোটের যেসব অপকর্ম হয়েছিল, তা নিয়ে জামায়াতের কোনো নেতাকে কটাক্ষ করে বা জামায়াতের কোনো নেতার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেদনও লেখেনি এই প্রথম আলো। জোট সরকারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা, নির্বাচনকে কলঙ্কিত করা ইত্যাদি অভিযোগে বিএনপি ও জামায়াতের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ ছিল দেশবাসীর। ১/১১ এর সময়ে সেনা সমর্থিত সরকার ক্ষমতায় থাকার ফলে প্রথম আলো দুই নেত্রীকে সরে দাঁড়ানোর লেখা প্রকাশ করতে পারলো, অথচ জামায়াতের কোনো নেতার বিরুদ্ধে একটি লেখা বা প্রতিবেদনও প্রকাশ করতে পারলো না? সরকারি দল বিএনপি-জামায়াত ২০০১ সাল থেকে যেসব অপরাধ ও অপকর্ম সংঘটিত করেছিল সেসবের কারণে তীব্র ক্ষোভও ছিল দেশের সাধারণ মানুষের। কিন্তু প্রশ্ন হলো, তখন কি করেছিল দৈনিক প্রথম  আলো এবং এর সম্পাদক মিতিউর রহমান? প্রসঙ্গতই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, তবে কি জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নই প্রথম আলোর উদ্দেশ্য?  

তিন. যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে তারা (প্রথম আলো) উপ-সম্পাদকীয় লিখেছে। ডেভিড বার্গম্যানসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছে, তাদেরকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছে এবং তাদের বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণভাবে ছেপেছে এই পত্রিকা প্রথম আলো। ‘ক-তে কাদের মোল্লা, ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই’- স্লোগানগুলো দিয়ে সে সময়ে দেশব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন লাকি আক্তার। সে সময় যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সংগঠিত শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের স্লোগানকন্যা হিসেবেই বেশ পরিচিত পান লাকি। সে সময় গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারের পরেই উচ্চারিত হতো লাকি আক্তারের নাম। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সংগঠনের সময়ে গণজাগরণ মঞ্চের লাকির চরিত্র হনন করে গল্প ছেপেছিলে এই প্রথম আলো! এই কি তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা? প্রসঙ্গতই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, তবে কি জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নই প্রথম আলোর উদ্দেশ্য?
 


চার. ইসলামী ব্যাংক যখন জামায়াতমুক্ত করা হয়। সরকার যখন জামায়াতের হাত থেকে ইসলামী ব্যাংক মুক্ত করার ঐতিহাসিক উদ্যোগ নেয় এবং ইসলামী ব্যাংককে জামায়াতের হাত থেকে মুক্ত করে। তখন সেই উদ্যোগের বিরোধীতা করেছিল প্রথম আলো। আবার যেন জামায়াতের হাতে ইসলামী ব্যাংক ফেরত যায়, সেজন্যে- ইসলামী ব্যাংকে ‘ভয়ঙ্কর নভেম্বর’- শিরোনামে ইসলামী ব্যাংকের বিরুদ্ধে মনগড়া, বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশন করে প্রথম আলো। এই ব্যাংকটির উপর থেকে যেন গ্রাহকদের আস্থা নষ্ট হয়ে যায়, সেই ষড়যন্ত্র করেছিল এই প্রথম আলো। এছাড়া অতি সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকে টাকা নেই বলে গুজব ছড়ায় এই দৈনিকটি। যে গুজব ছড়ানোর ফলশ্রুতিতে ইসলামী ব্যাংকের অবস্থা খানিকটা নড়বড়ে হয়ে গেল। যে কোনো ব্যাংকের বিরুদ্ধে যদি এরকম একটা নেতিবাচক সংবাদ করা হয়, তাহলে আমানতকারী লোকজন যদি ব্যাংক থেকে টাকা তোলে নেয়া শুরু করেন, তাহলে যে কোনো ব্যাংক অর্থাৎ সবচেয়ে ভালো ব্যাংকও দেউলিয়া হয়ে যাবে। প্রসঙ্গতই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, তবে কি জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নই প্রথম আলোর উদ্দেশ্য?    

এবং সর্বশেষ স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে কটাক্ষ করে সংবাদ প্রকাশ করে প্রথম আলো। এই কি তাহলে তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা? এই কি তবে তাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনা? তবে কি জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নই প্রথম আলোর উদ্দেশ্য?

জামায়াত   প্রথম আলো   ইসলামী ব্যাংক   গণজাগরণ মঞ্চ  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

শেরপুর প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা

প্রকাশ: ০৩:২২ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিটিভি ও দৈনিক সমকাল পত্রিকার শেরপুর জেলা প্রতিনিধি দেবাশীষ ভট্রাচার্যকে সভাপতি ও বাংলা ইনসাইডারের স্টাফ রিপোর্টার প্রতিনিধি মোঃ মেরাজ উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে শেরপুর প্রেসক্লাবের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি নির্বাচন করা হয়েছে।

 

এর আগে ক্লাবের বিপুল সংখ্যক সদস্যসহ জেলার প্রায় পৌনে দুইশ সাংবাদিকের উপস্থিতিতে ইতিপূর্বে সম্পূর্ন অনিয়মতান্ত্রিকভাবে গঠিত শেরপুর প্রেসক্লাবের কমিটি ক্লাবের স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম ও ব্যর্থতার অভিযোগে ক্লাবের সদস্যদের দাবীর মুখে শেরপুর প্রেসক্লাবের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়। এতে ক্লাবের দুই তৃতীয়াংশ সদস্য সর্বসম্মত সমর্থন প্রদান করেন।   

 

এর আগে বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে শেরপুরের প্রবীন সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযুদ্ধা আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় ভার্চুয়ালী যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন সংসদ উপ নেতা ও শেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেরপুর-১ সদর আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ছানুয়ার হোসেন, শেরপুর-৩ আসনের এমপি এডিএম শহিদুল ইসলাম, শেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান, শেরপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ রফিকুল ইসলাম, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুন্নাহার কামাল, জেলা জাসদের সভাপতি শেরপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন, শেরপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবিহা জামান শাপলা, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বায়েযীদ হাসানসহ আরো অনেকে।

 

এসময় বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান সরকার সাংবাদিকদের কল্যাণে নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্বাধীনভাবে খবর প্রচার করে আসছে। আমরা শেরপুরের সাংবাদিকদের কল্যাণে সব ধরনের সহযোগিতা করবো। আমি নতুন নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাই।’ 

 

আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সদস্যরা উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করে। পরে সর্বসম্মতিক্রমে উপদেষ্টা পরিষদের কাছে দায়িত্ব অর্পন করা হয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করার জন্য। উপদেষ্টা পরিষদ সভাপতি হিসেবে বিটিভি ও দৈনিক সমকালের শেরপুর জেলা প্রতিনিধি দেবাশীষ ভট্রাচার্যকে সভাপতি ও ইনডিপেনডেন্ট টিভির স্টাফ রিপোর্টার মেরাজ উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তাব করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত করা হয়। 


প্রেসক্লাব   নতুন কমিটি  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

প্রথম আলো বিক্রি: দর কষাকষিতে চারটি শিল্প গ্রুপ

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মিডিয়া স্টার লিমিটেডের মালিকানাধীন প্রথম আলো বিক্রির জন্য মালিকপক্ষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা প্রথম আলো বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের সাথে কথাবার্তা বলছেন। প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান নিজেই দু একটি শিল্প গ্রুপের সাথে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও মালিকপক্ষের অন্যরা সিমিন রহমান শাজরেহ হক দুজনই প্রথম আলো বিক্রির জন্য বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে আলাপ করছেন বলে জানা গেছে। 

বিষয়ে বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, প্রথম আলো বিক্রির জন্য যে দর হাঁকা হয়েছে সেটি অনেক বেশি এবং একারণে আলাপ আলোচনা শুরু হলেও দর কষাকষি চলছে বেশ ভালোভাবেই। সাবের হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন কর্ণফুলী গ্রুপ প্রথম আলো কিনতে আগ্রহী ছিল। কিন্তু প্রথম আলোর পক্ষ থেকে যে দাম চাওয়া হয়েছে সেই দামে কর্ণফুলী গ্রুপ প্রথম আলো কিনতে রাজি নয় বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। 


বিভিন্ন সূত্রগুলো জানিয়েছে, কর্ণফুলী গ্রুপের দর কষাকষির প্রেক্ষাপটে আরও কয়েকটি বড় বড় শিল্প পরিবার প্রথম আলো কেনার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছে এবং তারাও মিডিয়া স্টারের পরিচালকদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা শুরু করেছে। 

যে সমস্ত শিল্প গ্রুপ প্রথম আলো কেনার ব্যাপারে আগ্রহ উঠেছে তাদের মধ্যে এখন সবার শীর্ষে রয়েছে এস আলম গ্রুপ। এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এক সময় প্রথম আলোতে কর্মরত ছিলেন এবং তিনি মতিউর রহমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ প্রিয় ভজন হিসেবে পরিচিত। রাজনৈতিক ভাবেও তারা এক সময়ে কমিউনিস্ট রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার মাধ্যমেই এস আলম গ্রুপ এখন প্রথম আলো গ্রুপের সঙ্গে পত্রিকা বিক্রির বিষয়টি নিয়ে আলাপ আলোচনা শুরু করেছেন। 

প্রথম আলোর বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এখন এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তারা এই বিষয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে দর কষাকষি করছে বলে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। দর কষাকষিতে পিছিয়ে নেই দেশের অন্যতম শিল্প গ্রুপ স্কয়ারও। স্কয়ার গ্রুপের সঙ্গে প্রথম আলোর একটি আলাদা সম্পর্ক রয়েছে। মতিউর রহমানের সঙ্গে স্কয়ার গ্রুপের মালিক দুই ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে স্কয়ার গ্রুপের অর্থায়নে প্রতি বছর প্রথম আলো মেরিল প্রথম-আলো উৎসব করে থাকে, যেখানে তারকাদেরকে পুরস্কার দিয়ে প্রথম আলোর একান্ত অনুগত করে রাখা হয়। স্কয়ার গ্রুপের পক্ষ থেকেও পত্রিকাটি কেনার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে বলে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। 


উল্লেখ্য, স্কয়ারের মালিকানাধীন মাছরাঙা টেলিভিশন রয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্কয়ার গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার অঞ্জন চৌধুরী পত্রিকা কেনার ব্যাপারে প্রথম আলোর মালিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও একাত্তর টেলিভিশনের মালিক প্রতিষ্ঠান এমজিআই বা মেঘনা মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজও প্রথম আলো কিনতে আগ্রহী। এমজিআই অন্যতম দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং একাত্তর টেলিভিশনের মালিকানায় রয়েছে। তারা প্রথম আলো কেনার ব্যাপারে ইতোমধ্যে কথাবার্তা বলছে বলে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।

একাধিক সূত্র বলছে, প্রথম আলো বিক্রির জন্য যে দাম চাওয়া হচ্ছে সেটি অনেক বেশি। আর এ কারণেই এখন দর দামের বিষয়টি মূখ্য হয়ে উঠেছে। তবে প্রথম আলো যে শেষ পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে সেটি এখন পর্যন্ত মোটামুটি নিশ্চিত।

প্রথম আলো   স্কয়ার গ্রুপ   মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ   একাত্তর টিভি   মিডিয়া স্টার লিমিটেড  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

‘নিবন্ধনের জন্য আবেদনের বাইরে থাকা অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করা হবে’

প্রকাশ: ০৯:১৮ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেনে, সাংবাদিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আবেদনের বাইরে থাকা অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের ২১৩টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল আছে। এর বাইরে শুধু অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিবন্ধন আছে ২১৩টির। এই ৪২৬টির পাশাপাশি আরও কতগুলো নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে, ছাড়পত্রও হয়েছে। সেগুলোর একটি তালিকা আছে। এর বাইরে আরও কতগুলো আছে, যেগুলো আবেদন করেছে, প্রক্রিয়াধীন আছে, তবে ছাড়পত্র হয়নি। সব কটির তালিকা করতে বলা হয়েছে। এগুলো বিটিআরসিতে পাঠাতে বলা হয়েছে। এর বাইরে যতগুলো অনলাইন নিউজ পোর্টাল আছে, যেগুলো অনিবন্ধিত, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার দাবি ছিল সাংবাদিকদের। অনলাইন গণমাধ্যমের কমিটি, প্রেসক্লাবসহ অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনও একই দাবি করেছে। সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে’।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারপর নতুন করে যারা আবেদন করবে, তখন তা চালু হবে। আবেদন না করলে চালু হবে না। আবেদন করলে নিবন্ধন পাওয়ার আগপর্যন্ত চালু থাকবে। কারণ, তাকে চলতে হবে, দেখতে হবে যে কেমন হচ্ছে। তারপর যদি ছাড়পত্র না হয়, তখন আবার বন্ধ। কিন্তু আবেদন করল না, কোনো প্রক্রিয়ায় যায়নি, সেগুলো যদি চলে, সেখানে যদি অসত্য ও অপতথ্যের মাধ্যমের চকটদার খবর দেওয়া হয়, তাহলে সেই ধরনের সাংবাদিকতা পেশাদারির সঙ্গে যারা সাংবাদিকতা করছেন, তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই সাংবাদিকদের সুরক্ষার স্বার্থে, সাংবাদিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’।

এছাড়াও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জায়গাটি সমুন্নত রেখে অপতথ্য রোধ করতে চান বলে জানান মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকতার জন্য চমৎকার পরিবেশ তৈরি করতে চাই। তথ্যপ্রবাহকে অবারিত করতে চাই।’

গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন দ্রুত সময়ের মধ্যে পাস করার প্রত্যাশার কথা জানান তথ্য প্রতিমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান।



অনলাইন নিউজ পোর্টাল   তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী   মোহাম্মদ আলী আরাফাত  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

প্রথম আলো বিক্রি: কর্ণফুলী গ্রুপের সাথে আলোচনা শুরু?

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রথম আলো বিক্রির গুঞ্জন সত্য হিসেবে পল্লবিত হতে শুরু করেছে। প্রথম আলো বিক্রির জন্য দু’টি প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষ অনানুষ্ঠানিকভাবে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে। ট্রান্সকম গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ‘মিডিয়া স্টার লিমিটেড’ বিক্রির বিষয়টি নিয়ে পর্দার আড়ালে আলাপ-আলোচনা এবং দর কষাকষি শুরু হয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে, প্রথম আলোর সম্পাদক এবং প্রকাশক মতিউর রহমান যিনি মিডিয়া স্টার লিমিটেডের অন্যতম অংশীদারও বটে। তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের সঙ্গে প্রাথমিক আলাপ-আলোচনা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন সূত্র বলছে, মতিউর রহমানের আগ্রহ পত্রিকাটি সাবের হোসেন চৌধুরীর কাছে বিক্রি করা। সাবের হোসেন চৌধুরী এর আগেও তার মালিক ছিলেন।

মতিউর রহমান সাপ্তাহিক একতার সম্পাদক ছিলেন। কমিউনিস্ট পার্টির মালিকানাধীন পত্রিকাটি থেকে গ্লাসনোস্ট এবং পেরেস্ট্রোইকা পর সরে যান মতিউর রহমান। এরপর তিনি আজকের কাগজের বিশেষ প্রতিবেদক হিসেবে নাঈমুল ইসলাম খানের অধীনে যোগদান করেন। আজকের কাগজে যোগদানের পরে তিনি আজকের কাগজের ভাঙ্গন প্রক্রিয়া তরান্বিত করার চেষ্টা করেন। আজকের কাগজের তরুণ-উদ্দীপ্ত কর্মীবাহিনীকে কাজে লাগিয়ে তিনি নতুন করে একটি পত্রিকা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। সেই সময় তিনি পর্দার আড়ালে বর্তমান পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেন।

সাবের হোসেন চৌধুরীর সাথে তার চুক্তি ছিল আজকের কাগজের পুরো কর্মী বাহিনী নিয়ে তিনি আরেকটি নতুন পত্রিকা তৈরী করবেন। এবং সেই আলোচনার ফলশ্রুতিতেই আজকের কাগজে অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে এবং এক পর্যায়ে প্রয়াত কাজী শাহেদ আহমেদ পত্রিকার কর্তৃত্ব গ্রহণে বাধ্য হন। এসময় মতিউর রহমান সাবের হোসেন চৌধুরীর অর্থায়নে ‘ভোরের কাগজ’ প্রকাশের উদ্যোগ নেন। সেই সময় শাহবাগ থেকে ভোরের কাগজ প্রকাশের জন্য যে অফিস তা আজকের কাগজের ভাঙ্গনের বহু আগেই মতিউর রহমান নিয়েছিলেন।

মতিউর রহমান ‘আজকের কাগজ’ পত্রিকাতে গিয়েছিলেন পত্রিকা থেকে কর্মীদেরকে ভাগিয়ে নেওয়ার জন্য বলেও আজকের বাস্তবতায় প্রতিয়মান হয়। আজকের কাগজ থেকে ভোরের কাগজের জন্ম হওয়ার সময় প্রথমে এই পত্রিকার প্রকাশক ছিলেন নাঈমুল ইসলাম খান। এর পিছন থেকে অর্থ বিনিয়োগ করেন সাবের হোসেন চৌধুরী এবং কর্ণফুলী গ্রুপ।

প্রথম দিকে সাবের হোসেন চৌধুরী কাগজ পত্রে কোন মালিকানায় ছিলেন না। এরপর ঘটে নাটকীয় ঘটনা। নাঈমুল ইসলাম খানকে ভোরের কাগজ থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং সেখানেও সাংবাদিকদের কৌশলে ব্যবহার করেন মতিউর রহমান। মতিউর রহমান যেহেতু রাজনৈতিকভাবে অভিজ্ঞ। কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন সেকারণে তিনি আজকের কাগজের বিভাজন প্রক্রিয়া ভোরের কাগজে পুনঃপ্রয়োগ করেন এবং ভোরের কাগজের তরুণ সংবাদকর্মীদের উত্তেজিত করে নাঈমুল ইসলাম খানকেই ভোরের কাগজ থেকে সরিয়ে দিতে সফল হন।

এরপর ভোরের কাগজে পাদপ্রদীপে আসে কর্ণফুলী গ্রুপ এবং সাবের হোসেন চৌধুরীরা। তাদের প্রিন্টার্স লাইনে নাম প্রকাশিত হয়। ভোরের কাগজ যখন একটি মর্যাদার জায়গায় পৌঁছে গেছে এবং ভোরের কাগজ যখন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য নাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ঠিক সেই সময় নতুন করে ষড়যন্ত্র করেন মতিউর রহমান। তিনি ভোরের কাগজের কর্মীদের নিয়ে ট্রান্সকম গ্রুপের লতিফুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং ভোরের কাগজ থেকে সিংহভাগ কর্মীদের বের করে নিয়ে গিয়ে প্রথম আলো তৈরী করেন। যেটি ট্রান্সকম গ্রুপের মালিকানাধীন ছিল। শুধুমাত্র শ্যামল দত্ত ছাড়া ভোরের কাগজে উল্লেখযোগ্য আর কেউ থাকেননি। সবাই মতিউর রহমানের সাথে প্রথম আলোতে যোগদান করেন। অচিরেই ভোরের কাগজের জনপ্রিয়তা প্রথম আলো গ্রহণ করে। এখন মতিউর রহমান ট্রান্সকম গ্রুপের অভ্যন্তরীণ বিরোধ এবং মালিকানার দ্বন্দ্বের কারণে পত্রিকাটি অন্য মালিকের কাছে হস্তান্তর করতে চেষ্টা করছেন।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, প্রথম আলো বিক্রির পিছনে দুই বোনের বিরোধ থাকলেও প্রথম আলোকে ট্রান্সকম গ্রুপের থেকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে মূখ্য ভূমিকা রাখছেন মতিউর রহমান নিজেই। কারণ সামনের দিনগুলোতে সিমিন রহমান এবং শাজরেহ হক এর বিরোধ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে এ নিয়ে একটি অনিশ্চয়তা রয়েছে। আর একারণেই তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে আবার ফেরত যেতে চাইছেন। মতিউর রহমান ভোরের কাগজ থেকে বের হওয়ার পর কিছুদিন সাবের হোসেন চৌধুরীর সম্পর্কের শিথিলতা থাকলেও এখন তা আবার আগের মত হয়েছে বলে জানা গেছে।

একাধিক সূত্র বলছে যে, কর্ণফুলী গ্রুপের সঙ্গে মতিউর রহমানের পর্দার আড়ালের বৈঠক ফলপ্রসূ হলে মিডিয়া স্টারের বোর্ড সভায় প্রথম আলো বিক্রির বিষয়টি মতিউর রহমান নিজেই উপস্থাপন করতে পারেন।

তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, মিডিয়া স্টারের অন্যতম মালিক ট্রান্সকম গ্রুপের দুই বোন শেষ পর্যন্ত কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে পত্রিকা বিক্রি করবেন নাকি অন্য কোন বৃহত্তর শিল্প গ্রুপের কাছে পত্রিকাটি বিক্রি করবেন সেটি বোঝা যাবে আরও পরে।

প্রথম আলো   কর্ণফুলী গ্রুপ   ট্রান্সকম গ্রুপ  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

ট্রান্সকমের বিরোধ: বিক্রি হচ্ছে প্রথম আলো?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ট্রান্সকম গ্রুপের পারিবারিক বিরোধের কারণে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে—এমন গুঞ্জন এখন মিডিয়া পাড়ায়। বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে যে, মামলার সমঝোতা করতে গিয়ে দুই বোন একটি আপস ফর্মুলা আসার চেষ্টা করছে এবং সেই আপস ফর্মুলা অংশ হিসেবে তারা কিছু প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছেন। এই পরিকল্পনা যদি শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত হয় তাহলে প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যাবে। 

ট্রান্সকম গ্রুপের মালিকানাধীন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই দৈনিক পত্রিকাটিকে কেনার জন্য অন্তত দুজনের আগ্রহের কথা শোনা যাচ্ছে। এদের মধ্যে অন্যতম হল দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরা। অন্যজন হলেন বর্তমান পরিবেশ পরিবেশ এবং জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর কর্ণফুলী গ্রুপ। 

উল্লেখ্য, ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত লতিফুর রহমানের মৃত্যুর পর তাদের দুই বোনের বিরোধ এখন আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। গত পয়লা ফেব্রুয়ারি লতিফুর রহমানের ছোট মেয়ে শাজরেহ হক ট্রান্সকম গ্রুপের সিইও এবং তার বড় বোন সিমিন রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত, প্রতারণা এবং শেয়ার জালিয়াতের মামলা করেন। এই মামলায় তিনি তার মা, বোন, ভাগ্নে সহ আটজনকে অভিযুক্ত করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত, সম্পত্তি দখল এবং শেয়ার হস্তান্তরের অভিযোগ আনেন। এই অভিযোগ এখন তদন্ত করছে পিবিআই। 

অভিযোগে বলা হয়েছে, জাল জালিয়াতি করে শেয়ার হস্তান্তর করা হয়েছে। কোনো দলিলে তিনি সই করেননি। অথচ তার এবং ভাইয়ের নামে যে শেয়ার দেওয়া হয়েছে তার প্রায় দ্বিগুণ শেয়ার আছে সিমিনের নামে। এরপর ২২ মার্চ শাজরেহ হক আরেকটি মামলা করেন, যেখানে তিনি তার ভাইকে হত্যার অভিযোগ আনেন। এতে আসামি করা হয় বোন সিমিন রহমান এবং যারাইফ আয়াত হোসেনসহ ১১ জনকে। মাকে এই মামলার আসামি করেননি। 

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ১৬ জুন গুলশানের বাসায় নিজের শোবার ঘরে মারা যান সিমিন এবং শাজরেহের ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমান। তিনি নিঃসন্তান এবং তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল। আর এই হত্যা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে, সিমিন রহমান এবং অন্যরা যোগসাজশ করে তার ভাইকে হত্যা করেছে। আর এই মামলায় ইতিমধ্যে সিমিন রহমান আদালতে গিয়ে জামিন নিয়েছেন। 

পারিবারিক বিরোধের কারণে ট্রান্সকম গ্রুপের অবস্থা যখন টলটলয়মান ঠিক সেই সময় ট্রান্সকম নিয়ন্ত্রিত দেশের অন্যতম প্রভাবশালী দৈনিক প্রথম আলো বিক্রির গুঞ্জন উঠেছে। উল্লেখ্য, ট্রান্সকম গ্রুপের পরিচালক হিসাবে এখনও মেয়ে শাজরেহ হক রয়েছেন। পারিবারিক বিরোধের কারণে বিভিন্ন সম্পত্তিগুলো তারা ভাগ বাটোয়ারা করার চেষ্টা করছেন। আদালতের বাইরে এই বিরোধ মেটানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন মা শাহানাজ রহমান। তিনি দুই বোনের সঙ্গে কথা বলছেন এবং বিষয়টি মীসাংসা করার চেষ্টা করছেন। এমনকি সম্পত্তিগুলো ভাগ বাটোয়ারা করার ক্ষেত্রেও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম আলো বিক্রি হয়ে যেতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র আভাস দিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে প্রথম আলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কেউই কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

ট্রান্সকম গ্রুপ   প্রথম আলো  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন