২০০৭ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে ১/১১ প্রতিষ্ঠার অন্যতম কুশীলব প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান সম্প্রতি এর দায় এড়াতে বোল পাল্টানোর চেষ্টা করছেন। তিনি আজ শনিবার (৬ মে) ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে ১/১১-এর সরকারের দায় সশস্ত্র বাহিনীর উপর চাপনোর চেষ্টা করেছেন এবং এর মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরাজনীতিকরণের মাধ্যমে আবার একটি ১/১১ সৃষ্টির পায়তারা করছেন বলে জানিয়েছে সূত্র।
সূত্রটি বলছে, ২০০৭ সালের ১১ জুন প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত তার লেখার শিরোনাম ছিল, ‘দুই নেত্রীকে সরে দাঁড়াতে হবে’। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান সব সময়ই ছিলেন গণতন্ত্র বিরোধী। তার এই গণতন্ত্রবিরোধী অবস্থানের চিত্র বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে প্রকাশিত হয়েছে। ১/১১- এর সময়ে তার এই অবস্থান এবং আসল চেহারা সরূপে প্রস্ফুটিত হয়েছিল। সেই সময়ে তিনি দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে একটি গণতন্ত্রবিরোধী এবং ১/১১-এর সরকারের পক্ষে একটি লেখা লিখেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন দুই নেত্রীকে সরে যেতে হবে। অর্থাৎ ১/১১- এর সময়ে তিনি ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’র সপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বিরাজনীতিকরণের অন্যতম একজন উদ্যোক্তা বলেও জানিয়েছে একাধিক সংশ্লিষ্ট সূত্র।
সূত্রমতে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১/১১-এর সরকারকে মূল্যায়নের প্রশ্নে ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ২০০৭ সালে ১/১১-এর সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সরাসরি সশস্ত্র বাহিনীর হস্তক্ষেপের ফলে এবং যে দু’বছর ওই সরকার চলেছিল, তার প্রধান শক্তি ও ভিত্তিও ছিল সশস্ত্র বাহিনী। ওই সরকারের প্রধান দুটি লক্ষ্য ছিল, একটি হলো সঠিক ভোটার তালিকা তৈরি করা এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। আজকে ২০২৩ সালে এটা বলতে পারি যে, ১/১১ এর সরকার একটি সঠিক ভোটার তালিকা তৈরি এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করতে পেরেছিল, তাতে মানুষের অংশগ্রহণ ছিল, ১/১১-এর সরকার সফল হয়েছিল, এক্ষেত্রে।
মতিউর রহমানের এই বক্তব্য থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ১/১১-এর সরকার একটি সফল সরকার। দেশ পরিচালনা, নির্বাচন পরিচালনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই গণতন্ত্র বিরোধী ১/১১-এর সরকার একটি সফল সরকার। এই বক্তব্য থেকে এটাও প্রতীয়মান হয় যে, ২০০৭ সালে ঠিক যে ধরনের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সংবিধান বিরোধী, গণতন্ত্র বিরোধী একটি ১/১১-এর সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মতিউর রহমান গং ব্যক্তিরা। এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও ঠিক একই ধরনের আরেকটি ১/১১ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই এ ধরনের বক্তব্য রেখেছেন মতি।
প্রকৃতপক্ষে, ২০০৭ সালে ১/১১ প্রতিষ্ঠার অন্যতম কুশীলব মতিউর রহমান একটি তৃতীয় পক্ষের হাতে দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। বাংলাদেশের অন্যতম গণতান্ত্রিক দু’টি দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি’র প্রধান দুই নেত্রীকে মাইনাস করার সংস্কারেও ছিলেন এই মতিউর রহমান। তিনি তার ‘দুই নেত্রীকে সরে দাঁড়াতে হবে’- শিরোনামে একটি লেখায় সরাসরি দেশের প্রধান দুইটি দলের প্রধান দুই নেত্রীকে সরসরি অক্রমণ করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তার অবস্থান। কিন্তু ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এর দায় এড়াতে চেষ্টা করেছেন।
২০০৭ সালের ১১ জুন প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত ‘দুই নেত্রীকে সরে দাঁড়াতে হবে’-শিরোনামে তার লেখায় তিনি বলেছিলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রীর ভবিষ্যৎ নিয়ে আবার নতুন করে আলোচনা হচ্ছে। তারা কি দলের নেতৃত্ব ছেঁড়ে দেবেন, রাজনীতি থেকে অবসরে যাবেন, না স্বেচ্ছায় বিদেশে চলে যাবেন- এসব নিয়ে এখন অনেক আলোচনা ও লেখালেখি হয়েছে, এখনও হচ্ছে নানা মহলে। সর্বশেষ, গত সোমবার বিবিসির সংলাপে দুই দলের জেষ্ঠ্য নেতা বলেছেন, প্রয়োজনে দুই নেত্রীকে বাদ দিয়েই সংস্কার করতে হবে।
বিএনপি ও আওয়ামী লীগের গ্রেপ্তার হওয়া নেতাদের কাছ থেকে তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অবৈধ অর্থ-চাদা-সম্পত্তি সংগ্রহ এবং বাসে আগুন দেওয়া ও খুনের মামলা চাপা দেওয়াসহ বহু ব্যাপারে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তা এক কথায় অবিশ্বাস্য। ক্ষমতায় থেকে বা ক্ষমতার বাইরে গিয়ে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল দুটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের চাঁদা আর দুর্নীতির যে রূপ বের হয়ে আসছে, তা রীতিমতো ভয়ংকর। এসবের অনেক কিছুই আমরা জানতাম, সমাজে আলোচিত ছিল, তারপরও সত্য এত ভয়ংকর যে পত্রিকায় প্রকাশিত খবরগুলো সবাইকে যুগপৎ গভীরভাবে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। কিন্তু বেগম জিয়া বলেছেন, ‘আমার ও আমার পরিবার সম্পর্কে পত্রপত্রিকায় অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’ শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জীবনে কাউকে এক টাকাও দিতে বলিনি। কারও কাছে চাঁদা চাইনি।’ তবে দুই নেত্রীর এসব কথা কেউ বিশ্বাস করে না। এখন আমরা শুধু এটুকুই বলতে পারি। কিছুদিন আগে আইন ও তথ্য উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেছিলেন, দুই দলের নেতাদের পরামর্শ অনুযায়ীই সরকার দুই নেত্রীর ব্যাপারে কিছু পদক্ষেপ (দুই নেত্রীকে দেশের বাইরে পাঠানো) নিয়েছিল। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে পরামর্শদাতাদের নাম প্রকাশের অনুরোধ করা হয়। জবাবে মইনুল হোসেন পরামর্শদাতাদের নাম প্রকাশ না করে আবারও একই কথা বলেন। তবে তিনি বলেন, দুই নেত্রীকে দেশে রেখে বা দলের শীর্ষে রেখে সংস্কার করা যাবে কি যাবে না- এ ব্যাপারে দলের মধ্যে দুই রকম মত থাকতেই পারে। তিনি নাম প্রকাশ করেন আর না-ই করেন, তাঁর এ বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক ও সুধীমহলে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তবে এ কথাটি সত্য, বিএনপি ও আওয়ামী লীগে এমন অনেক নেতা, কর্মী রয়েছেন যারা দলের সংস্কার চান, পরিবারতন্ত্রের অবসান চান, দলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চান। তবে দুই নেত্রী দলের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকলে এসব কিছু হবে না বলে তারা মনে করেন। মাঠপর্যায়ের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যেও এ রকম মনোভাব রয়েছে। বিশেষ করে গত পাঁচ বছরে দুই দলের ভেতরে ও বাইরে বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনাও হয়েছে। দুই দলের বড়ো নেতারা এ রকম মতামত ব্যক্ত করেছেন অপ্রকাশ্যে। তাদের কাছ থেকেই আমরা এসব কিছু শুনেছি, জেনেছি। কিন্তু তারা এতদিন প্রকাশ্যে কিছু বলতে বা কোনো অবস্থান নেওয়ার সাহস দেখাতে পারেনি। তারা এখন কিছু কিছু কথা বলছেন।
তবে ভয়েজ অব আমেরিকার আজকের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ১/১১- এর সরকারের প্রধান যে দু’টি লক্ষ্য ছিল, একটি সঠিক ভোটার তালিকা তৈরি করা এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা, দুটোতেই তারা সফল হয়েছিলেন। তবে দেশ পরিচালনায়, অর্থনীতির ব্যবস্থাপনায় অনেক বড় বড় ভুল-ত্রুটি ছিল, অন্যায় কার্যক্রমও হয়েছিল, যেগুলো পরবর্তীতে সমালোচিত হয়েছে। সেসব পদক্ষেপ মানুষ গ্রহণ করতে পারেনি। ওই ভুলগুলো রাজনীতি, অর্থনীতি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতির কারণ হয়েছিল এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতিকর ফল বয়ে এনেছিল। আমরা দেখেছি, রাষ্ট্র বা সরকার পরিচালনায় সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ কোনো ভালো ফল বয়ে আনেনি, বিশ্বের অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতায়ও দেখি রাজনীতি বা সরকার পরিচালনায় সেনাবাহিনীর হস্তুক্ষেপ কোনো দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না, বরং নতুন নতুন সমস্যা তৈরি হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ভয়েজ অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মতিউর রহমান সেনা বাহিনী পরিচালিত সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিলেও ২০০৭ সালের ১১ জুন মাসে তার পত্রিকায় প্রকাশিত তার ওই লেখায় তিনি ১/১১-এর সরকারের পক্ষে স্তুতি গেয়ে দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেলের জেরার মুখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক দুই বড়ো দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং বড়ো ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য ও বক্তব্য থেকে দুই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির যেসব তথ্য বের হয়ে এসেছে, তাতে আবার প্রধান দুই নেত্রীর ভবিষ্যৎ নিয়ে আলচনা শুরু হয়েছে। এ কথা বেশ জোরেশোরে আলোচনা হচ্ছে যে, যারা দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছেন, যারা দলের জন্য ও নিজের জন্য বহু সম্পদ গড়ে তুলেছেন, যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হত্যা-খুনের সঙ্গে জড়িত, তাদের নেতৃত্বে রেখে দল বা দেশের জন্য কী লাভ হবে? ১৫ বছর ধরে সরকার ও বিরোধী দলে থেকে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব, বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা দেশকে প্রায় ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছেন। বিএনপির বিগত সরকার যারপরনাই ক্ষতি করেছে দেশের। ২২ জানুয়ারির নির্বাচন হলে দেশে আরও সর্বনাশ হতো। কোনোভাবে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তাদের আরও ভয়ংকর রূপ আমরা দেখতাম। আর কোনোভাবে আওয়ামী লীগ জিতে গেলে তারাও আগের রেকর্ড ভঙ্গ করত। তাঁর সব লক্ষণই দেখা যাচ্ছিল।
প্রকৃতপক্ষে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভয়েজ অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বোল পাল্টানোর চেষ্টা করেছেন। এ ধরনের বোল পাল্টানো মতিউর রহমানের নতুন কোনো বিষয় নয়। বিভিন্ন সময়ে তিনি নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে এবং একটি গোষ্ঠীকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে বহুবার বহু রকমের বোল পাল্টিয়েছেন। তবে এই সাক্ষাৎকারে তিনি নির্বাচনকালীন সময়ে ১/১১-এর সরকারকে সফল বলে মন্তব্য করেছেন। এবার আবার একটি ১/১১-এর সরকার প্রতিষ্ঠা বা অন্য কোন স্বার্থে নতুন করে বোল পাল্টিয়েছেন কি না মতিউর রহমান- সেটিই এখন দেখার বিষয়।
১/১১ বোল পাল্টানো মতিউর রহমান প্রথম আলো
মন্তব্য করুন
সাইবার নিরাপত্তা আইন সম্পাদক পরিষদ
মন্তব্য করুন
ভারতে ১৪ টিভি উপস্থাপককে বয়কট করল দেশটির বিরোধী দলগুলোর নতুন জোট ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডিভালাপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালাইয়েন্স বা ইন্ডিয়া। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে ইন্ডিয়া জোটের পক্ষ থেকে ওই ১৪ টিভি উপস্থাপকের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
দেশটির বিরোধী দলগুলো বিশেষত কংগ্রেস বরাবরই অভিযোগ করে আসছে, গণমাধ্যমের একটি অংশ তাদের সঙ্গে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো কর্মসূচিতেও মিডিয়া কাভারেজ নিয়ে এমন অভিযোগ ছিল কংগ্রেসের।
এ নিয়ে কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরা বলেছেন, অত্যন্ত বিষন্ন মন নিয়ে এটা করতে হচ্ছে। ইন্ডিয়া জোটের মিডিয়া কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে এই সিদ্ধান্তটি নিয়েছি। আমরা এসব উপস্থাপকদের বিরোধিতা করছি না। আমরা তাদের কাউকেই ঘৃণা করি না। কিন্তু আমরা আমাদের দেশকে বেশি ভালোবাসি। আমরা আমাদের ভারতকে ভালোবাসি।’
বুধবারই জোটের অন্যতম নেতা শারদ পাওয়ারের বাড়িতে ইন্ডিয়া জোটের সমন্বয় কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে এ নিয়ে আলোচনা হয়। ইন্ডিয়া জোটের মিডিয়া কমিটি একটি বিবৃতিতে বলেছে, কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শরিক দলগুলো এই অ্যাংকরদের অনুষ্ঠানে তাদের কোনো প্রতিনিধি পাঠাবে না। কারণ তাদের দাবি- এসব টিভি অনুষ্ঠানে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে।
এক্স (টুইটার) প্লাটফর্মে পবন খেরা একটা অডিও ক্লিপ পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, অত্যন্ত বিষন্ন মন নিয়ে আমরা একটা তালিকা তৈরি করেছি। আমরা নিশ্চিত যে, পরিস্থিতি ঠিকঠাক হবে। আশা করছি আগামী দিনে পরিস্থিতি ভালো হবে। যখন নতুন প্রজন্ম প্রশ্ন করবেন তখন অ্যাংকররা নিজেদের ভুল বুঝতে পারবেন। তখন তারা কী উত্তর দেবেন?
তিনি আরও জানিয়েছেন, উপস্থাপকদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু প্রতিদিন সন্ধ্যায় খবরের নাম করে যেভাবে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে তা নিয়েই আমাদের আপত্তি। প্রতি সন্ধ্যা থেকে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে। টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে গত ৯ বছর ধরে এটা চলছে। সে কারণেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ইন্ডিয়া জোট কয়েকজন উপস্থাপককে চিহ্নিত করেছে। সেই অনুষ্ঠানে আমাদের কোনো প্রতিনিধি যাবেন না।
তিনি বলেন, ওই ১৪ টিভি উপস্থাপক আমাদের বক্তব্যকে বিকৃত করেন। ভুয়া খবর ছড়ান। আমরা এটা সহ্য করতে পারতাম। কিন্তু এতে দেশে সহিংসতার মোড় নিতে পারে।
যাদের বয়কটের সিদ্ধান্ত হয়েছে তারা হলেন- রিপাবলিক টিভির অর্ণব গোস্বামী, টাইমস নাও নবভারতের নাভিকা কুমার, সুশান্ত সিনহা, আজ তকের সুধীর চৌধুরী ও চিত্রা ত্রিপাঠি, নিউজ ১৮ নেটওয়ার্কের আমন চোপড়া, আমিশ দেবগান, আনন্দ নরসিং, ভারত ২৪ এর রুবিকা লিয়াকত, ইন্ডিয়া টুডের গৌরব সাওয়ান্ত ও শিব আরুর, ইন্ডিয়া টিভির প্রাচি পরাশর, ভারত এক্সপ্রেসের অদিতি ত্যাগী ও ডিডি নিউজের অশোক শ্রীবাস্তব।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু
টিভি উপস্থাপক বয়কট ইন্ডিয়া জোট
মন্তব্য করুন
ইরানের দুই নারী সাংবাদিককে ষড়যন্ত্র এবং দ্বন্দ্বের অভিযোগে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলে তা কমিয়ে এক মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় মিডিয়া রোববার এ তথ্য জানায়। খবর আল অ্যারাবিয়া।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই নারী সাংবাদিক হলেন নেগিন বাঘেরি এবং এলনাজ মোহাম্মদী।
তাদের আইনজীবী আমির রাইসিয়ান জানিয়েছেন— আদেশ অনুযায়ী তাদের মোট সাজার চল্লিশ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ এক মাসেরও কম সময় জেলে থাকতে হবে।
আইনজীবী আরও জানান, তাদের সাজা পাঁচ বছরের জন্য স্থাগিত করা হয়েছে, এ সময়ে তারা তাদের পেশা সম্পর্কে নৈতিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবেন এবং দেশত্যাগ করতে পারবেন না।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে কিনা সে বিষয়ে রাইসিয়ান বিস্তারিত বলেননি এবং রিপোর্টে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্তারিত বিবরণও দেওয়া হয়নি।
মোহাম্মদীর বোন এলাহেও সাংবাদিকতা করতেন। পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া মাহসা আমিনীকে নিয়ে প্রতিবেদনের কারণে তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে।
২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পোশাক বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পর আমিনির মৃত্যু ঘিরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয় ইরানে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জেমকন
গ্রুপের চেয়ারম্যান, নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের আধুনিক
সাংবাদিকতার পথপ্রদর্শক দৈনিক আজকের কাগজের প্রকাশক ও সম্পাদক কাজী শাহেদ আহমেদ আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না
ইলাইহি রাজিউন)।
সোমবার
(২৮ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে
রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ
নিশ্বাস ত্যাগ করেন বিশিষ্ট এই
ক্রীড়া সংগঠক।
তার
বড় সন্তান কাজী নাবিল আহমেদ
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তিন ছেলে,স্ত্রী
সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
কাজী
নাবিল আহমেদ বলেন, আজ সন্ধ্যায় বাবাকে
হারিয়েছি। সবাই বাবার জন্য
দোয়া করবেন। এখনো জানাজার সময়
ঠিক করা হয়নি।
বিগত
কয়েক বছর ধরে কাজী
শাহেদ নানা রোগে ভুগছিলেন।
দেশে ও দেশের বাইরে
চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সকল চেষ্টা ব্যর্থ
করে আজ পৃথিবী ত্যাগ
করলেন এই কৃতি সংগঠক।
বাংলাদেশে
প্রকাশিত খবরের কাগজে আজকে যে আধুনিকতার
উপস্থিতি, তার শুরুই হয়েছিল
কাজী শাহেদ আহমেদের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘আজকের কাগজ’ পত্রিকার হাত ধরে; যা
তৎকালীন মুক্তমত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা
বাস্তবায়নেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
কাজী
শাহেদ আহমেদ ১৯৪০ সালের ৭
নভেম্বর যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। ইঞ্জিনিয়ারিং পাসের পর তিনি ১৪
বছর সেনাবাহিনীতে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ
মিলিটারি অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাকালীন প্লাটুন কমান্ডারদের একজন তিনি।
১৯৭৯
সালে ‘জেমকন গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তার
ব্যবসায়ী জীবন শুরু। তিনি
ছিলেন ‘খবরের কাগজ’ ও ‘আজকের কাগজ’-এর প্রকাশক ও
সম্পাদক। বাংলাদেশে প্রথম অর্গানিক চা বাগানের প্রতিষ্ঠাতাও
তিনি। এছাড়াও তার রয়েছে অসামান্য
কিছু অলাভজনক উদ্যোগ। এর মধ্যে আছে
ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস
বাংলাদেশ (ইউল্যাব) ও কাজী শাহেদ
ফাউন্ডেশন।
সাহিত্য
পরিমণ্ডলেও কাজী শাহেদ আহমেদ
সুপরিচিত। তার প্রথম গ্রন্থ
‘আমার লেখা’ প্রকাশিত হয় ১৯৯৫ সালে।
সে বছরই ‘ঘরে আগুন লেগেছে’
নামে তার দ্বিতীয় বই
প্রকাশিত হয়। ২০১৩ সালে
৭৩ বছর বয়সে তিনি
রচনা করেন তার প্রথম
উপন্যাস ‘ভৈরব’। আত্মজীবনী
‘জীবনের শিলালিপি’ প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে।
একই বছর প্রকাশিত হয়
উপন্যাস ‘পাশা’। ২০১৭
সালে প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘দাঁতে
কাটা পেনসিল’। ২০১৮ সালে
প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘অপেক্ষা’। ইতোমধ্যে ইংরেজিতে
অনূদিত হয়েছে ‘ভৈরব’।
মন্তব্য করুন
অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরের পর থেকে এই প্রতিবেদন লেখার সময় (সোয়া ৫টা) পর্যন্ত ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করা যায়নি। সাইটটি ব্রাউজ করতে গেলে সেখানে কোনো কনটেন্ট দেখা যাচ্ছে না, পুরোটা ফাঁকা দেখাচ্ছে। নিচে শুধু ‘প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক: তৌফিক ইমরোজ খালিদী’ লেখাটি আসে।