ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

লন্ডন ষড়যন্ত্র


প্রকাশ: 25/12/2021


Thumbnail

বর্তমান সরকারকে উৎখাত, আগামী নির্বাচন বানচাল এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্টে এক সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র চলছে লন্ডনে। এই ষড়যন্ত্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। তার সঙ্গে রয়েছে জামায়াত, যুদ্ধাপরাধী এবং আরো কিছু অপশক্তি। বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে লন্ডন ষড়যন্ত্রের চাঞ্চল্যকর সব তথ্য পাওয়া গেছে। এ ষড়যন্ত্রের পাঁচটি ধাপ রয়েছে বলে অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে।

প্রথম ধাপে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে বাংলাদেশ সরকার, রাষ্ট্র এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সম্বন্ধে লাগাতার অপপ্রচার করা হচ্ছে এবং এসমস্ত অপপ্রচার গুলোকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, বুস্ট করা হচ্ছে যেন বাংলাদেশের মানুষের কাছে এ বার্তা গুলো পৌঁছে যায় এবং সাধারণ মানুষ যেন সরকার সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর ধারণা পায়।

দ্বিতীয় ধাপে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে নানা রকম বানোয়াট, বিকৃত এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য উপাত্ত সরবরাহ করা হচ্ছে। এই সমস্ত মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে নিয়মিত অর্থ দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সহ একাধিক মানবাধিকার সংগঠনকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ভাড়া করা হয়েছে বলেও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। আর এই ভাগে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. কামাল হোসেনের জামাতা ডেভিড বার্গম্যান।

তৃতীয় ধাপে রয়েছে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা এবং বাংলাদেশে মানবাধিকার, গণতন্ত্র, গণমাধ্যমে স্বাধীনতা ইত্যাদি সম্পর্কে নানা রকম বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে ওই দেশগুলোকে বাংলাদেশে বিরোধী অবস্থানে টেনে নিয়ে আসা। ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ২৬টি অভিযোগ করা হয়েছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, যে সমস্ত অভিযোগের অধিকাংশই অসত্য, ভিত্তিহীন, মিথ্যা। সেই সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি বাংলাদেশের সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এছাড়াও বাংলাদেশকে তাদের গণতন্ত্রের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায়নি। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যেও সরকারের কাছে এ ধরনের অভিযোগ প্রতিনিয়ত দেয়া হচ্ছে। একটি টিম বানানো হয়েছে, যে টিমের কাজ হলো বাংলাদেশে কোন ঘটনা ঘটলেই সঙ্গে সঙ্গে সেটির উপর আরো কিছু তথ্য বিকৃত করে একটি পিটিশন দাখিল করা এবং এ ধরনের প্রতিনিয়ত পিটিশন দাখিলের মাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করা।

চতুর্থ ধাপে সুশীল সমাজের মধ্যে প্রভাব বিস্তার। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মাধ্যমে সুশীল সমাজ নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশি এনজিও গুলোকে অর্থায়ন করা হচ্ছে এবং যে অর্থায়নের মাধ্যমে সুশীল সমাজ গুলো বাংলাদেশের সুশাসন, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে নানারকম রিপোর্ট দিচ্ছে। এরকম অন্তত পাঁচটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পাওয়া গেছে, যে সমস্ত সংগঠনগুলো তারেক জিয়ার টাকা পরোক্ষভাবে পাচ্ছে। এই টাকা পাঠানোর চেইনটি হচ্ছে, প্রথমে একটি আন্তর্জাতিক সংগঠনের কাছে যেমন- ধরা যাক, হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে তারেক জিয়া অর্থায়ন করছেন, সেই অর্থায়নের টাকা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আবার অধিকারকে প্রদান করেছে মানবাধিকার সুরক্ষার নামে।

পঞ্চম ধাপে, বাংলাদেশের নির্বাচন বানচাল করা। ষড়যন্ত্রের প্রধান লক্ষ্য হলো যে, ২০২৩ সালে যে নির্বাচন হবে সে নির্বাচনের ব্যাপারে যেন পশ্চিমা দেশগুলো নেতিবাচক অবস্থান গ্রহণ করে এবং ওই নির্বাচনে সমর্থন না দেয়। ফলে বাংলাদেশে যেন নির্বাচন না হয়। তবে ষড়যন্ত্রের অন্য আরেকটি দিক আছে। লন্ডন ষড়যন্ত্রের প্রধান লক্ষ হলো সরকারকে উৎখাত করা এবং সেই উৎখাতের জন্য জঙ্গি এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গেও সমান্তরালভাবে সম্পর্ক তৈরি করা হচ্ছে। অর্থাৎ লন্ডন ষড়যন্ত্রে একদিকে যেমন বিভিন্ন মহলে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার করা হচ্ছে, বাংলাদেশবিরোধী তথ্য দেয়া হচ্ছে এবং বাংলাদেশেরবিরোধী অবস্থান নেয়ার জন্য প্ররোচিত করা হচ্ছে অন্যদিকে তেমনি বাংলাদেশে সন্ত্রাস এবং নাশকতা সৃষ্টির জন্য জঙ্গি এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে অর্থায়ন করা হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের ডালপালা ক্রমশ বিস্তৃত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এই ষড়যন্ত্র আরো ভয়ঙ্কর রূপ গ্রহণ করতে পারে বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭