কক্সবাজার বেড়াতে এসে গণধর্ষণের স্বীকার ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও তার স্বামী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। গত শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হামীমুন তানজিনের আদালতে তারা জবানবন্দি দেন।
এদিকে জিয়া গেস্ট ইন হোটেল ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ রিয়াজ উদ্দিনকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হামীমুন তানজীনের আদালতে তুলে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। বিচারক শুনানি শেষে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমান জানান, নারী পর্যটককে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার হোটেল ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিনকে মামলা তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। তাই তাকে রিমান্ডে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, মামলাটির তদন্ত গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হচ্ছে। ধর্ষণের ঘটনায় শনাক্ত মূল আসামি আশিক, বাবু, জয়সহ আরও যারা জড়িত তাদের গ্রেফতারে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারে আলোচিত নারী পর্যটক ধর্ষণ মামলাটি থানায় রুজু হওয়ার পর তদন্ত করার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশকে দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ ভিকটিম নারীকে মেডিকেল পরীক্ষা করায়। আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে। আমরা চাই আসল ঘটনা উদঘাটিত হোক এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত হোক।
উল্লেখ্য, ২২ ডিসেম্বর রাতে স্বামী-সন্তান নিয়ে কক্সবাজার আসা এক নারী পর্যটক ধর্ষণের শিকার হন। ধর্ষণের শিকার নারীর ভাষ্য, স্বামী-সন্তান নিয়ে এসে ওঠেন শহরের হলিডে সি-ল্যান্ডের ২০১ নম্বর কক্ষে। ওই দিন বিকালে স্বামী-সন্তানকে নিয়ে লাবণী বিচে যান তিনি। রাতে হোটেলে ফেরার পথে এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগে। এতে স্বামীর সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে ওই যুবক। বাধা দিলে ওই যুবক তার সঙ্গেও তর্কে জড়ায়। এ সময় আরও দুই যুবক ঘটনাস্থলে এসে হাজির হয়। তারা স্বামী-সন্তানকে ইজিবাইকে তুলে দিয়ে ওই নারীকে আলাদা করে ফেলে। পরে ওই এলাকার একটি ঝুপড়ি ঘরে নিয়ে তিনজনে ওই নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এরপর স্বামী-সন্তানকে হত্যার ভয় দেখিয়ে তাকে শহরের জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেলে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার নারীর স্বামী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন। আশিকুল ইসলাম আশিক, ইসরাফিল হুদা জয়, মেহেদী হাসান বাবু ও রিয়াজ উদ্দিন ছোটনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও দুই-তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলাটি করা হয়েছে।