ইনসাইড বাংলাদেশ

৭ কর্মকর্তার নিষেধাজ্ঞা: অসত্য তথ্য দিয়েছে তিন এনজিও


প্রকাশ: 26/12/2021


Thumbnail

বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে আহ্বান জানানো হয়েছে। এই আহবানের প্রেক্ষিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর পুরো বিষয়টি পুনঃনিরীক্ষা করছে এবং এর পুনঃনিরীক্ষা করতে যেয়ে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। সাত কর্মকর্তার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় একরামুল হক নামের একজন কক্সবাজারের পৌর কাউন্সিলরের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয় এবং এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মার্কিন প্রশাসনের মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট উইং বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশনকে প্রথম চিঠি লেখে। কিন্তু বাংলাদেশে মানবাধিকার কমিশন এ ব্যাপারে কোনো জবাব দেয়নি।

উল্লেখ্য যে, ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর এই ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে চিঠি দিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। কিন্তু সেই চিঠির কোন জবাব জাতীয় মানবাধিকার কমিশন দেয়নি। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তিনটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান এবং তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছিলো অধিকার, আইন সালিশ কেন্দ্র এবং ব্লাস্ট। এর মধ্যে ব্লাস্ট শুধুমাত্র সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিবেদন দিয়েছে। সংবাদপত্রের সূত্র হিসেবে তারা প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারকে নিয়েছে। অধিকার এ ব্যাপারে তাদের নিজস্ব উদ্যোগে অনুসন্ধান করেছে এবং অনুসন্ধান করে এই ঘটনার সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জড়িত আছে বলে জানিয়েছে। মূলত অধিকারই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে সাত কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করেছে।

কিন্তু প্রশ্ন হলো যে, ওই ঘটনা যখন ঘটে তখন র‍্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন পুলিশের বর্তমান আইজি বেনজীর আহমেদ। তাকে যদি দায়ী করা হয় তাহলে র‍্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক কিভাবে অভিযুক্ত হন। কারণ, একসঙ্গে দুজন র‍্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেননি। অর্থাৎ পুরো বিষয়টি ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাছাড়া এই ঘটনার পর র‍্যাবের পক্ষ থেকে এটি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো, যে তদন্ত কমিটির কথাও আইন সালিশ কেন্দ্র, অধিকার বা ব্লাস্ট উল্লেখ করেনি। এর ফলে পুরো বিষয়টিতে একতরফাভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

যে সাত জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, এই সাতজন কর্মকর্তার নামই দিয়েছে অধিকার নামের একটি এনজিও। যে এনজিওটি ২০১৩ সালে হেফাজতের তাণ্ডবের সময় ভুল তথ্য দিয়েছিল এবং হেফাজতের প্রচুর কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রতিবেদন দিয়েছিল। ওই সংগঠনের প্রধান অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান, তিনি একজন বিএনপিপন্থী আইনজীবী এবং বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করতেন। মূলত অধিকার পরিচালিত হয় বিএনপি-জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায়। এনজিও ব্যুরোর মাধ্যমে অর্থ নিয়ে তারা বিভিন্ন সূত্র থেকে বৈদেশিক অর্থ গ্রহণ করে এ ধরনের অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে আইন ও সালিশ কেন্দ্র শুধুমাত্র কাউন্সিলর একরামুলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলি প্রতিবেদন দিয়েছে। পুরো নিষেধাজ্ঞার প্রক্রিয়াটি হয়েছে তিনটি এনজিওর ভুল তথ্যের ভিত্তিতে। অথচ বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টরা যদি এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতেন এবং সঠিক তথ্য দিতেন তাহলে এই ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হতো না বলেই সংশ্লিষ্ট মনে করেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭