ইনসাইড বাংলাদেশ

অযাচিত ইস্যুতে বিব্রত সরকার


প্রকাশ: 27/12/2021


Thumbnail

সরকারের কোন দায় নেই, সরকার এই ঘটনাগুলো সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত নয়। তারপরও এইসব ইস্যু সরকারের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। বিভিন্ন ঘটনায় সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে অস্বস্তি বাড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে লঞ্চে আগুন লেগে প্রায় ৪০ জন মানুষের মৃত্যু কিংবা কক্সবাজারে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর ঘটনাগুলো জনমনে চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। আর এই সমস্ত ইস্যুগুলো সরকারকে কিছুটা হলেও বিব্রত করেছে। অথচ এই সমস্ত ইস্যুর সাথে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। সরকার এই সমস্ত ঘটনার ক্ষেত্রে কোনভাবেই যুক্ত না হলেও এ ধরনের ঘটনার দায়গুলো সরকার ওপর পড়ছে। আর এভাবে ক্রমশ সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। তৃতীয় মেয়াদে এসে একের পর এক নানা রকম প্রতিকূল পরিস্থিতি সরকারকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে। তৃতীয় মেয়াদে দুই বছরই গেছে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য। আর এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সরাকর অর্থনীতিকে সফলভাবে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু ইস্যু সরকারের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে এই বছরের শুরুতে ছাত্রলীগের বিভিন্ন রকম উচ্ছৃঙ্খল আচরণ এবং সে কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়া সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে। সেটির সাথে তাও আওয়ামী লীগ বা দলের কিছু সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিন্তু অতিসম্প্রতি যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তাতে সরকারের কোনো রকম দায় নেই। তারপরও বিষয়গুলোর কারণে সরকার সমালোচিত হচ্ছে। সরকারের একাধিক মন্ত্রী বলেছেন যে, যেকোনো ঘটনা ঘটলেই সরকারের ওপর দায় চাপানোর একটি নতুন কৌশল শুরু হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হলো সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।

সাম্প্রতিক সময়ে যে লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে সেই ঘটনাটি দুঃখজনক। কিন্তু এ ধরনের ঘটনায় সরকারের দায় কতটুকু সেই প্রশ্ন তুলেছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। তবে বিরোধী পক্ষ বলছে, অবশ্যই সরকারের দায় আছে। কারণ এ ধরনের লঞ্চ পরিবহনের ক্ষেত্রে অগ্নি নির্বাপক সহ যে সমস্ত নীতিমালা মেনে চলা উচিত সেই সমস্ত নীতিমালা মানা হয়নি, সেটি দেখার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু বাংলাদেশ তো বটেই কোন দেশের সরকারই এত খুঁটিনাটি বিষয়ের দিকে নজর রাখতে পারে বলে কেউ মনে করে না। কিন্তু এই ঘটনার পর অনেকেই সরকারের দিকে আঙুল তুলছেন। তবে সাধারণ মানুষ এখনো মনে করে যে, লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনার পর সরকার যা যা করা দরকার সবই করেছে। তদন্ত কমিটি করেছে, নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত লঞ্চ মালিক সহ তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কিন্তু তারপরও সাধারণ মানুষ এটিকে নেতিবাচকভাবে নিচ্ছে বলে বিভিন্ন মহল মনে করছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজারে এক গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনা এবং তার সূত্র ধরে আরো কিছু ধর্ষণের ঘটনা সরকারের জন্য একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করছে। এ ধরনের ঘটনা কেন, কীভাবে ঘটছে, সরকারের নজরদারির অভাব কতটুকু সে নিয়েও নানারকম প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এটি একটি সামাজিক অপরাধ এবং আমাদের যে সামাজিক অবক্ষয়ের সেই অবক্ষয়ের ধারায় এ ঘটনাগুলো ঘটছে। কিন্তু তারপরও বিভিন্ন মহল মনে করে, এই বিষয়গুলোর দিকে সরকারের সজাগ দৃষ্টি রাখা দরকার। কারণ, এটি একটা আইনশৃঙ্খলা জনিত সমস্যা এবং এ ধরনের সমস্যা সমাধানে সরকারের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। সরাসরিভাবে সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকার পরও এ ধরনের ইস্যুগুলোর চাপ সরকারের ওপর বাড়ছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭