ইনসাইড পলিটিক্স

তারেকের পরের টার্গেট রিজভী?


প্রকাশ: 27/12/2021


Thumbnail

রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব। বিএনপিতে যারা ত্যাগী, পরীক্ষিত এবং আদর্শের প্রতি অনুগত রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে রুহুল কবির রিজভী অন্যতম। বেগম খালেদা জিয়ার অন্ধ অনুসারী বিএনপির এই নেতা বিভিন্ন দুঃসময়ে দলের প্রতি যথেষ্ট আনুগত্যের পরিচয় দিয়েছেন এবং দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীদেরকে উজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে প্রশংসিত হয়েছেন। বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর তিনি টানা দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান করে আলোচিত হয়েছেন। রুহুল কবির রিজভীকে অনেকে বিএনপির একগুঁয়ে নেতা মনে করেন। অনেকে মনে করেন যে, তারা কথাবার্তা অনেকটাই উস্কানিমূলক কিন্তু তারপরও বিএনপিতে তার জনপ্রিয়তা ঈর্ষনীয়।

বিশেষ করে ওয়ান-ইলেভেনের সময় রুহুল কবির রিজভী পাদপ্রদীপে আসে। যদিও বিএনপি দুই দফা ক্ষমতায় ছিল, সেই দুই দফা ক্ষমতায় রিজভীকে আলোচনায় দেখা যায়নি। মন্ত্রী তো দূরের কথা, এমপি পর্যন্ত হননি এই সাবেক ছাত্রনেতা। কিন্তু যখনই বিএনপি সঙ্কটে পড়েছে তখনই ত্রাতা হিসেবে রিজভী আবির্ভূত হয়েছেন। এজন্য তিনি নির্যাতনও কম ভোগ করেননি। কিন্তু এসব নির্যাতন উপেক্ষা করেই বিএনপির আদর্শের প্রতি অবিচল থেকেছেন। এ কারণে দলের কর্মীদের মধ্যে একটা আলাদা শ্রদ্ধা রয়েছে তার ওপর। সেই রিজভী এখন তারেকের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছেন।

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, রুহুল কবির রিজভীকে ‘বকবকানি’ কমানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তারেক জিয়া। না হলে তার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তাকে সতর্ক করা হয়েছে। রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে তারেকের বৈরিতা নতুন নয়। দলের কর্মীদের কাছে নিরঙ্কুশ জনপ্রিয়তার কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু তারেক জিয়া এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তার অন্ধ অনুসরণ না করলে এবং তাঁর আনুগত্য স্বীকার না করলে কেউই এখন বিএনপি করতে পারবে না, এরকম বার্তা তিনি সুস্পষ্টভাবে দিচ্ছেন। যার প্রমাণ হিসেবে তারেক জিয়া নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ একাধিক জনপ্রিয় নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। সেই ধারায় পরবর্তী টার্গেট রুহুল কবির রিজভী বলেই অনেকে মনে করছেন।

বেশ কিছুদিন ধরে রিজভীর সঙ্গে ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈরিতার খবর পাওয়া যায়। বিশেষ করে ফখরুল ইসলাম আলমগীর যেকোনো ইস্যুতে যেভাবে কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী তার চেয়ে ভিন্ন ধরনের কথা বলেন -এটি নিয়ে বিএনপি'র মধ্যে প্রথমে অস্বস্তি ছিলো কিন্তু এখন সবাই মেনে নিয়েছেন। রুহুল কবির রিজভী স্পষ্টবাদী এবং আগ্রাসী ভাষায় কথা বলেন। আর অন্যদিকে ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমঝোতামূলক কথাবার্তা বলেন। আর যতই বিএনপি আন্দোলনের দিকে যাচ্ছে ততই রিজভীর জনপ্রিয়তা বিএনপিতে বাড়ছে, অন্যদিকে ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে। এরকম অবস্থায় তারেক-ফখরুল জুটি রিজভীর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ইতিমধ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তারেক জিয়ার বরাত দিয়ে রহুল কবির রিজভীকে জানিয়েছেন যে, কোনো বিষয়ে বক্তব্য দিতে গেলে আগে মহাসচিবকে অবহিত করতে হবে। কিন্তু মহাসচিবকে অবহিত না করেই রুহুল কবির রিজভী আজ আবার বক্তব্য দিয়েছেন এবং এই বক্তব্যের পর তারেক জিয়া তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের বক্তব্য না রাখার জন্যও তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। বিভিন্ন সূত্র মনে করছে যে, রুহুল কবির রিজভী তারেক জিয়ার অনুগত নন, তিনি খালেদা জিয়ার অনুসারী। এজন্যই খালেদা জিয়ার অন্যান্য অনুসারীদের মত রিজভীরও ভাগ্যে এক করুণ পরিণতি আসতে পারে। আর এটিরই পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে রুহুল কবির রিজভীকে সতর্ক করার মধ্য দিয়ে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭