ইনসাইড পলিটিক্স

মানবিক বিবেচনার প্রশ্ন কেন আবার উঠবে: আইনমন্ত্রী


প্রকাশ: 30/12/2021


Thumbnail

বেগম খালেদা জিয়ার বিষয়ে করা আবেদন নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। এখন নতুন করে ওই আবেদন বিবেচনার সুযোগ নেই। তাকে আইন অনুযায়ী জেলে গিয়েই আবেদন করতে হবে, এটাই আইনের কথা। তাঁর চিকিৎসা ও মুক্তি নিয়ে এতো কিছু করার পরও ‘মানবিক বিবেচনার’ প্রশ্ন কেন আবার উঠবে, এনিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। 

বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিদেশি গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ওভারসিজ করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী আদেশে তাকে (খালেদা জিয়াকে) মানবিক বিবেচনায় সাজা স্থগিত করে মুক্তি দিয়েছেন। মানবিক বিবেচনা তো সেখানে হয়ে গেছে। আজ এ প্রশ্ন উঠবে কেন? এতো কিছু করার পরও কেন আবার এ প্রশ্ন উঠবে যে, আমরা মানবিক হচ্ছি না। আমি যেটা বলেছি, সেটা আইনের দিক থেকে বলেছি। এখন মানবিকতা দেখাতে গেলেও আমাকে আইনেই যেতে হচ্ছে।

খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন করে করা আবেদনে আইনের কোনো ধারা উল্লেখ ছিল না। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারায় শর্তযুক্ত বা শর্তমুক্ত মুক্তির বিষয়টি ছিল। সেই যে দরখাস্ত সেটি নিয়ে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তযুক্ত ছিল বলে জানান আইনমন্ত্রী। 

আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাহী আদেশে অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তিতে শর্ত ছিল, বেগম জিয়াকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। বাসায় থাকতে হবে, হাসপাতালে যেতে পারবেন না এমন না। তিনি কিন্তু হাসপাতালে আছেন। তারপরও কিন্তু এখন নতুন করে করা আবেদনে সেটি উল্লেখ করা হয়নি। এখন কথা হলো, সরকার তো আগের আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন। এখন কি নিষ্পত্তি হওয়া আবেদন আবারও পুনর্বিবেচনা করা যায়।

আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী দণ্ড স্থগিত রেখে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সুযোগ দিয়েছেন, এটা কি মানবিক বিবেচনা নয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারায় দণ্ড স্থগিত রেখে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কিন্তু মানবিক দিকটাই বিবেচনা করেছেন। 

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একজনের দুর্দিন যদি আরেকজনের আনন্দের দিন হয় তবে সেটা স্তিমিতভাবে পালন করা উচিত। দেখুন, এটা স্বীকৃত যে আমরা যে সমাজে বাস করি, সমাজের একটা স্ট্রাকচার আছে, আমরা খুব ভালো করেই জানি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৫ আগস্ট হত্যা করা হয়েছে। এটাও প্রমাণিত যে, বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন ১৫ আগস্ট পালিত হয়। এটা কাকে কোন বিষয়টাকে কটাক্ষ করা? বিষয়টা কতো ইম্পোর্টেন্ট সেটা আপনারা বিবেচনা করেন। এটা কোন দিনটিকে কটাক্ষ করে পালন করা হয়, সেটি আপনারাই বিবেচনা করবেন।

তিনি বলেন, আমি মনে করি কথাগুলোই ফ্যাক্ট। প্রধানমন্ত্রী একজন মা হিসেবে একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে (আরাফাত রহমান কোকো) যখন মারা যান তখন তার বাসায় গিয়েছিলেন। যতোই শত্রুতা থাকুক, যতোই পলিটিক্যাল পার্থক্য থাকুক, তার মুখের ওপর বাড়ির গেট সেদিন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এটা কি মানায়?

আইনমন্ত্রী বলেন, সেই অবস্থান থেকেও প্রধানমন্ত্রী মানবিক দিকে বিবেচনা করেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দিয়েছেন। এরপরও মানবিক বিবেচনার প্রশ্ন কেন উঠবে।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জানান, আইনের বাইরে গিয়ে খালেদা জিয়ার প্রতি আর মানবিক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কোনো সাংবাদিকের নামে মামলা হলে সাথে সাথে তাকে গ্রেফতার করা যাবে না। তদন্তের পর নিতে হবে মামলা। নির্বাচন কমিশন গঠন আইন করাও উচিত। তবে সে আইন করতে দীর্ঘ সময় লাগবে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাগারে যান। প্রথম ১১ মাস ছিলেন পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে। কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে উচ্চ আদালতের নির্দেশে চিকিৎসার জন্য তাকে নেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি পান সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭