ইনসাইড বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রে এবার নিষিদ্ধ হচ্ছেন বেশ কয়েকজন আমলা


প্রকাশ: 30/12/2021


Thumbnail

বাইডেন প্রশাসন দুর্নীতিবিরোধী একটি অভিযোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই অভিযানের অংশ হিসেবে তিনি নতুন একটি নীতিমালা জারি করেছেন। যে নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিদেশ থেকে যারা নগদ অর্থে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ সম্পদ বাড়ি-ঘর বানাবেন, তাদের সম্পদের হিসেব দিতে হবে এবং সম্পদের হিসেব যদি তারা না দিতে পারেন তাহলে তাদের সেই সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, বিশ্বব্যাপী দুর্নীতি প্রতিরোধে এটি জো বাইডেন প্রশাসনের একটি নতুন উদ্যোগ। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নগদ অর্থে যারা ঘরবাড়ি স্থাবর সম্পত্তি কিনেছেন তাদের ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন সূত্রে বলা হচ্ছে যে, এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী যারা দুর্নীতির টাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে এসে সম্পদ বানিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এই অবস্থানের কারণে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি আমলা ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় এটর্নিদের সূত্র থেকে বলা হচ্ছে যে, এই অভিযান পরিচালনা হলে বাংলাদেশের অনেক বড় বড় রাঘববোয়ালরা ঝুঁকির মুখে পড়বেন এবং তাদেরকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে হতে পারে। ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ পাচার এবং নগদ অর্থে ঘরবাড়ি কেনা শুরু হয়। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রবণতা শুরু এবং ২০০৬ সাল পর্যন্ত তা মহামারী আকার ধারণ করে। অনেকে মনে করতেন যে, রাজনীতিবিদরা বোধহয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাড়িঘর বা স্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। কিন্তু এখন বাইডেন প্রশাসনের নতুন নীতির পর এই পর্যন্ত যে অভিযান পরিচালিত হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে, রাজনীতিবিদদের সংখ্যা খুব সামান্যই। এই রাজনীতিবিদদের মধ্যে যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘর বাড়ি বানিয়েছেন তারা পারিবারিকভাবে তাদের আত্মীয়-স্বজন বা ছেলে মেয়েরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থেকে আইনকানুন মেনে ব্যাংকের সহায়তায় বাড়িঘর বানিয়েছেন। খুব হাতে গোনা দুই একজন রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ রয়েছে, যারা নগদ অর্থের জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদের মালিক হয়েছেন।

তবে আমলাদের দেশ সংখ্যা অনেক বেশি। ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক কর্মকর্তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে নগদ অর্থে বাড়ি করেছেন। এরা এবার ফেঁসে যাবেন বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এটর্নিরা মনে করছেন। তারা মনে করছেন যে, যারা নগদ অর্থের বাড়িঘর করেছেন তাদের অর্থের উৎস সম্পর্কে বলতে হবে। যদি তারা অর্থের উৎস বলতে পারেন এবং এর সম্পর্কে তথ্য-প্রমাণ কাগজপত্র দিতে পারেন তাহলে তাদেরকে আর কিছু করা হবে না। কিন্তু কেউ যদি অর্থের উৎস না দিতে পারেন তাহলে তাদেরকে তদন্তের মুখোমুখি হতে হবে এবং তদন্তে যদি প্রমাণিত হয় যে, জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূতভাবে তারা এই অর্থ পেয়েছেন সে ক্ষেত্রে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং তাদেরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

এরকম কয়েকজন আমলা সরকারি কর্মকর্তা পাওয়া গেছে যারা এখনও সরকারি চাকরিতে আছেন। তারা নগদ অর্থে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় সম্পদ বানিয়েছেন। এদের বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে বলে অনেকে মনে করছেন। তাছাড়া বেশ কিছু ব্যবসায়ীর সন্ধান পাওয়া গেছে যারা বাংলাদেশ থেকে অর্থ  নিয়ে এসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদ বানিয়েছেন। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধের সন্তানদের একটি বড় অংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নগদ অর্থে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত মীর কাসেমের পুত্ররা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেন এবং সেখানে থেকে বাড়ি ঘর বানিয়েছেন এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নগদ অর্থের সম্পদ করেছেন এ সম্পর্কেও তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়াও সাবেক জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নগদ অর্থে বাড়ি কিনেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নগদ অর্থে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি কিনেছেন এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে। শুধু এরা নয়, বর্তমান সরকারের আমলেও গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থাবর সম্পত্তির মালিক।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭