ইনসাইড পলিটিক্স

কাদের-ফখরুলের বিদায়ী বছর?


প্রকাশ: 01/01/2022


Thumbnail

ওবায়দুল কাদের, দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মহাসচিব। দুইজন রাজনীতিতে দুই মেরুতে অবস্থান করছেন। তবে দুইজনই দুটি প্রধান দলের দ্বিতীয় প্রধান নেতা। আর ২০২২ সালে এই দুই প্রধান নেতা বিদায় দিতে পারেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে এ বছরের শেষ নাগাদ হবে, এমনটি মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ ২০২৩ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে চলতি বছর কাউন্সিল শেষ করতে চায় এবং কাউন্সিলের প্রাক-প্রস্তুতিগুলো ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয় মেয়াদ পার করছেন। প্রথম মেয়াদে তিনি যতটা সাবলীল, স্বতঃস্ফূর্ত ছিলেন, দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি ততটাই নিষ্প্রভ। এর একটি প্রধান কারণ হিসেবে মনে করা হয়, তার শারীরিক অসুস্থতা এবং দেশে করোনার প্রকোপ। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি অসুস্থ হন এবং দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নেওয়ার পর দেশে ফিরেন সুস্থ হয়ে। এখনও তার অসুস্থতা রয়েছে কিন্তু অসুস্থ তাকে আড়াল করে রাখেন তিনি তাঁর ব্যস্ততার কারণে। গত বছরের শেষ দিকেও তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আর অন্যদিকে ২০২০ সাল থেকে সারাদেশে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার পর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে যায়। সীমিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে ওবায়দুল কাদের ঘরে থেকেই বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে দল পরিচালনা করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের মতো একটি বিশাল রাজনৈতিক দলে বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে দল পরিচালনা করা অতটা সহজসাধ্য নয়। তাছাড়া অনেকেই মনে করেন যে, আগের সেই সংগ্রামী উজ্জীবিত ওবায়দুল কাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যখন কাগজ দেখে দেখে বক্তব্য দেন, তখন অনেকেই হতাশার বাণী উচ্চারণ করেন। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধ, তৃণমূলের বিভক্তি ইত্যাদি নানা বিষয়ে মোকাবেলার ক্ষেত্রে তিনি যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পেরেছেন কিনা এ নিয়েও আওয়ামী লীগের মধ্যে নানারকম প্রশ্ন রয়েছে।

অন্যদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক কঠিন সময়ে বিএনপির হাল ধরেছেন এবং তিনি দলের মধ্যে জনপ্রিয় না হলেও তৃণমূলের কাছে তার ব্যাপারে আস্থার সংকট থাকলেও তিনি বিএনপির হাইকমান্ডের কাছে আস্থাভাজন। বিএনপির শীর্ষ নেতা বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়া দুইজনই মনে করেন, এই মুহূর্তে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিকল্প নেই। আর এ কারণেই নানা সমালোচনা সত্ত্বেও তিনি টিকে আছেন। বিশেষ করে বিএনপির তৃণমূলের মধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে নানা রকম সন্দেহ এবং অবিশ্বাস কাজ করে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত, ওই নির্বাচনে মনোনয়ন, নির্বাচনের ফলাফলের পর আন্দোলন না করা ইত্যাদি কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পদত্যাগের দাবি উঠেছিল সেই সময়। কিন্তু সেই পদত্যাগের দাবির মুখেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর টিকে যান শুধুমাত্র তারেক জিয়ার আশীর্বাদের কারণে। তবে অনেকেই মনে করছেন, বিএনপি এখন নতুন করে পুনর্গঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে, আন্দোলনের চেষ্টা করছে। এই পুনর্গঠন এবং আন্দোলনে বিএনপি যদি টিকে থাকতে চায় তাহলে নেতৃত্বের পরিবর্তনের কোন বিকল্প নেই। আর সে কারণেই এ বছরে হয়তো মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিদায় ঘণ্টা বেজে যাবে। বাংলাদেশের দুইটি প্রধান রাজনৈতিক দলের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তির পরিবর্তনের পর রাজনীতির গতির কি পরিবর্তন হয় সেটিই দেখার বিষয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭