ইনসাইড পলিটিক্স

তৈমুরকে অব্যাহতি: দলে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা প্রতিষ্ঠায় মরিয়া তারেক?


প্রকাশ: 05/01/2022


Thumbnail

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার। এ জন্য তাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিএনপি। বিএনপি বলছে যে, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এটি বিএনপির স্ট্যান্টবাজি। এর আগেও বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থীকে বহিষ্কার করা হলেও বিজয়ী হলে তাকে আবার ফিরিয়ে নেয় দলটি। তবে রাজনৈতিক অঙ্গনের অনেকেই সন্দেহ করছেন, তাকে অব্যাহতি দেয়ার নেপথ্যে রয়েছেন দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান। বিশেষ করে দলে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা প্রতিষ্ঠায় মরিয়া তিনি। ইতোমধ্যে তৈমুরও এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। এমতাবস্থায় বিএনপির এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা রকম গুঞ্জন।

গত ২৯ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সম্পাদক এটিএম কামালকে ফোন করেন বিএনপি মহাসচিব। কামাল জানায়, তৈমুরকে জনতার প্রার্থী ঘোষণা করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তারপক্ষে নেতা-কর্মীদের কাজ করতে কোন বাধা নেই বলেও জানানো হয় তাকে। দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করলেও প্রথম থেকেই তৈমুরের প্রতি পরোক্ষ সমর্থন ছিল বিএনপি হাইকমান্ডের। তবে এ ফোনালাপের সপ্তাহ না যেতেই উল্টে গেলো সবকিছু। যেখানে দু’দিন আগেও তৈমুরকে সমর্থনের কথা বলা হয়, সেখানে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ায় তাকে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদ থেকে প্রত্যাহার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। আর এখান থেকেই শুরু হয় ধুম্রজাল। এ সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় বিএনপি নিয়েছে নাকি এর পেছনে লন্ডনী বার্তা মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা। 

বিশেষ করে কিছু দিন আগে তারেক রহমানের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ না নেওয়ার কারণে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় কুমিল্লা সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে। এর আগে যারা অনুপস্থিত ছিলেন তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়েছে। মনিরুল হক সাক্কু ছাড়াও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে গত কয়েক মাসে তিনজন জনপ্রিয় নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দেন তারেক। এরা হচ্ছেন, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু,বরিশাল বিভাগ বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও দলের যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার। সবশেষ এ তালিকায় যুক্ত হলেন তৈমুর আলম খন্দকার। দলে তারেক জিয়ার যাচ্ছেতাই ইচ্ছের প্রতিফলনসহ স্বাধীনতা ও দেশবিরোধী চক্রের সাথে আঁতাত ও তাদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী দল চালানোর নতিজা সরূপ বিএনপি নিশ্চিত ভাঙ্গনের মুখে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তারেক জিয়া এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলকে ভুল পথে পরিচালিত করছেন। যার মাশুল দিতে হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে। বেগম খালেদা জিয়ার এই পরিণতির জন্য তারেক জিয়া এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরই দায়ী। তৈমুর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির জনপ্রিয় একজন নেতা। কুমিল্লার মেয়র মনিরুল হক সাক্কু স্থানীয় ও সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। বরিশালের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত মজিবুর রহমান সরোয়ার। নজরুল ইসলাম মঞ্জুও খুলনার রাজনীতিতে প্রভাবশালী। বড় কোনো ত্রুটি ছাড়া তাদের বাদ দেওয়ার কারণে সাংগঠনিকভাবে ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিএনপি। এর প্রভাব দলীয়ভাবেই টের পাবে বিএনপি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭