কালার ইনসাইড

ভালো মানের সিনেমা দিয়েও দর্শক খরায় প্রেক্ষাগৃহ


প্রকাশ: 06/01/2022


Thumbnail

করোনার প্রকোপে অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশের বিনোদন অঙ্গনেও পড়েছে প্রভাব। বেশ লম্বা সময় বন্ধ ছিলো  প্রেক্ষাগৃহগুলো। পাশাপাশি লোকসানের মুখে পরে অনেক সিনেমা হলই বন্ধ হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন আটকে ছিলো বড় বাজেটের বেশ কয়েকটি ছবি। 

সদ্য গত হওয়া বছরে শুরু থেকে বেশ অনেকগুলো ছবি মুক্তি পেয়েছে। তবে সেগুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিলো। তবে বছরের শেষের দিকে আশা জাগিয়ে দেশের প্রেক্ষাগৃহে চন্দ্রাবতী কথা, পদ্মাপুরাণ, মিশন এক্সট্রিম, লাল মোরগের ঝুঁটি, মৃধা বনাম মৃধা, রাত জাগা ফুল- এর মতো আরো কিছু নতুন সিনেমা মুক্তি পায়। মুক্তি পাওয়া প্রতিটি সিনেমাই প্রশংসিত হয়েছে।  ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন যারাই দেখেছেন, ‘মানসম্মত সিনেমা’ হিসেবেও প্রশংসা করছেন!

তবে হল মালিকদের প্রধান অভিযোগ, ‘একের পর এক ভালো সিনেমা আসলেও প্রেক্ষাগৃহগুলোতে চোখে পড়ার মতো দর্শকের উপস্থিতি নেই।’

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বছরের শেষে বাবা-ছেলের দ্বন্দ্ব ও ভালোবাসার সম্পর্ক নিয়ে মুক্তি পেয়েছিলো ‘মৃধা বনাম মৃধা’। ছবিটি দেখার পর অনেকের চোখেই জল এসেছিলো। কাঁদাতে পারাই ছবি ভালো হওয়ার একমাত্র নিয়ামক নয়। সবটা নিয়ে যে ছবিটা ভালো এবং মনে রাখার মতো সিনেমা ছিলো ‘মৃধা বনাম মৃধা’। ভালো হওয়া সত্ত্বেও প্রথম সপ্তাহে ৩-৪টি প্রেক্ষাগৃহ থেকে ‘মৃধা বনাম মৃধা’ নেমে গেছে! দেশের অন্যতম দুটি প্রেক্ষাগৃহ স্টার সিনেপ্লেক্স ও ঐতিহ্যবাহী মধুমিতা সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ জানায়, সিনেমাগুলো ভালো হওয়ার পরেও প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের উপস্থিতি কম। যা অত্যন্ত দুঃখজনক, এমনটা ছিলো অপ্রত্যাশিত।

দেশের অভিজাত সিনে থিয়েটার স্টার সিনেপ্লেক্সের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘স্পাইডার-ম্যান’ দেখতে উপচে পড়া ভিড় ছিল। তবে বাংলাদেশের সিনেমাগুলোর ক্ষেত্রে উপচে পড়া ভিড় ছিল না। একের পর এক মানসম্মত এবং নতুন বাংলা সিনেমা মুক্তি পেলেও দর্শক কম কেন? এর উত্তর জানা নেই আমার। 

ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মধুমিতা সিনেমা হলেও ‘ব্যবসায়িক মন্দা কাটেনি’ উল্লেখ করে প্রদর্শক সমিতির সাবেক সভাপতি ও মধুমিতার কর্ণধার ইফতেখার আহমেদ নওশাদ বলেন, মধুমিতার মতো সিঙ্গেল স্ক্রিনের জন্য কমার্শিয়াল সিনেমা লাগবে।

তিনি বলেন, পরপর যে কয়টা সিনেমা চালিয়েছি একটিও ভালো যায়নি। হল মালিক হিসেবে আমার কাছে ‘ভালো যাওয়া’ মানে ব্যবসায়িক দিকটি ইঙ্গিত করছি। ‘মিশন এক্সট্রিম’ দেখতে বেশকিছু দর্শক এসেছিল।প্রত্যাশা পূরণ না হলেও এটা মানিয়ে নেয়া যায়। কিন্তু ‘মৃধা বনাম মৃধা’, ‘রাত জাগা ফুল’ গণ হারে দর্শক দেখেনি। তবে হলে হলে আগের মতো ভিড় লম্বা লাইন ফেরাতে হলে শাকিব খানের সিনেমা মাস্ট লাগবে।

এদিকে নির্মাতা রাশিদ পলাশ বলেন, আমার মনে হয় দর্শকদের কাছে সঠিক উপায়ে সিনেমা টা পৌঁছাচ্ছে না। সিনেমার প্রচারণার কৌশল বদল হওয়া দরকার। আর দর্শককে আরও কিছু সময় দেয়া দরকার। প্রতি সপ্তাহে নতুন সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। দর্শককে আরও কিছু সময় দেয়া দরকার। সিনেমা বদলে গেছে দর্শককে বিশ্বাস করানো দরকার। 

ওটিটির জন্য কি দর্শক হলে কম যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা তো একটা বড় কারণ। দর্শক অলরেডি আমাদের ওটিটি প্লাটফর্ম গুলোকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে। কিছু নির্মাতার কাজ নিয়ে তাদের কিছু টা বিশ্বাস ও তৈরি হয়ে গেছে। তখন একই সময়ে সিনেমা হলে মুক্তি পাওয়া সিনেমা গুলো আগ্রহ হারাতে পারে। আর করোনা তো ঘরে বসে সিনেমা দেখার একটা অভ্যাস করে দিয়ে গেছে।

নতুন প্রত্যাশা নিয়ে নতুন বছরের পথ চলা শুরু করেছে সবাই। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন আবারও ঘুরে দাঁড়াবে চলচ্চিত্র। দর্শক হবে হল মুখী। ফিরে আসবে চলচ্চিত্রের সেই সোনালী অধ্যায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭