ইনসাইড পলিটিক্স

রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণ: দরকষাকষিতে বিএনপি?


প্রকাশ: 07/01/2022


Thumbnail

নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে রাষ্ট্রপতির সাথে চলমান সংলাপে আমন্ত্রণ পেয়েছে বিএনপি। আগামী ১২ জানুয়ারি বিএনপিকে বঙ্গভবনে আমন্ত্রন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ইতোমধ্যে এ সংলাপকে অর্থহীন দাবি করে তাতে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। অন্যদিকে, বিএনপির এমন সিদ্ধান্তকে আমলে নিচ্ছে না ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত সংলাপে বসবে বিএনপি। এখন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়েই একটু দরকষাকষি করতে চাইছে দলটি। এরকম পরিস্থিতিতে ইসি গঠন প্রক্রিয়াসহ বিএনপি রাষ্ট্রপতির সংলাপ বর্জন করলে তা আওয়ামী লীগের জন্য নতুন কোনো সংকট তৈরি করতে পারে কিনা, কিংবা রাজনীতিতে নতুন কোনো মেরুকরণ ঘটতে চলেছে কিনা, এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোতে গুঞ্জনের পাশাপাশি শুরু হয়েছে নানা রকম আলোচনা।

ইসি গঠন নিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। ইতোমধ্যে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ বেশ কয়েকটি দল অংশ নিয়ে এই বিষয়ে তাদের মত দিয়েছে। তবে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শুরুর আগে থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন বক্তব্য-বিবৃতিতে সংলাপের বিষয়ে অনীহা দেখিয়ে আসছে বিএনপি। সংলাপ নয়, দলটির প্রধান চাওয়া এখন নির্দলীয় সরকারের। পাশাপাশি সংলাপে অংশ না নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় সভা করার কথা জানিয়েছে বিএনপি। সংলাপে অংশ নেয়নি বা নেবে না, এমন দলগুলোই দলটির পছন্দের তালিকায় থাকবে বলে জানিয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারকেরা। 

তবে রাজনৈতিক অঙ্গনের অনেকেই মনে করছেন, বিএনপি রাষ্ট্রপতির সংলাপে বসার আগে খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ইস্যুটি স্যাটেল করতে চায়। এ নিয়ে আগামী কয়েক দিনে সরকারের সাথে তলে তলে আলাপ চললেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। পাশাপাশি খালেদা জিয়া যদি কোনোভাবে বিদেশে যেতে পারে, তাহলে বিএনপি খোলস থেকে বের হতে পারবে এবং আন্দোলনে নামতে পারবে। যা খালেদা জিয়ার আদালত কর্তৃক দণ্ডিত ও কারা অন্তরীন হওয়ার কারণে পারছে না। খালেদা জিয়া বর্তমানে আদালতের জামিনে নয়, বরং প্রধানমন্ত্রীর করুণায়, তার নির্বাহী আদেশে জামিনে আছেন। সরকার যখন চাইবে তখনই তাকে আবার কারাগারে ফিরে যেতে হবে। এ কারণে বিএনপি সরকারের কাছে এক প্রকারের আটকা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ১২ তারিখ এখনও অনেক দূরে। এর মধ্যেই সুর পাল্টাতে পারে বিএনপি। অন্তত তাদের অতীত কর্মকাণ্ড বিচার বিশ্লেষণ করলে তা-ই দেখা যায়। জাতীয় নির্বাচনের পর দলটি বলেছিল, এটি নৈশভোটের সংসদ। তাই তারা সংসদে যাবে না। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেল, তারা সংসদে। এর আগে তারা বলেছিল, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু ২০১৮ সালের নির্বাচনে ঠিকই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে গেছে। অর্থাৎ দলটি সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। একটি রাজনৈতিক দলে বিচক্ষণতার সহিত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো লোক থাকতে হয়। তা না হলে রাজনৈতিক দল, পারিবারিক দলে পরিণত হয়। বিএনপি আগাগোঁড়ায় পারিবারিক দল। হ্যা, দলটির তৃণমূলে কর্মী-সমর্থক আছে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে পরিধি পর্যন্ত সবাই জানে দলের একমাত্র হর্তাকর্তা লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান। স্থায়ী কমিটিসহ বাকিসব এক প্রকারের পাপেট। তাদের দলে থাকা, না থাকাতে দলের তেমন কিছু আসে যায় না। ফলে তারেক রহমানের চাওয়া পাওয়ার ‍উপরই নির্ভর করছে সবকিছু। সংলাপে বসার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন তারেক। ১২ তারিখের মধ্যে তারেক কি সিদ্ধান্ত নেয়, সেটি এখন দেখার বিষয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭