হঠাৎ করেই দেশের ক্রিকেটে বিতর্ক শুরু হয়েছে নান্নু বনাম আশরাফুল দ্বন্দ্বে। ঘটনার সূত্রপাত হয় আশরাফুলের একটি মতামতকে ঘিরে। আশরাফুল বলেছিলেন, এতো লম্বা সময় ধরে কেউ প্রধান নির্বাচক থাকলে দল গঠনের প্রক্রিয়া নষ্ট হয়। আশরাফুলের এই মন্তব্যের জেরে একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তাকে "দেশদ্রোহী" এবং "ফিক্সার" আখ্যা দিয়ে বসেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। আশরাফুল পরে ফেসবুক লাইভে এসে নান্নুর এই বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ব্যাপারটা নিয়ে বিসিবিও বিব্রতবোধ করেছে এবং বোর্ড সভায় এটা নিয়ে আলোচনা হওয়ারও কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে নান্নু এখন বেশ চাপের মধ্যেই আছেন আশরাফুলকে ঘিরে তার মন্তব্যের জন্য।
সমালোচক হিসেবে কেউ তার মতামত জানাতেই পারে৷ নান্নুরও অধিকার আছে এর পাল্টা যুক্তি দেওয়ার। তিনি পাল্টা যুক্তি দেখাতেই পারেন লম্বা সময় ধরে নির্বাচক থাকলে কোনো সমস্যা নেই। ঘটনা সেই পর্যন্ত থাকলেও বিতর্কের সৃষ্টি হতোনা।
কিন্তু নান্নু আশরাফুলকে ‘ফিক্সার’ ও ‘দেশদ্রোহী’ বলে বিশেষায়িত করলেন। এখানেই তিনি কেলেঙ্কারিটা করে বসলেন। বিসিবির একটা পদে চাকরি করা অবস্থায় এমন কথা বলাই অন্যায়। নান্নুর ক্ষেত্রে এটা 'কোড অব কন্ডাক্ট' ভঙ্গের পর্যায়ে পড়ে। আশরাফুল অবশ্যই ফিক্সিং করেছিলেন। তিনি শাস্তিও পেয়েছেন। শাস্তি শেষ করে আবার ক্রিকেটে ফিরেছেন। ফলে তাকে উদ্দেশ্য করে গালি দেওয়াটা অশোভন আচরণ। একটা দেশের জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক কোনো খেলোয়াড় সম্পর্কে প্রকাশ্যে বিদ্বেষ প্রকাশ করতে পারেন না। এটা তার পদের সাথে সংঘাতমূলক আচরণ এবং অপেশাদার মনোভাবের পরিচয় দেয়।
দল গঠনে ধারাবাহিকতার অভাব, পাইপলাইন গড়তে না পারা, হুটহাট পরস্পর বিরোধী সিদ্ধান্ত নেওয়া.. এসব কারণে নান্নুর বিপক্ষে অনেক সমালোচনায় হয়েছে আগেও। তবে এবার আশরাফুল ইস্যুতে নান্নু যেন একেবারে ব্যাকফুটে চলে গেলেন।
এই ব্যাপারে জল কতদূর গড়ায় তা এখন দেখার বিষয়। প্রধান নির্বাচকের চুক্তি নবায়ন নিয়ে পরবর্তী বোর্ড সভায় আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। নির্বাচক প্যানেলে নান্নু যুগের অবসান হওয়ায় সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছেনা। তবে এমন নেতিবাচক ঘটনা যে ক্রিকেটের জন্য ভালো কোনো দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করছেনা, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।