লিট ইনসাইড

থ্রিলার বুক : দ্যা মাইন্ড সিমুলেশন ওয়েপন


প্রকাশ: 10/01/2022


Thumbnail

সারাবিশ্বে প্রতিবছর থ্রিলার বইয়ের চাহিদা কম নয়। স্টিফেন কিং, জেমস প্যটারসন, ড্যান ব্রাউন, জেমস রলিন্সসহ বিশ্বের তাবত থ্রিলার লেখকরা পাঠকদের মনোরঞ্জন করে যাচ্ছে নিষ্ঠার সাথে। তবুও একটি প্রশ্ন উচ্চারিত হয় পাঠকদের মনে, আর তা হচ্ছে, বিভিন্ন জনরার উপন্যাসের সাথে থ্রিলার সাহিত্য কি আসলেই নিজের অবস্থান তৈরি করতে পারছে? এর উপকারিতাই বা কি? জসলিন নামের একজন ব্লগার তার চমৎকার কিছু কথার মাধ্যমে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চেষ্টা করেছেন। থ্রিলার বই আদতেই পাঠকদের মনের খোরাক যোগানোর সাময়িক মাধ্যম, নাকি অন্তর্নিহিত গুরুত্ব আছে, তা নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন -

 

প্রথমত, থ্রিলার বই আপনাকে একটা সিমুলেশনের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যায়। এমন কিছু চরিত্র আর প্লটের মাঝ দিয়ে আপনাকে নিয়ে যাবে, সেখানে আপনার মস্তিষ্কের সজীব কোষগুলো সচল হয়ে পড়বে। নানা ধরণের চিন্তা ভাবনা আপনার মাথায় খেলতে শুরু করবে, পসিবল সিনারিও কী হতে পারে, এমনকি যেখানে কোনো সমাধান পাওয়া অসম্ভব, সেখানেও পাঠকেরা মনের গলি ঘুপচি পরিভ্রমণ করে একটা সমাধানে আসতে চেষ্টা করে নিজের মতো করে। জসলিনের কথায় আরও একটা চমৎকার জিনিস জানতে পারলাম। তিনি বলেছেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জব রিক্রুটমেন্টের সময় কেস স্টাডি প্রেজেন্টেশন ও প্রবলেম সলিউশনের ক্ষেত্রে থ্রিলার পাঠকদের বই পড়ার অভিজ্ঞতা অনেকটাই এগিয়ে রাখে বাকি ক্যান্ডিডেটদের চেয়ে।

 

দ্বিতীয়ত, স্ট্রেস রিলিফ কিংবা মানসিক কোনো দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে যাবার সময় থ্রিলার বই পাঠ করা বেশ উপকারি। এর ফলে শরীরে এড্রেনালিন হরমোন সক্রিয় হয়ে যায়, যা কিছুসময়ের জন্য মানসিক অবসাদ থেকে পাঠককে দূরে রাখতে সাহায্য করে।

 

তৃতীয়ত, ১৯৯৮ সালে স্যু গ্রাফটনের দ্য বেস্ট আমেরিকান মিস্ট্রি স্টোরিজে তিনি বলেছিলেন, থ্রিলার বই মানুষের মূল্যবোধ উন্নীত করতে সাহায্য করে। কীভাবে? দুনিয়ায় দুটো শক্তি আদি অনাদিকাল থেকেই পাশাপাশি চলছে। আলো আর অন্ধকার। থ্রিলার বইতে প্রথমে অন্ধকারের দিকটির ওপর আলোকপাত করা হয়। কিন্তু দিনশেষে জয় হয় আলোরই। তবে এখানে একটা বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, আমাদের বাস্তবতায় যে কেবলই আঁধার বা কেবলই আলো রয়েছে, তা থেকে পাঠকদের বাস্তবতার নিরীখে নিয়ে আসতে সাহায্য করে থ্রিলার। ফলে পারিপার্শ্বিকতার সাথে পাঠকেরা সহজেই নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে।  

 

চতুর্থত, জসলিন তার আলোচনায় শন কোয়েন এবং টিম গ্রাল নাম দুজন পডকাস্টারের কথা উল্লেখ করেছেন। এখানে তিনি বলেছিলেন, মানুষ স্বভাবতই দুটো অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশ হচ্ছে স্বার্থপর এবং দ্বিতীয় অংশ হচ্ছে ত্যাগী। থ্রিলার বইতে এমন কিছু চরিত্রের দেখা পাওয়া যায়, যারা সবসময়েই ত্যাগী চরিত্রে অঙ্কিত হয়। পাঠকেরা যখন এমন চরিত্রগুলোর কথা পড়তে থাকেন, তখন তাদের ওই বিশেষ ত্যাগী দিকটি জাগ্রত হয়ে যায় এবং ব্যক্তিগত বাস্তবের দুনিয়াতেও তারা এমন চরিত্রগুলোকে নিজের মাঝে লালন করতে শুরু করে চর্চা করতে শুরু করেন।

 

কথা শেষ। আমি নিশ্চিত এখানে অনেকেই আছেন যারা উপরের কথাগুলোর সাথে একমত হবেন, আবার কেউ কেউ থ্রিলার উপন্যাসকে চিরাচরিত “চানাচুর টাইপ ওয়ান টাইম এডিবল” হিসেবেই ভাবতে থাকবেন।

কে কীভাবে নেবেন, সে ভারটা না হয় পাঠকের হাতেই ছেড়ে দেয়া যাক! 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭