ইনসাইড আর্টিকেল

সাফারি পার্কে বাঘ-ভাল্লুকের সাথে একদিন


প্রকাশ: 11/01/2022


Thumbnail

কর্ম ব্যস্ত জীবনে একটু বিনোদনের জন্য বাঘ ভাল্লুকের সাথে সময় কাটাতে চাইলে চলে যান বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে। একদিনে ঘুরে আসুন ঢাকার অদূরে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর জেলায় অবস্থিত সাফারি পার্কে। সেখানে গেলে বন্যপ্রাণীদের সাথে দেখা হওয়ার পাশাপাশি সবুজ প্রকৃতিতে হাড়িয়ে যেতে পারবেন এই অভ্যায়রণ্যে।

সাফারি পার্কে ঢুকতেই এক জোড়া হস্তি আর মাকড়শা আপনাকে সাদরে জানাবেন স্বাগতম। এরপরেই আপনার চোখে ধরা দিবে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার। পার্কের ভিতরে প্রবেশ করে প্রথম দর্শনেই অবাক হবেন। বাঘ, সিংহ তো আছে এর সাথে দেখা মিলবে ডাইনোসরেরও। কি ভাবছেন তো! বিলুপ্ত প্রাণী ডাইনোসর এখানে আবার কি করে আসলো? তবে ভাবনা এবং ভয়ের কিছু নেই এগুলো প্রাণহীন পাথুরে তৈরি মূর্তি মাত্র। কিন্তু ভাববেন না, এখানে পাথুরে প্রাণহীন মূর্তির পাশাপাশি রয়েছে জীবন্ত প্রাণীও তবে হ্যাঁ ডাইনোসর এখানে নেই। 

৩৮১০ একর জমির উপরে গড়ে উঠা এই পার্কে রয়েছে ছোট বড় সকল ধরনের বন্যপ্রাণী।  সম্পূর্ণ পার্কটি ৫ টি ভাগে বিভক্ত এবং পার্ক সম্পর্কে সকল ধরনের তথ্য জানতে রয়েছে ম্যাপ। এটা দেখেই আপনি অনায়াসে কোথায় কি আছে?, কোন দিকে যেতে হবে সব জানতে পারবেন সহজেই।

পার্ক ঘুরে দেখার আগে অবশ্যই আপনার কিছু খাবার খেয়ে নেওয়া প্রয়োজন। তাঁর জন্য রয়েছে পার্কের ভিতরেই ক্যাফে। দর্শনার্থীরা সেখানেই গিয়ে চা,বিস্কিট বা হালকা নাস্তা করে নেন। অনেকে আবার এমনিতেই বসে রেস্ট করেন। 

সাফারি পার্কে গেলে আপনার এমন একটা অনুভূতি হবে যেন আপনি নিজে খাঁচায় আটকা আর বন্য পশুরা স্বাধীনভাবে বিচরণ করছে পার্কের ভিতরে সবুজ প্রকৃতির মাঝে। তখন চোখ বন্ধ করে একবার ভাবলে অনুভব করতে পারবেন যে হয়তো বন্য-পশুরা খাঁচায় আটকে থাকা আপনাকে দেখতে এসেছে। কি এমন অনুভূতি হওয়ার কাড়ন ভাবছেন ? তাহলে শুনন, সাফারি পার্কে বন্য প্রাণীরা সবাই উন্মুক্ত-ভাবে বিচরণ করে। আর তাদের দেখা মিলতে আপনাকে যেতে হবে কাচে ঘেরা বাসে করে।
তাদের খুব কাছে থেকে দেখতে আপনাকে যেতে হবে এই কাচে ঘেরা বাসে করেই টাইগার, লায়ন আর আফ্রিকান সাফারিতে। তবে সাফারি পার্কের মূল আকর্ষণ হলও এই কোর পার্ক। এখানে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে ১০০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে শক্ত কাচে ঘেরা বাসে করে দেখতে পারবেন। কাছে ঘেরা এই গাড়িতে অনেকটা বন্দি হয়েই আপনাকে দেখতে হবে সবুজ প্রকৃতিতে মুক্তভাবে বিচরণকারী বন্য প্রাণীদের। 

এভাবেই আপনাকে এক এক করে দেখতে হবে টাইগার এবং আফ্রিকায় সাফারিতে। তাদেরও খুব কাছে থেকে দেখতে পাবেন। 
এছাড়াও পার্কে ঢুকতেই গেটের পাশেই দেখতে পাবেন ম্যাকাউল্যান্ড। দেখতে পারেন নানান প্রজাতির পাখি। ম্যাকাউল্যান্ডের ঢুকতেই আপনি এক অন্যরকম অনুভূতি অনুভব করবেন। তাদের কাছে নিয়ে আদর করতে পারবেন। এমনকি যদি আপনাকে পাখিরা পছন্দ করে তাহলে ওরা নিজে থেকেই আপনার কাছে বা কাঁধে এসে বসে থাকবে। এর পাশাপাশি রয়েছে মেরিন একুরিয়াম,যেখানে গেলে দেখতে পাবেন প্রায় ২০ প্রজাতির মাছ।

এছাড়াও রয়েছে প্রজাপতি সাফারি , সেখানে প্রবেশের পর মনে হবে আপনি কোন এক রূপকথার রাজ্যে হাড়িয়ে গিয়েছেন। দেখতে পাবেন রঙ বেরঙের প্রজাপতি উড়া-উড়ি করছে , ছোট ছোট গাছে পাতলা ডালে গিয়ে বসছে। মাঝে মাঝে আপনার গায়ে এসেও বসবে। আবার প্রজাপতির ফুলের মধু খাওয়ার দৃশ্যও দেখতে পাবেন এখানে গেলেই।

মনে মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে এই বনে প্রাণীগুলাকে তো আটকে রাখতেই পারে যেমনটা চিড়িয়াখানাতে আছে। কিন্তু আন এই পার্কের উদ্দেশ্যই হলো শাল বনের উদ্ভিদ ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ করে রাখা। এই বনের প্রাণীগুলোকে যেমন মায়া হরিণ, বানর, বনবিড়াল, খেঁকশিয়াল ও অজগরসহ দুর্দশাগ্রস্ত প্রাণীদের নিরাপদ আবাস্থল সৃষ্টি ও সংরক্ষণ করা এবং চিত্তবিনোদন, শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা ইত্যাদি।

ঢাকা থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে তিন কিলোমিটার ভিতরে এই পার্কটির অবস্থান। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ এর বাসে অথবা গাজীপুর চৌরাস্তা হয়ে চৌরাস্তা থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে বাঘের বাজার নামক স্থানে বাস থেকে নামতে হবে। সেখান থেকে লাগুনা অথবা রিক্সা যোগে মেইন রোড থেকে তিন কিলোমিটার ভিতরে পার্কটির অবস্থান।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭