ইনসাইড আর্টিকেল

ঐতিহ্যে আধুনিকতার ছোঁয়া


প্রকাশ: 13/01/2022


Thumbnail

আমাদের দেশের ঐতিহ্যের আরেক নাম জামদানি। এই  জামদানি প্রাচীনকালের মিহি মসলিন কাপড়ের উত্তরাধিকারী হিসেবে বাঙ্গালী নারীদের অতি পরিচিত। মসলিনের উপর নকশা করে তৈরি করা হয় জামদানি কাপড়। নকশি কাঁথার মতোই আজ জামদানি শাড়ি বাংলার অনিবার্য সংস্কৃতির প্রতীক। শুধু বাংলার নয়, মুঘল-পারসিক ঐতিহ্যের এক সুন্দর নান্দনিক উত্তরাধিকার বলা হয় এই জামদানিকে।

জামদানির ইতিহাস বলতে গেলে খুবই প্রাসঙ্গিকভাবে চলে আসে মসলিনের নাম। ঢাকার কাছে কাপাসিয়া সংলগ্ন অঞ্চলে পাওয়া যেত কার্পাস তুলা। সেই তুলা হাতে কেটে সুতা তৈরি হতো। আর মসলিনের জন্য যে সুতা ব্যবহার হতো তা ২৫০-৩৫০ কাউন্টের। এই সুতায় বোনা মসলিন কখনো গায়ে চড়েনি সাধারণ মানুষের। রাজা-বাদশা, জমিদারেরাই ব্যবহার করতেন। কিন্তু এখনকার সময়ে জামদানি আর রাজা-বাদশাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, ছোঁয়া লেগেছে সাধারণের মাঝেও। 

বর্তমানের দিকে তাকালেই দেখা যায় জামদানির চাহিদা কতটা এখনো। যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠানেই অল্প-মধ্য বা বয়স্ক সবার পছন্দের তালিকাতেই থাকে জামদানি। আর কোন বিয়ের অনুষ্ঠানের কথা তো বাদই রইলো। বিয়ের সময় বৌকে জামদানি দেওয়াটা যেনো আমাদের দেশের একরকম বাধ্যতামূলক। তবে এখন সবাই শুধু জামদানি শাড়িতেই আটকে নয়, জামদানিতে লেগেছে বর্তমানের ছোঁয়া। শাড়ি ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের জামা-কাপড় তৈরি হয় জামদানি কাপড় দিয়ে।

বর্তমান সমাজে এখন সব মেয়েরা শাড়ি পড়ে না, অনেক মেয়েরা তো শাড়ি পড়তেই জানে না। শাড়ি পড়তে না জানলেও তাদের পছন্দের তালিকায় থাকে জামদানি। তাই জামদানি কাপড় দিয়ে বিভিন্ন স্টাইলে তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের ড্রেস। যেমন: ফতুয়া, কাতুয়া, কুর্তি, থ্রি-পিস ওয়ান-পিস ইত্যাদি আরও অনেক ধরনের  ডিজাইনে এখন জামদানি বহিঃপ্রকাশ হয়। এইসকল ড্রেস গুলি এখনকার ছেলে মেয়েরা জিন্সের সাথে বেশ মানিয়ে পড়ে। এছাড়াও বিভিন্ন বড় বড় অনুষ্ঠানে মেয়েদের পড়তে দেখা যায় জামদানি তৈরির লেহেঙ্গা আর ছেলেদের পড়তে দেখা যায় পাঞ্জাবী। 

জামদানির কারুকাজ, নকশা সব কিছুতেই রয়েছে ভিন্নতার ছোঁয়া। যেমন কিছু কিছু জামদানি থাকে খুব ভারি কারুকাজ ও নকশার আবার কিছু কিছু থাকে হালকা। এখন যার যেমন পছন্দ সেভাবে বানিয়ে বা কিনে নেয়। ভারি কারুকার্য ও নকশার কাপড় বা শাড়ি পড়তে দেখা যায় বিশেষ করে নতুন কণের গায়ে। এছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হালকা কারুকার্য বা নকশার পছন্দ করে এখনকার সময়ে।

যেহেতু জামদানি কাপড়ে ভিন্ন ডিজাইন চলে এসেছে বর্তমানে, তাই এখন আর অর্ডার দিয়ে বা জামদানির আরতে গিয়ে কিনতে হয় না। বর্তমান যুগ প্রযুক্তিগত এবং আধুনিক যুগ। বড় বড় শপিং মলে গেলেই দেখা যায় জামদানির জন্য আলাদা আলাদা স্থান নির্ধারণ করে রাখা হয়। এছাড়াও রাজধানীর নিউ-মার্কেটে গেলে দেখা যায় একটা ভবনের একটা তলাতে শুধু জামদানি রয়েছে। যদিও সেখানে শুধু জামদানি শাড়িই পাওয়া যায়। তবে এইখানে সর্ব থেকে নিম্ন সব মানের শাড়ি পাওয়া যায়। জামদানি কাপড়ের শাড়ি ছাড়া অন্যান্য ডিজাইনের ভালো ড্রেস গুলা মূলত পাওয়া যায় বড় বড় শপিং-মল গুলিতে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭